প্রাকৃতিক ও টিউব শিশুর জন্ম নিয়ে যা বললেন গবেষকরা!

প্রকাশিত: ২৭ মে ২০১৭, ১২:৪৫ পিএম

নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্ম নেয়া শিশুরাও প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া শিশুদের মতই জ্ঞানী। তবে অনেকেই মনে করতেন, আইভিএফে জন্ম নেয়া শিশুরা প্রিম্যাচিউর হয়ে জন্ম নেয়।

গবেষকেরা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ পদ্ধতিটিকে মূলত টেস্ট টিউব বেবির জন্ম পদ্ধতি বলেন। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যাতে কম খরচে ‘টেস্ট টিউব বেবি’ সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয়, সে লক্ষ্যে গবেষকেরা সাশ্রয়ী ও সহজ কিছু পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ জোনাথন ভ্যান ব্লেরকম জানান, আইভিএফ প্রক্রিয়াটি শুনতে জটিল হলেও ভ্রূণ তৈরি করা প্রক্রিয়াটি সহজ আর তা তৈরিতে খুব বেশি কিছু প্রয়োজন পড়ে না। টেস্ট টিউবে মানুষের ভ্রূণ তৈরি করতে মূল কিছু বিষয় ঠিক রাখলেই হয়। অ্যাসিডের সঠিক মাত্রা ও নির্দিষ্ট তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে বিষয়টি।

তাঁরা বলছেন, তিন দশক আগে প্রথম টেস্ট টিউব বেবির জন্মের পর থেকে ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন প্রক্রিয়াটি অত্যাধুনিক পরীক্ষাগারে বহুল প্রচলিত। আর তা বেশ ব্যয়বহুলও। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সাশ্রয়ী খরচে এ পদ্ধতি প্রয়োজন। এ পদ্ধতিতে সন্তান জন্ম দিতে পশ্চিমা দেশগুলোর অধিকাংশ সন্তান গ্রহণে ইচ্ছুক বাবা-মা হাজার হাজার ডলার খরচ করেন। দামি ইনকিউবেটর বা ডিম নিষিক্তকরণ যন্ত্র ও ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্রচুর অর্থ খরচ করেন তাঁরা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে ১২ থেকে ১৬ কোটি দম্পতি বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষক শেরিল ভ্যান্ডারপোয়েল জানান, উন্নয়নশীল দেশগুলোর বন্ধ্যত্ব সমস্যাকে কেউ সমস্যা মনে করেন না অথচ পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ সমস্যা প্রকট। সাশ্রয়ী আইভিএফ জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

তবে আইভিএফ-এর সবচেইয়ে বড় জটিলতা হলো একাধিক ভ্রূণ তৈরি। একাধিক ডিম্বাণু পৃথক করে তা প্রতিস্থাপন এ পদ্ধতির একটি স্বাভাবিক বিষয়। কেননা, খরুচে পদ্ধতি হওয়ায় একটি মাত্র নিষিক্ত ডিম্বাণুর ওপর ক্লিনিকগুলো আস্থা রাখতে পারে না। একাধিক ভ্রূণ বেড়ে উঠলে নারীর প্রজননতন্ত্রে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তবে জন্মের পর শিশুর জন্মগত ত্রুটির সঙ্গে আইভিএফ-এর সম্পর্ক নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। তবে শিশুর মধ্যে ক্রোমোজম ও জিনগত ত্রুটির নেপথ্যে আইভিএফ পদ্ধতির প্রত্যক্ষ সম্পর্ক এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এক গবেষণায় জানা যায়, যে সকল দম্পতি এই পদ্ধতি অবলম্বন করেন তাদের বয়স তুলনামূলক বেশি হয়, এদের পড়াশুনাও থাকে অনেক উচ্চতর পর্যায়ের এবং তাদের সামাজিক ভাবেও উঁচু মর্যাদা রয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ইউকে মিলেনিয়াম কোহর্ট স্টাডি থেকে একটি জাতীয় প্রতিনিধি দল ১৮,৫৫২ জন পরিবারের তথ্যের উপর জরিপ চালায়। ২০০০-২০০১ সালের মাঝে ১৫,২৮১ কৃত্রিমভাবে কল্পিত শিশুদের মধ্যে ৮০০০ শিশুকে ২০০৩, ২০০৫, ২০০৭ এবং ২০১২ সালের মাঝে বিভিন্ন সাধারণ জ্ঞানের পরীক্ষা নেয়া হয়। প্রতিটি পর্যায়ে বাচ্চাদের শব্দভান্ডার দক্ষতা পরীক্ষা করা হয়। তাদের জ্ঞান প্রাকৃতিক জন্ম নেয়া শিশুদের মতই স্বাভাবিক হয়েছিল।

হিউম্যান রেপ্রোডাকশন পত্রিকায় এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।

সূত্রঃ জি নিউজ।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: