ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রির আইন: রাষ্ট্রপক্ষের শুনানী ১৪ ফেব্রুয়ারী

ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রির ক্ষমতা তত্বাবধায়কের হাতে রেখে সরকারের করা আইন চ্যালেঞ্চ করে রিট আবেদনের ওপর সাতদিন শুনানী হয়েছে। জনস্বার্থে করা এ রিট আবেদনের পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করে সাতদি শুনানী করেছেন সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এবিএম নুরুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন ও মহিউদ্দিন মহিম।
বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি এম. ফারুকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ মামলার শুনানী অব্যাহত রয়েছে। রিটকারী আইনজীবী এই আইনটি বাতিলের পক্ষে আদালতে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীর জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলেকে সময় দিয়েছেন আদালত। তিনি আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী রাষ্ট্রের পক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরবেন।
রিটকারী আইনজীবী নুরুল ইসলাম বলেন, ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রির বিধান সংবলিত আইন একটি কালো আইন। এ আইন আল্লাহর আইনের বাইরে করা আইন। কোরআন হাদিস ও দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক ওয়াকফ সম্পত্তি বণ্টনের কথা বলা আছে।
কিন্তু সরকার ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রির বিধান সংবলিত আইন করে মুসলিম প্রধান দেশের জনগনকে হতাশ করেছে। তিনি বলেন, আমি ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে বিশ্বের ৯টি রাষ্ট্র পরিদর্শন করেছি। সেখানকার আইনগুলো সম্পর্কে জেনে এসেছি। বাংলাদেশ সরকারের করা আইনের সুযোগ নিয়ে স্বার্থন্বেসি মহল লাভবান হচ্ছে। এ সম্পত্তিগুলো বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, জনস্বার্থে আমি এ মামলাগুলো দায়ের করেছি। ২০১৩ সালে এ দুটি মামলা করেন এই আইনজীবী। ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর ও নিয়ন্ত্রনকল্পে বিশেষ বিধান। এ আইনে বলা হয়েছে যে, ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রয় অথবা অন্যকোনো লোকের নিকট উন্নয়নের নামে অংশি দারিত্বে বিক্রয় করা যাবে। এবং সেই বিক্রয় ওয়াকফ প্রশাসক বিক্রেতা হিসেবে হস্তান্তর দলিলে স্বাক্ষর করতে পারবেন।
যে কমিটিতে ওয়াকফ সম্পত্তির তত্বাবধানে থাকা মুতাওয়াল্লিকে বা বেনিফিসিয়ারিদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি। ইতোমধ্যে এই আইনের সুযোগ নিয়ে চিটাগাং সিলেট ঢাকার বহু োয়াকফ সম্পত্তি বিল্ডার্সদের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। কোরআন, হাদিস, হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্টের সিদ্ধান্ত লংঘন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্টে ওয়াকফ সম্পত্তি সম্পর্কে বলা আছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের ১৩০ কোটি মুসলমানদের ধর্মীয় সম্পত্তি আল্লাহ প্রদত্ত আইনের লঙঘন যেন না হয় এজন্য জনস্বার্থে আমি মামলা করেছি। তিনি বলেন, এর আগে বাংলাদেশ সরকার এ্ই আইনজীবীকে চেয়ারম্যান করে ওয়াকফ প্রশাসক নিয়োগ কমিটি গঠন করেন। সরকার ওয়াকফ ওয়াকফ সম্পত্তির বিষয়ে নুরুল ইসলামকে বিশ্বের ১১টি দেশ ভ্রমনের জন্য পাঠান। তিনি বলেন, এসকল দেশ সফর করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছি আমি। তিনি বলেন, সে প্রতিবেদনের আলোকে এখনও কোনো সরকার আইন প্রনয়ন করে নাই।
তিনি বলেন, ১৯৬২ সালের ওয়াকফ আইন অনুযায়ী ওয়াকফ করা সম্পত্তি বিক্রির কোনো বিধান ছিল না। এসব সম্পত্তি ওয়াকফ করা ব্যক্তির উত্তরাধিকারীরাই ভোগ করতেন। কিন্তু ২০১৩ সালের ওয়াকফ (সম্পত্তি হস্তান্তর ও উন্নয়ন) বিশেষ বিধান আইনের ৪-এর (ক) ধারায় ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে হস্তান্তরের বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
আইনজীবী আরো বলেন, ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রির এই বিধান সংবিধানের ৭, ২৬, ২৭, ২৮ ও ৩১ অনুচ্ছেদের সঙ্গেসাংঘর্ষিক। এই আইন বহাল থাকলে সব ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি হয়ে যাবে।
আদালত রিট আবেদনকারীর বক্তব্য শুনেছেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এ ব্যাপারে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী তার বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: