ঢাবির অন্তর্ভূক্তি ও একজন সিদ্দিকুরের চোখের আলো

প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০১৭, ০৮:০৩ পিএম

শিক্ষাই আলো। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষাই একটি জাতিকে উন্নতির শিখরে পৌঁছায়। সেই শিক্ষা অর্জন করতে গিয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ে বিক্ষোভ করতে হয় শিক্ষার্থীদের।বিক্ষোভে গিয়ে পুলিশের কাদাঁনে গ্যাসের শেলের আঘাতে চোখের আলো হারাতে বসেছে সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান। আহত হয়েছে আরও বেশ কিছু শিক্ষর্থী।এটা একটি দেশ, জাতি ও সমাজের জন্য অত্যন্ত ঘৃণার, লজ্জার এবং দুঃখজনক।

গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা রাজধানীর ৭টি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। কলেজগুলো হচ্ছে- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।

এই কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভূক্ত করার প্রধান লক্ষ্য:- সেশনজট কমানো ও শিক্ষার মান উন্নয়ন। এ কারণে ঢাবির অন্তর্ভূক্ত হওয়া কলেজের শিক্ষার্থীদের আনন্দের কমতি ছিল না। এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের এ দাবি অনেক আগে থেকেই ছিল। শিক্ষার্থীরা মনে করেছিল, এবার তারা সেশনজট থেকে বাঁচবে এবং শিক্ষার মানও উন্নত হবে। ৭ কলেজ ঢাবির অন্তর্ভূক্তি হওয়ার প্রায় ৬ মাস কেটে গেলেও রুটিন কিংবা পরীক্ষা নেওয়ার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করে নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।

এ কারণে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবি ভিসির বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করেছেন এবং রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের কাদাঁনে গ্যাসের শেলের আঘাতে চোখের আলো হারাতে বসেছে এক শিক্ষর্থী গণমাধ্যমের বদৌলতে জানতে পারলাম দুই চোখে অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকেরা বলছেন, সিদ্দিকুরের চোখের আলো ফেরার সম্ভাবনা কম।

গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর একটি গণমাধ্যমে ঢাবির ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে বলেছেন, শিক্ষার্থীরা কেন আন্দোলন করছে, তা তিনি নিজেও জানেন না! এবং এই আন্দোলনের পিছনে কারা রয়েছে তাও তিনি খতিয়ে দেখতে বলেন সাংবাদিককে। দেশের সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তা ব্যক্তির এ ধরণের বক্তব্য সত্যিই জাতিকে ব্যথিত করেছে। এছাড়ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মানসম্মত উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করার জন্য যে দেশে বিক্ষোভ করতে হয় ও বিক্ষোভে গিয়ে পুলিশের হাতে চোখের আলো হারাতে হয় এবং এর পরেও প্রতিষ্ঠান প্রধান হাস্যকর বক্তব্য দেন। পাশাপাশি অজ্ঞাতনা ১২০০ জনের নামে মামলা করে পুলিশ। তাহলে এর সমাধান কোথায়?

লেখক ও সাংবাদিক

খোলা কলামে প্রকাশিত সব লেখা একান্তই লেখকের নিজস্ব মতামত। এর সাথে পত্রিকার কোন সম্পর্ক নেই।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: