গোদাগাড়ীতে মাদকের ভয়াবহতা ও অন্তরাল

প্রকাশিত: ৩১ মে ২০১৭, ১১:৩৯ পিএম

নিষিন্ধ জগতে অস্ত্রের পরই মাদকই সবচেয়ে লাভবান ব্যবসা ও বেশী আলোচিত বিষয়। বিশেষ করে ফেনসিডিল, ইয়াবা ও হিরোইন সহজলভ্য ও বহনযোগ্য বলে এর বিস্তার দেশজুড়ে। দেশের এমন কোনো উপজেলা নেই খুঁজে পাওয়া যাবেনা যেখানে মাদকের থাবা নেই। দেশজুড়ে বিশাল জাল বিস্তার করে আছে এই মরণ নেশার ভয়াবহ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। আন্তর্জাতিক মাফিয়াদের সঙ্গে রয়েছে এদের শক্ত ও গভীর যোগাযোগ।

এই দিকদিয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা মোটেও পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশের গোদাগাড়ী উপজেলাকে মাদকের রাজধানী হিসেবে বেশ পরিচিতি আছে। যতই দিন যাচ্ছে গোদাগাড়ীতে মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা জড়িয়ে পড়েছে মাদক সেবন ও বহনের কাজে। নষ্ট হচ্ছে যুব সমাজ, হাজার হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বুঝে না বুঝে এই পেশায় এসে জীবন নষ্ট করে দিচ্ছে। বাবা-মায়েরাও জানেনা নিজ সন্তানরা কিভাবে মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। গোদাগাড়ীতে ইদানিং মাদকের ভয়াবহতা এতটাই চরমে পৌচেছে যে তা বলার অপেক্ষা থাকে না।

আমাদের সমাজের এক শ্রেণীর মুখোশধারী লোক আছে যারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সভা, সমাবেশ, সেমিনার ও আইন শৃঙ্খলার মিটিং এ মাদকের বিরুদ্ধে তুখোর বিরোধীতা করে কথা বলে যেন তারা ধোয়া তুলসির পাতা। পরক্ষনেই সেখান হতে বের হয়ে সেই সব মুখোশধারী লোকগুলোই অন্তরালে থেকে রাতের আঁধারে কিন্তা গোপন যোগাযোগের মাধ্যমে এলাকার বড় বড় মাদক ব্যবসায়ী মাফিয়া ডনদের মাদক ব্যবসায় সহযোগিতা করছে। বিনিময়ে কুড়িয়ে নিচ্ছে বিশাল অর্থ।

এসব মুখোসধারী লোকদের মধ্যে রয়েছে, আইন শৃঙ্খলার বাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সমাজ সেবক, স্কুল কলেজের শিক্ষক, সাংস্কৃতি ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, সুশিল সমাজের লোক এমনকি যারা দেশ সেবার ও সমাজের বিভিন্ন অন্যায়গুলো লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে নামধারী হলুদ সাংবাদিক।

আমি দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই আপনারা সাধারণ মানুষ হয়তো জানেন অমুক ব্যক্তি সমাজের খুব ভালো লোক এবং সমাজ সেবাই ভালো ভূমিকা রাখে কিন্তু খোদ সেই লোকটিই মানুষের জীবন ধ্বংসকারী হিরোইন, ইয়াবা, ফেন্সিডিলের ব্যবসায় করছে অথবা কোনো না কোনো ভাবে মাদক ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করছে পেছনে শক্তি যোগান দিচ্ছে। সমাজের সেই সব লোকদের ধিক্কার দিতেই চাই কেন এমন বহুরুপী মানুষ হবেন?

আপনি সমাজটাকে কুটে কুটে খাচ্ছেন দেশটাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে একটি প্রজন্মকে নষ্ট করে দিচ্ছেন। জন্মলগ্নের পর হতেই দেখি আসছি গোদাগাড়ীর মাদকের ভয়াবহতা কি। এখন এই ভয়াবহতা আরো কঠিন আকার ধারণ করেছে। মাদকের ভয়ালথাবা গোদাগাড়ীবাসীর প্রতিটি ঘরে ঘরে প্রবেশ করে ফেলেছে। আমরা যদি এখন হতে এর প্রতিকারের পথ না খুঁজি তীব্র প্রতিবাদ না করি তাহলে আমারা সহ আগামী প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে।

গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসনের মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভা প্রতিমাসেই মাদক নিয়ন্ত্রণে করনিয় শীর্ষক আলোচনা হলেও এক শ্রেনীর মানুষ আছে যারা সেই আলোচনা সভার সকল গোপনীয়তা মাদক ব্যবাসায়ীদের নিকট ফাঁস করে দিয়ে অর্থের ফায়দা লুটে। কেমন করে হবে মাদক প্রতিকার? আমাদের ভালো মানুষের রুপের অন্তরালে কালো বিড়াল লুকিয়ে আছে তাহলে কি আদৌ সম্ভব মাদক নিয়ন্ত্রণ করা?

সমাজের সকল মানুষের নিকট আকুল আবেদন জানাই আসুন আমরা মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি। যে সব লোকগুলো মাদক ব্যবসায় জড়িত বা উৎসাহিত করে তারাও কি একবারও চিন্ত করে না যে আমাদেরও তো সন্তানরা এতে আসক্ত হয়ে পরিবারটিকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এসব মুখোশধারী লোকদের চিহিৃত করে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা উচিত বলে মনে করি। অনেক সময় প্রশাসন সব কিছু জেনেও নিরবে থাকে কিন্ত কেন এমন হবে। আমাদের গোদাগাড়ীকে আমাদের দেশকে আমাদের সন্তানদের আমাদেরকেই বাঁচাতে হবে।

জঙ্গী ও সন্ত্রাস দমনে বিভিন্ন প্রশাসন ব্যস্ত, লোকবল সংকটের করণে মাদক ব্যবসায়ীরা বীর দাপটে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মাদক ব্যবসা। এক দিনের ব্যবধানে গোদাগাড়ীতে দুই কুখ্যাত মাদক সম্রাট সোহেল রানা ও গোদাগাড়ী পৌর সভার ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো: নওশাদ জামাতী আটক হয়েছে।

পরবর্তিতে আরো কিছু মাদক সম্রাট আটক হয়েছে তবে কাউকে ৩৪ ধারায় আটক দেখিয়ে জেলা হাজতে প্রেরণের ফলে পরদিনই বের হয়ে আসছে। ৩৪ ধারায় আটকের পেছনে থানা পুলিশ মোটা অংকের বোখরার বিনিময়ে এমন করেছে বলে জানাযায়।

বাংলাদেশী ও ভারতীয় মাদক সম্রাটদের সখ্যতার কারনে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা ও চাঁপাই নবাবগজ্ঞ জেলার সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী পথ গুলো দিয়ে প্রতিদিন দিন কোটি কোটি টাকার হেরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা, দামী মদ, যৌন উত্তেজক ঔষুধসহ মাদক দ্রব্য পাচার হয়ে আসছে। র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, ডিবি পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা বেশ কিছু মাদক দ্রব্য উদ্ধার করে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার বলছেন মাদকের সাথে জিরো টলারেন্স। কোনভাবে ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশের মহাপরিচালক একেএম শহীদুল হক একই কথা বলছেন যদি কোন পুলিশ সদস্য মাদকের সাথে জড়িত থাকে তাদেরকেও কোনভাবে ছাড় দেয়া হবে না। তার পরেও গ্রাম অঞ্চলের অলিগলি, রাস্তা-ঘাট, মাঠঘাট থেকে শুরু করে শহরেও সহজে মিলছে হেরোইন ফেনসিডিল ইয়াবাসহ আন্যান্য মাদক দ্রব্য।

নিরক্ষর থেকে শুরু করে শিক্ষিত যুবক যুবতীরাও এ নেশায় এখন জড়িয়ে পড়েছে। মাদকের সহজ লভ্যতার কারনে দিনে দিনে খুন, হত্যা, ক্রিকেট খেলায় লাখ লাখ টাকা জুয়া, ধর্ষণসহ নানা অপকর্ম বৃদ্ধি পাচ্ছে আশাংকাজনক ভাবে। মাদকের ভয়াল ছোবলে কোমলমতি শিশু, ছাত্র-ছাত্রীরাও জড়িয়ে পড়ছে নেশার বেড়াজালে। বৃদ্ধ, যুবসমাজ ভাঙছে সুখের সংসার। মাদকের সহজলভ্যতা নিয়ে খোদ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, জনপ্রতিনিধিরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন।

একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ভারতের মর্শিদাবাদ জেলার লালগোলার কুখ্যাত মাদক চোরাকারবারীর গডফাদার ও গোদাগাড়ীর চিহ্নিত তালিকা ভুক্ত মাদক সম্রাট, হুন্ডি ব্যবসায়ীর গডফাদারদের সাথে সাপ্তহিক, মাসিক লাখ লাখ টাকা বখরার বিনিময়ে ভারতের কৃষ্টপুর, পুরপুরি, ভবমান গোলা লালগোলা জঙ্গিপুর, দমদম প্রভূতি এবং রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগজ্ঞ, রেলওয়ে বাজার, হাটপাড়া, বিদিরপুর, প্রেমতলী, হরিসংকরপুর, সুলতানগজ্ঞ, প্রভূতি এলাকা এবং চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আলাতুলি, বগচর, ক্লাব ঘাট প্রভূতি এলাকা দিয়ে মাদকদ্রব্য আনা নেয়া হচ্ছে।

ভারত থেকে চোরাই পথে আনিত হেরোইন, ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা প্রভূতি মাদকদ্রব্য বিষ বাষ্পের মতো ছড়িয়ে দিচ্ছে মাদক সিন্ডিকেট। মাদক পাচারের সব চেয়ে নিরাপদ রুটগুলো হলো গোদগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়া দহ, মানিকচক, কানাপাড়া, চাঁপাই নবাবগজ্ঞ সদর উপজেলার কোদাল কাটি, আলাতুলি, ঝাইলা পাড়া, ক্লাব ঘাট প্রভূতি এলাকা।

ভারত থেকে হেরোইন ফেনসিডিল মদসহ অন্যান্য মাদক দ্রব্য পাচার করে নিয়ে আসে নিজ বাড়ীতে কিংবা টাকার বিনিময়ে অন্যের বাড়ীতে রাখেন, সে গুলো কোন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী, গরুর রাখাল, সুন্দরী কিশোরী, গৃহবধুর মাধ্যমে পদ্মা নদীর এপারে গোদাগাড়ী পৌরসভার সি এন্ড বি, গড়ের মাঠ, মাদার পুর, হাটপাড়া, রেলওয়ে বাজার, কুঠিপাড়া, শিবসাগর, বারুইপাড়া প্রভূতি এলাকার বাসা বাড়ীতে রেখে রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মানিকগজ্ঞ, ঢাকা চিটাগাং, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হয়ে থাকে।

মাদকদ্রব্য পাচার, ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত রয়েছে শত শত নানা ধরনের মানুষ। অপরদিকে টেকনাফ, কক্সবাজার এলাকা হতে ইয়াবা নিয়ে এসে সহজলভ্য ভাবে বিক্রি করে চলেছে। মাদকদ্রব্য ও চোরাচালানী পুন্য পাচার ক্রয়-বিক্রয় তাদের একমাত্র পেশা।

বেসরকারী এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, গত ২৫ বছরে গোদাগাড়ী উপজেলা সহ পৌরসভা এলাকার ৫শতাধিক ব্যক্তি মাদকদ্রব্যের ব্যবসা করে শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন এবং লাখপতি হয়েছেন কয়েক হাজার। তাদের অবস্থান এখন সমাজের শীর্ষে স্থানে। কেউ কেউ কালো টাকার ছড়াছড়ি করে নির্বাচনে প্রভাব খাটিয়ে হয়েছেন চেয়ারম্যান, মেয়র, মেম্বার, কাউন্সিলার, ইউপি সদস্য, রাজনৈতিক দলের তথাকথিত প্রভাবশালী নেতা, কথিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক।

সংগত কারনে তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। মাদকদ্রব্য সেবন করে অকালে মারা গেছে, শতাধিক মাদকসেবী। আর মৃত্যুর পহর গুনছেন কয়েক হাজার মাদকসেবী। ওই সব চোরকারবারীর গডফাদারেরা নিয়োগ করেছেন শ’ শ’এজেন্ট।

উপজেলার খেয়াঘাট ছাড়াও তারা ব্যবহার করছেন প্রাইভেট নৌকা, কার,মাইক্রো হোন্ডা, মোবাইল ফোন , ভারতীয় সীম এবং তাদের ভারতীয় এজেন্টদের নিকট রয়েছে বাংলাদেশী সীম যাতে সহজে অল্প খরচে সহজে কথা বলা যায় । ওই সব মাদক চোরা কারবারীর গডফাদারেরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মোবাইল সীম ব্যাবহার করে থাকেন।

অনেক সময় বিজিবি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা সীমান্তবর্তী আলাতুলি, কোদলকাটি, এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সীমান্ত ডি.এম.সি চর আষাড়িয়া দহ প্রভূতি এলাকায় কেজি, কেজি, হেরোইন, হাজার হাজার বোতল ফেনসিডিল আসামীসহ আটক করেন থানায় মাদক আইনে মামলা দেন। ওই সব মাদক সম্রাটদের মাদকের মালিক হিসেবে আসামী করা হয়। কিন্তু এল. আই. বিজিপি সরজমিনে তদন্তে গিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা বখরার বিনিময়ে ম্যানেজ হয়ে আসামীদের পক্ষে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেন বলেই তারা পার পেয়ে যায়।

অপর দিকে পুলিশ যে সব মামলা দেন, সেই মাদকের মামালায় ২-৩ জন মাদক সম্রাটদের আসামী করা হয় কিন্তু তাদের নাম রহস্যজনক কারণে আদালত পর্যন্ত যায় না। তাদের পক্ষে চূড়ান্ত রিপোট কিংবা দূর্বল চার্জশীট দেয়ার ব্যাপক আভিযোগ রয়েছে।

ওই সব মাদক ব্যবসায়ীরা সব সময় অসৎ পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, অসৎ রাজনৈতিক নেতা, হলুদ সাংবাদিক, পাতিনেতাদের হাত করে চালার চেষ্টা করে, অনেক সময় নিজেকে ক্ষমতাশীন দলের লোক বিভিন্ন মহলে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করেন নিজেকে প্রশাসনের লোকদের নিকট থেকে নিজেকে আড়াল করতে।

গোদাগাড়ী পৌরসভা ও উপজেলায় নামিদামি জায়গায় আলাতুলি, কোদালকাটি, চর আষাড়িয়াদহ এলাকার তালিকাভূক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা মাটি কিনে রাজকীয় বাড়ী তৈরী করেছেন এবং প্রধান প্রধান বাজারে দোকান কিনে কথিত মোবাইল দোকান, গার্মেন্স, জুতা স্যান্ডেলের দোকান করেছেন এবং ওই সব দোকানে বিভিন্ন প্রশাসনের লোকজনদের খোশ গল্প, ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দিতে দেখা যায়। কিন্তু ওই সব দোকানে মূলত মালিক কোন সময় আসেন না, অন্য লোক দিয়ে সারা বছর চালানো হয়।

ওই সব কথিত দোকান ও বাড়ীর আড়ালে চালানো মাদক ব্যবসা। মাদক ব্যবসায়ীদের কোন রাজনৈতিক দল নেই তারা সব সময় ক্ষমতাশীন দলের অসৎ জনপ্রতিনিধি, অসৎ রাজনৈতিক নেতা, পাতিনেতাদের হাত করে চালার চেষ্টা করে, অনেক সময় নিজেকে ক্ষমতাশীন দলের লোক বিভিন্ন মহলে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করেন নিজেকে প্রশাসনের লোকদের নিকট থেকে আড়াল করতে।

রাজশাহী-১ আসনের এমপি সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী আইন শৃংখলার সভায় একাধিক বার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন গোদাগাড়ীতে যে কোন মূল্যে মাদক ক্রয় বিক্রয় বন্ধ ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন।

কেননা চোরাচালানী ,মাদক সম্রাটরেরা দেশ, জাতি, সমাজের শত্রু । এরা যুবসমাজকে ধ্বংশ করছে, কোন কোন পরিবারকেও গ্রাস করে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে। দেশ, যুবসমাজ, বাঁচাতে হলে প্রথমে যে কোন মূল্যে মাদক চোরাকারবারী বন্ধ করতে হবে। তার পর পরই পুলিশের তালিকাভুক্ত কুখ্যাত মাদক সম্রাট জাহাঙ্গীর ও শিষ মোহাম্মদ শিষু, নয়নসহ বেশ কিছু চিহ্নিত মাদক সম্রাটকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাদকসহ গ্রেফতার করেছেন।

তাদের গ্রেফতারে পর থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সাথে সখ্যতা করে চলায় ১৯৮ জন তালিকা ভুক্ত মাদক সম্রাট জামাই আদরে রয়েছে বলে ব্যপক অভিযোগ রয়েছে। দেখার যেন কেউ নেই।

গত শুক্রবার ৫ মে কুখ্যাত মাদক সম্রাট সোহেল রানা, গত বৃহস্পতিবার মাদক সম্রাট নওসাদ আলীকে এর পূর্বে মাদক সম্রাট ও গোদাগাড়ী পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রবিউল ইসলাম রবিসহ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশ।

গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি হিপজুল আলম মুন্সীর সাথে বলেন মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সবসময় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাদের জন্য কোনো ছাড় নেই। তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে সমাজের সকল মানুষদের নিকট সহযোগিতা কামনা করেছেন।

রাজশাহী জেলা ডিবির ওসি আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত ভাবে চলছে, গত এপ্রিল মাসে ১ কেজি ৯শ ৬৫ গ্রাম হেরোইন, ৫ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে এর সাথে জড়িত থাকার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে ১০টি নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।

গোদাগাড়ী স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো: এনামুল হক বলেন, মাদকের সহজলভ্যতা, বাড়ি বাড়ি, অলিগলিতে মাদক ব্যবসা ও মাদক সম্রাটদের সংখ্যা বৃদ্ধি কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরাও জড়িয়ে পড়ছে মাদক নেশায়, মেধা শূন্য হয়ে পড়ছে, যে কোন মূল্যে গোদাগাড়ীর মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে হবে ভবিষ্যত সোনার বাংলার কথা চিন্তা করে।

গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: বদিউজ্জামান বলেন, কারা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত, এলাকাবাসী, পুলিশ, ডিবি পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন লোকজন জানেন যারা ২ থেকে ৭ বছর পূর্বে ভ্যান চালক, কামলা, কুলিগিরি, হোটেল বয়, রাজমিস্ত্রির লেবার, ডিম বিক্রেতা ছিল তারা আজ কোটি কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স, মাঠে ৭০/৮০ বিঘা জমি, গাড়ী, রাজকীকয় একাধিক বাড়ির মালিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হন কিভাবে। তিনি আরও বলেন, মাদক সম্রাট সোহেল রানা, রবিউল ইসলাম রবি, নওসাদকে গ্রেফতার করে পুলিশ প্রশাংসা কুড়াচ্ছেন তেমনী অন্যান্য মাদক সম্রাটের বিরুদ্ধে পুলিশকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে তা হলে গোদাগাড়ীর মাদক ব্যবসা কমে আসবে কিংবা নিয়ন্ত্রন হবে। মাদক ব্যবসায়ীদের কোন দল নেই তারা দেশ জাতি সমাজের কীট তাদেরকে প্রতিহত করতেই হবে একই মন্তব্য করেন গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামীলীগের নেতা মো: মনিরুল ইসলাম বাবু।

ভুক্তভোগিসহ সচেতন মহলের সাথে কথা বললে তারা গোদাগাড়ী এলাকার মাদক সিন্ডিকেট ভাংগার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উদ্ধর্তন কর্তপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। যাতে করে গোদাগাড়ীরবাসী অচিরেই মাদকের ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পাই তরুণ প্রজন্মকে মাদকের হাত থেকে বাঁচিয়ে উন্নত সমাজ গঠনে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।

লেখক: মো: আব্দুল বাতেন, সাংবাদিক
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
ই-মেইল: [email protected]
মোবাইল: ০১৭১২ ৮০৩৪৭৫

খোলা কলামে প্রকাশিত সব লেখা একান্তই লেখকের নিজস্ব মতামত। এর সাথে পত্রিকার কোন সম্পর্ক নেই।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: