নিজের সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে যেভাবে প্রাণ দিলেন মা!

প্রকাশিত: ২৩ মে ২০১৭, ০৪:২৯ পিএম

হবিগঞ্জের বাহুবলে যাত্রীবাহি বাস উল্টে এক মা নিহত হয়েছে। এ সময় আরও ৩০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। বাসের ভিতরে মৃত্যুর দুয়ারে থেকে ৩ বছরের শিশু সন্তানকে বাঁচিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেল মা। এতে তিনি প্রমান করলেন মা শুধু মা’ই মায়ের কোন তুলনা হয়না।

গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপজেলার লস্করপুর নামক স্থানে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় উদ্ধারকারী উপজেলার কাইথপাড়া গ্রামের আব্দুস সহিদ জানান, ফায়ারকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসার আগে নিহত মহিলাটি জীবিত থাকাকালীন সময়ে মৃত্যুর দুয়ার থেকে নিজের জীবনের আশা বাদ দিয়ে তার তিন বছরের শিশু সন্তানটিকে বাঁচানোর জন্য আকুতি জানায়।

পরে তিনি নিজেই এক হাত দিয়ে গাড়ীর কাঁচ ভাঙ্গা জানালা দিয়ে সন্তানকে টেলে দেন আর শিশুটি বাবা-বাবা চিৎকার করে সম্পূর্ণরুপে অক্ষত অবস্থায় গাড়ীর ভিতর থেকে বাহিরে চলে আসে। কিন্তু দীর্ঘ এক ঘন্টা পরে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা শিশুর মাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে বাহুবল থানা পুলিশের জিম্মায় শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপরে সিলেট থেকে ছেড়ে কুমিল্লাগামী একটি যাত্রীবাহী বাস (ঢাকা মোট্রো ব ১১-০৮৬৮) ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপজেলার লস্করপুর নামক স্থানে পৌঁছলে চাকা পাংচার হয়ে উল্টে গিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে কমপক্ষে ৩০ জন যাত্রী আহত হন।

খবর পেয়ে বাহুবল থানা পুলিশ ও শায়েস্থাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে এসকেভেটর ও ক্রেন দিয়ে বাসটিকে সরিয়ে উদ্ধার কাজ চালানোর চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়।

এরই মধ্যে স্থানীয় লোকজন ৩০ জনকে বাসের ভিতর থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠান। পরে শায়েস্থাগঞ্জ ফায়ার ষ্টেশনের ষ্টেশন অফিসার জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল উদ্ধারকর্মী ঘটনাস্থলে এসে ড্রিল মেশিন দিয়ে বাসের বডি কেটে আনুমানিক ৩৫ বছরের একজন মহিলাকে নিহত ও ৫০ বছরের একজন মহিলাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন। আহতের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

জেলা পুলিশের সিনিয়র এএসপি রাসেলুর রহমান জানান, বৃষ্টি চলাকালীন সময়ে গাড়ীর গতিবেগ বেশি থাকায় চাকা পাংচার হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি উল্টে যায়। তবে জীবিত শিশুটির মা ও শিশুর পরিচয় জানা যায়নি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: