পাটের বীজ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের সম্পর্কে টানাপোড়েন

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০১৭, ০৭:১৩ পিএম

বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম সেরা পাট উৎপাদনকারী দেশ হলেও ৯০ ভাগ পাটের বীজ আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। এর সিংহভাগই আসে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে। দেশে পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা দক্ষতার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ইনস্টিটিউট কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকায় তারা পাট বীজ উৎপাদনে গুরুত্ব দেয় না বলেও অভিযোগ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের। এ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের সম্পর্কে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে।

পাটকে একসময় এদেশের ‘সোনালি আঁশ’ বলা হত। কিন্তু সেই ঐতিহ্য যেন এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। দেশীয় জাতের পাট বীজ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন এদেশের কৃষকরা। এজন্য পাট বীজের ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে পরনির্ভরতা। এছাড়া বিদেশ থেকে আনা বিজ কম সময়ে বেশি ফলন হয় বলেও কৃষকদের দাবি। এজন্যই ৯০ ভাগ পাটের বীজ আমদানি করা হয় বিদেশ থেকে।

অথচ একটা সময় এ দেশেই উৎপাদন করা হত পাটের বীজ। কৃষকরা তাদের জমির এক কোনায় বা জমির নির্দিষ্ট জায়গায় পাটের বীজ উৎপাদন করতেন। আর সেই বীজ থেকেই পাট উৎপাদন করা হত। কিন্তু সেই দৃশ্য এখন তেমন একটা চোখে পড়ে না। পাটের বীজের ক্ষেত্রে এখন আমদানিই যেন প্রধান ভরসা।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বলছে, পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে। কিন্তু কৃষি মন্ত্রণালয় পাট বীজ গবেষণায় গুরুত্ব দেয় না। এজন্য দেশীয় ভাল এবং উন্নতমানের বীজের আবিস্কার করা যাছে না। তাই পৃথক পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বিডি২৪লাইভকে বলেন, আগে আমাদের দেশের কৃষকরা নিজেদের বীজ নিজেরাই উৎপাদন করত। পরে তারা আস্তে আস্তে বিদেশী বীজের উপর নির্ভর হয়ে পড়েন। বিশ্বের উৎকৃষ্ট পাট বাংলাদেশের হলেও বীজ আমদানি করা হচ্ছে বিদেশ থেকে।

&dquote;&dquote;

বিদেশ থেকে কেন এত বেশী পরিমাণ পাট বীজ আমদানি করা হচ্ছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তারা পাট বীজ উৎপাদনে গুরুত্ব দেয় না। এজন্য আলাদা পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট করতে যাচ্ছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।

এদিকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পৃথক পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট করলেও তেমন কোনো সুফলতা আসবে না বলে মনে করছেন বিজেআরআই কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, দেশের পাট চাষিরা অনেক কম খরচে ভারতীয় পাট বীজ পাচ্ছেন। বাংলাদেশে পাট বীজ উৎপাদন করতে যে খরচ হয় সে তুলনায় প্রতিবেশী দেশ ভারতে পাটের বীজ উৎপাদনে খরচ অনেক কম। এত সুবিধার পর কৃষকরা নিজেরা পাট বীজ উৎপাদন করবেন কেন?

পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. চন্দন কুমার সাহ বিডি২৪লাইভকে বলেন, পাটের বীজ উৎপাদনে কৃষি মন্ত্রণালয় যথেষ্ট গবেষণা চলাচ্ছে। সেখানে পাট মন্ত্রণালয় পৃথক গবেষণা ইনস্টিটিউট করলে তারাও ভাল কিছু করতে পারবে না।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: