মনপুরার মেঘনায় ইলিশের আকাল
ফরহাদ হোসেন,
ভোলা থেকে:
ভোলার মনপুরার মেঘনায় ইলিশ মৌসুমের মাঝামাঝি সময় শেষ হলেও জেলেদের জালে ইলিশের দেখা নেই। ভরা মৌসুমেও জেলেদের জালে ইলিশ ধরা না পড়ায় আড়তদার ও জেলে কারও মুখে হাসি নেই। দুই চারটা ছোট বড় সাইজের ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ে। ইলিশ কম পাওয়ায় দাম অনেক বেশী। এতে করে মৎস্য ব্যাবসায়ীরা ব্যবসায় তেমন একটা লাভবান হতে পারছেনা। কিন্তু দাম একটু বেশী পাওয়ায় যাবতীয় খরচ পুষিয়ে জেলেরা মোটামুটি খেয়ে না খেয়ে বেচেঁ আছেন। ইলিশ মৌসুমের অর্ধেক সময় পার হলেও মেঘনায় মাছ না পাওয়ায় জেলে আড়তদার সকলের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরা রুপালী ইলিশের দেশ হিসেবে বেশ পরিচিতি রয়েছে। এখানকার প্রধান পেশা কৃষি হলেও প্রায় সবাই মৎস্য সম্পদের উপর নির্ভরশীল। সরকারী হিসাব মতে ১১ সহস্রাধিক হলেও লক্ষাধিক মানুষের এই আবাস ভূমিতে প্রায় ২০ সহস্রাধিক মানুষ মাছ ধরার সাথে জড়িত রয়েছেন। প্রতি বছরই একটা নিদিষ্ট সময়ে এখানকার সকল স্তরের মানুষ মেঘনায় ইলিশের দিকে চেয়ে থাকে।
মেঘনার ইলিশকে ঘিরে মনপুরার মানুষের জীবন ও জীবিকার চাকা ঘুরছে। মেঘনায় ইলিশ আছে তো মানুষের মুখে হাসি আছে। সেই দৃষ্টিকোন থেকে বর্তমানে মানুষ ভালো নেই। জেলে আড়তদারদের জীবনও প্রায় অসহনীয় হয়ে উঠেছে। বছরের জৈষ্ঠ্য মাস থেকে ইলিশ পড়ার মৌসুম শুরু হয়। সেই হিসেবে ইলিশ মৌসুমের ২ মাস অতিবাহিত হলেও মেঘনায় ইলিশের দেখা মিলছেনা। জেলে আড়তদাররা দুর্দিন পার করছেন। আড়তদাররা ইলিশের উপর নির্ভর করে জেলেদের মাঝে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। মেঘনায় মাছ পাওয়া গেলে তা বিক্রি করলে তারা একটা নিদিষ্ট অংকের কমিশন পাবেন বলে আশায় বুক বেঁধে আছেন।
এব্যাপারে উপজেলার হাজীর হাট ঘাটের আড়তদার নিজামউদ্দিন হাওলাদার বলেন ইলিশ মৌসুমের শুরু থেকে মেঘনায় ইলিশ মাছ পাওয়ার কথা। ২ মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে কিন্তু ইলিশের দেখা নেই। সব টাকা মেঘনায় বিনিয়োগ করে এখন শুধু সে দিকে তাকিয়ে থাকি। কখন জেলেরা নৌকা কিংবা ট্রলার ভর্তি করে মাছ নিয়ে আসবে।
৩ নং উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিশিষ্ট মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ জাকির হোসেন বলেন, আল্লাহ তায়ালা যদি মেঘনায় মাছের ব্যবস্থা করে দেন তাহলে জেলেরা হাসি খুসিতে দিনানিপাত করে। পাশাপাশি আমরাও মেঘনায় যে মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করেছি সে টাকাও মোটামুটি লাভ সহকারে ফিরে পাওয়ার সম্ভবনা থাকে। গত বছর এই সময়ে প্রচুর ইলিশ পাওয়া গেছে। কিন্তু এবছর এখনও ইলিশের তেমন একটা দেখা নেই।
উপজেলার সোনার চর, চরযতিন মৎস্য ঘাটে বুধবার কথা হয় জেলেদের সাথে। মেঘনায় ইলিশ ধরে ঘাটে আসলে কথা হয় জেলে ইব্রহিম মাঝি,সামসুউদ্দিন মাঝি,মোছলেউদ্দিন মাঝি ও জসিম মাঝির সাথে। মাঝিরা বলেন তেল ,মবিল পুড়ে অনেক কষ্ট করে জীবন বাজি রেখে মাছ ধরতে মেঘনায় যাই। গড়ে প্রতিদিন ১/২ হালি ইলিশ পেয়ে থাকি। ৮/১০ জন মাঝির খাওয়া খরচ চালিয়ে যে খরচ হয় মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ পুশিয়ে জেলেদের কোন টাকা দিতে পারিনা। স্যারগো আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি। জেলেদের সংসার চালাতে খুব হিম শিম খেতে হচ্ছে।
মেঘনায় মাছ না পড়ায় জেলে আড়তদার কারও মুখে হাসি নেই। মাছ না পাওয়ায় জেলে পরিবারে দিন দিন দায় দেনার পরিমান বাড়ছে। সামনে কোরবানের ঈদ। ঈদে পরিবার পরিজন ছেলে মেয়েদের কিভাবে সামলাবো সে চিন্তায় জেলেরা অস্থির।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: