সাড়ে তিন বছর ধরে স্বামী প্রবাসে, স্ত্রী চার মাসের গর্ভবতী!
ওয়েছ খছরু
সিলেট থেকে
প্রেমিকের হাত ধরে সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটে পালিয়ে এসেও শেষ রক্ষা হলো না প্রবাসীর বধূ শাহানা আক্তার মিনতির। হোটেলে ওঠার মুহূর্তে পুলিশ তাদের আটক করে। পরে দুইজনের বক্তব্য শুনে পুলিশ হতবাক।
মিনতির স্বামীর পরিবার দাবি করেছে- মালয়েশিয়া প্রবাসী হারিছ আলীর জন্য এক সময় আত্মহত্যার ঘোষণা দিয়েছিল মিনতি। এ অবস্থায় মালয়েশিয়া যাওয়ার আগের দিন অনেক নাটকীয়তার মধ্যে হারিছের সঙ্গে মিনতির বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর স্বামী হারিছের অনুপস্থিতিতে আমিনুল ইসলাম নামের একজনের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
শাহানা আক্তার মিনতির বাড়ি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের জুমগাঁও গ্রামে। প্রায় ৫ বছর আগে একই গ্রামের গৌছ আলীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মিনতির। কিন্তু সেই বিয়ে স্থায়ী হয়নি। ওই সময় একই গ্রামের মো. হারিছ আলীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে মিনতির। তাদের গোপন প্রেম এক সময় এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। তখন হারিছ আলীর মালয়েশিয়া যাওয়ার সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত। হারিছ দেশে থাকতেই বিয়ের জন্য চাপ দেয় মিনতি। এক পর্যায়ে মিনতি ঘোষণা দেয়, হারিছ তাকে বিয়ে না করে বিদেশ চলে গেলে সে আত্মহত্যা করবে। শেষ পর্যন্ত হারিছ আলী মালয়েশিয়া যাওয়ার আগের দিন দুই পরিবারের সম্মতিতে মিনতির সঙ্গে তার কাবিন হয়। তবে কাবিন করলেও মিনতি তার পিতার বাড়িতেই বসবাস করতো। কথা ছিল হারিছ আলী দেশে ফিরলে অনুষ্ঠান করে মিনতিকে ঘরে তুলবে।
এদিকে হারিছ আলী বিদেশে চলে যাওয়ার পর মিনতি আবার ভর্তি হয় স্থানীয় কলেজে। কলেজে যাওয়া-আসার সুবাদে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় একই গ্রামের আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। আমিনুল ইসলামের বয়স ৩২ বছর। তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। আমিনুল প্রায় দিনই নিজের মোটরসাইকেলে করে মিনতিকে কলেজে পৌঁছে দিতো। এই ঘনিষ্ঠতায় নতুন করে এলাকায় আমিনুল ও মিনতির সম্পর্কের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠে। বিষয়টি নিয়ে আমিনুলের পরিবারেও অশান্তি দেখা দেয়। এ অবস্থায় কয়েক দিন আগে আমিনুলের স্ত্রী দোয়ারাবাজার থানায় আমিনুলের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা করেন।
এদিকে গত ১৬ই জুলাই থেকে পিত্রালয়ে থাকা শাহানা বেগম মিনতিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। একই সঙ্গে আমিনুলও ছিল নিখোঁজ। এ কারণে এলাকায় চাউর হয়ে যায় আমিনুলের সঙ্গে পালিয়েছে মিনতি। মঙ্গলবার রাতে সিলেটের সুরমা মার্কেটের একটি হোটেলের বাইরে অবস্থান করছিল আমিনুল ও মিনতি। এ সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। বন্দরবাজার ফাঁড়ির টহল পুলিশের নজরে বিষয়টি এলে তারা এতে হস্তক্ষেপ করে। প্রথমে তাদের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা পরিলক্ষিত হলে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদকালে পুলিশ জানতে পারে আমিনুল ও মিনতির সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে। দুইজনই বিবাহিত। তাদের পৃথক সংসার রয়েছে। এরপর পুলিশ তাদের থানা হাজতে আটকে রাখে।
মিনতি পুলিশকে জানায়, সে আমিনুলকে ভালোবাসে। আমিনুলকে বিয়ে করতে তারা পালিয়েছে। সিলেটের পুলিশের হাতে আমিনুল ও মিনতি আটকের খবর রাতেই পৌঁছে যায় দোয়ারাবাজারের বাংলাবাজারে। খবর পেয়ে রাতেই থানায় যান মিনতির স্বামী হারিছ আলীর বড় ভাই হারুন মিয়া।
তিনি গতকাল জানিয়েছেন, ১৬ই জুলাই থেকে মিনতি নিখোঁজ রয়েছে বলে আমরা তার পরিবার থেকে জেনেছি। আর খবর পেয়ে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় এসে মিনতিকে দেখতে পাই। তিনি জানান, থানায় আসার পর তিনি শুনেছেন মিনতি ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। স্বামী হারিছ যেহেতু সাড়ে তিন বছর ধরে প্রবাসে সুতরাং তার অন্তঃসত্ত্বার কারণ হতে পারে আমিনুল কিংবা অন্য কেউ। এ বিষয়টি নিয়ে এখন তারা ভাবছেন বলে জানান তিনি।
সিলেটের বন্দরবাজার থানার এএসআই হাফিজ উদ্দিন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার আটক করার পর বুধবার আমিনুল ও মিনতিকে মেট্রোপলিটন পুলিশ আইনে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত মিনতিকে মামার জিম্মায় জামিন দিলেও আমিনুল ইসলামকে জেলে পাঠিয়ে দেন। আমিনুলের বিরুদ্ধে দোয়ারাবাজার থানায় একটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
পরকীয়ার টানে মিনতি ঘর ছাড়ার খবর শোনার পর ১৬ই জুলাই সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছিলেন হারিছের বড় ভাই মোশারফ হোসেন। ওই এজাহারে তিনি দাবি করেন মিনতি তার পিতার বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ৫ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। দোয়ারাবাজার থানার এসআই শিবলু গতকাল জানিয়েছেন, পুলিশ এজাহারটি নিয়ে তদন্ত করছে। তিনি বলেন, এর আগে আটক হওয়া আমিনুলের স্ত্রী একটি যৌতুক মামলা করেছিলেন। সূত্র: মানবজমিন
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: