নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে নারীরা

প্রকাশিত: ৩১ মে ২০১৭, ০৯:৪৩ এএম

নারী-পুরুষ একে অপরে পরস্পর সহযোগী। কাউকে বাদ দিয়ে কেউ কখনো এগিয়ে যেতে পারেনা। কিন্তু তারপরেও কর্মক্ষেত্র হতে সব স্তরেই নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে নারীরা।

শিক্ষক, বন্ধু তথা পুরুষদের উপর নির্ভরযোগ্য বিশ্বাস স্থাপন করতে পারছেনা নারীরা। স্যারের কাছে পড়তে গিয়ে, কোথাও ঘুরতে গিয়ে, অফিসের লোকদের কাছে এমনকি আজ কাল বাবার কাছেও প্রতিনিয়ত যৌন নিপীড়নের শিকার হতে হচ্ছে নারীদের। নির্জন স্থানে একাকী বের হতে পারছেনা তারা। বাসে উঠার সময় তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়। মেয়ে হয়েছে বলে কি তাদের স্বাধীনতা নাই? নাকি তারা ভিন্নগ্রহের মানবী?

‘নিরাপদ নগরী নির্ভয় নারী’ ভূমিকায় বেসরকারি একটি সংস্থা অ্যাকশনএইডের অর্থায়নে বিআইডিএস একটি গবেসণা চালান। সেখানে দেশের সাতটি বিভাগের ৮০০ জন নারী ও কিশোরী এবং ৪০০ জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের মধ্যে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়।

গবেষণায় দেখা যায় ৯৫ শতাংশ নারী মনে করেন, পুলিশি সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে হেনস্তার শিকার হতে হয়। যৌন নির্যাতনের শিকার ৮৪ শতাংশ নারী কোথাও অভিযোগ করা দরকার বলে মনে করেন না। ৬৫ শতাংশ নারী মনে করেন, পুলিশ অভিযোগকারীকেই দোষারোপ করে। ৫৭ শতাংশ নারীর মতে, মামলা নিতে পুলিশ গড়িমসি করে। পুলিশ কর্তৃক আবার হয়রানির আশঙ্কায় ৩০ শতাংশ নারী কোনো অভিযোগ করেন না।

গার্মেন্টস কর্মী রোকসানা বিডি২৪লাইভকে বলেন, আমাদের দিকে পুরুষরা কেন আড় চোখে তাকায়, আমরাতো এমনটা করিনা। একটু এদিক সেদিক হলেই অফিসে সুপারভাইজার গালাগাল করে। খবরে মাঝে মাঝে দেখি নারী গার্মেন্টস কর্মীদের যৌন নির্যাতনের করা হয়।

কলেজ ছাত্রী সামিরা বিডি২৪লাইভকে বলেন, পত্রিকা ও টিভিতে স্কুল ও কলেজের এমনকি নারী শিশুদেরও যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়। শিক্ষকদের বলা হয় পিতামাতার মত অথচ এখন তাদের আচরনে তাদেরকেও খুব ভয় করে।

তাবাচ্ছুম রোজা বিডি২৪লাইভকে বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের নারীদের দায়ী করা হয়; কিন্তু বাসে উঠার সময় মেয়েদের পিঠে হাত দেয়া হয় কেন। অনেক নারীকে নির্যাতনের বিচার আমরা এখনো পাইনি। নিরাপত্তার সাথে আমরা একাকী কোথাও সহজে যেতে পারিনা। আর গেলেও মনের মধ্যে সবসময় ভয় থাকে।

একজন স্কুল শিক্ষিকা বিডি২৪লাইভকে বলেন, নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে পুরুষকে সঠিক ভূমিকা পারন করতে হব্। এই নারীরাই কারো না কারো মা, বোন ও আত্মীয়। সবাইকে সচেতন হতে হবে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য নারী-পুরুষ সবাই নৈতিকতার সাথে করলে হয়তো মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খাঁন বিডি২৪লাইভকে বলেন, নারীসহ সবার নিরাপত্তায় কাজ করে যাচ্ছে র‌্যাব। অতীতে ও বর্তমানে সর্বদা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে র‌্যাব। যৌন নির্যাতনসহ অপরাধের ঘটনাগুলো আগে থেকে জানান দিয়ে হয় না। অপরাধীদের বিষয়ে আমরা সজাগ আছি।

ডিএমপি মিডিয়ার উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান বিডি২৪লাইভকে বলেন, নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশের কোন কমতি নাই। যদি কাউকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে বা গিয়ে নির্যাতন করা হয় তাতো পুলিশকে না জানালে জানবেনা। যখন অভিযোগ করা হয় অপরাধীদের বিরুদ্ধে তখন আমরা সবসময় ব্যবস্থা নেই। পুলিশ জনগণের নিরাপত্তার জন্য সবসময় কাজ করে। এ জন্য প্রয়োজন প্রত্যেক নাগরিরকে সচেতন হওয়ার কারণ পুরিশের একার পক্ষে সব সমাধান করা সম্ভব নয়।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: