ভালবাসার স্ত্রী এখন হাসপাতালে কাঁদে!

মানিকগঞ্জে বিয়ে হওয়া কুষ্টিয়ার সানজিদা ইসলাম (২৪) নামের এক তরুণীকে তাঁর স্বামী অমানুষিক নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। টানা কয়েক দিন নানাভাবে নির্যাতন শেষে মেয়েটির মাথার চুল কেটে নেওয়া হয়েছে।

মেয়েটি কুষ্টিয়া শহরের উদিবাড়ি এলাকার আহসান হাবীবের মেয়ে। সানজিদা কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্রী। শরীরে নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে তিনি এখন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হাসপাতালে সানজিদা ও তাঁর স্বজনরা বলেন, প্রায় ছয় মাস আগে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার জয়মণ্ডুপ গ্রামের সাইফুল ইসলাম ওরফে সবুজের সঙ্গে সানজিদার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়। গত ৩ এপ্রিল পারিবারিকভাবে দুজনের বিয়ে হয়।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সানজিদা বললেন, ১২ মে রাতে সাইফুল তাঁকে আচমকা চড় ও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। কারণ জানতে চাইলে বলেন, তাঁর (সাইফুল) এক চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর (সানজিদা) সম্পর্ক রয়েছে। এমন অভিযোগের প্রতিবাদ করলে পিটুনির মাত্রা বেড়ে যায়।

গত মঙ্গলবার ও গত বুধবার রাতেও মারধর করেন সাইফুল। বুধবার তাঁর হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকা দেন। একপর্যায়ে তিনি সানজিদার মাথার চুল ঘাড়ের ওপর থেকে কেটে দেন।

তবে সাইফুলের দাবি, মারধর, চুল কর্তনের অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি বলেন, ‘সানজিদার চরিত্র ভালো নয়।...আমাকে ঘরে তালা দিয়ে সে পালিয়ে গেছে।’

সানজিদার স্বজনেরা বলছেন, সানজিদা বুধবার রাত দুইটার দিকে কৌশলে ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে পরিচিত একজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। বৃহস্পতিবার তিনি কুষ্টিয়ায় ফেরেন। বিকেলে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।

হাসপাতালের চিকিৎসক রুমন রহমান বলেন, সানজিদার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাত–পায়ে বেশি আঘাত করা হয়েছে। পাশাপাশি ছোট ছোট ক্ষত দেখা গেছে। তবে সেগুলো সিগারেটের কি না, তা বলা যাচ্ছে না।

সানজিদার ভাই আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

সিঙ্গাইর থানার ওসি খন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, সাইফুলের পরিবার অভিযোগ করেছে, সানজিদা অন্য ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গেছেন। সানজিদার পরিবার অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।