স্ত্রীকে পিটিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা

প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০১৭, ০৯:২১ পিএম

পাবনা শহরে রুপকথার গলিতে স্বামী কর্তৃক তানিয়া সুলনাতা (২২) নামের স্ত্রীকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। বুধবার বেলা ১২ টায় শহরের শান্তিনগরের (রূপকথার গলি) বাড়ি থেকে নিহত গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় স্বামী তৌহিদুল ইসলাম রঞ্জন, শ্বশুর শাহজাহান আলী ও শ্বাশুড়ি আনোয়ারা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবীতে শহরে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।

নিহত গৃহবধুর স্বজনরা জানান, তিন বছর আগে পাবনা শহরের তুষ্ট কমপ্লেক্স এর মালিক তৌহিদুল ইসলাম রঞ্জনের সাথে জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার মিরকামারী গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস মোল্লার মেয়ে তানিয়া সুলতানা (২২) এর বিয়ে হয়। নিহত গৃহবধুর ২ বছর বয়সী একটি শিশু সন্তানও রয়েছে। সম্প্রতি স্বামী রঞ্জনের পূর্বের একটি বিয়ের কথা প্রকাশ হলে তাদের মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে মঙ্গলবার রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রঞ্জন ও পরিবারের লোকজন তানিয়াকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে নিহতের মরদেহ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেবার চেষ্টা করে।

নিহত গৃহবধুর ভাই তুফান হোসেন জানান, সকালে আমার ছোটবোন তানিয়া গুরুতর অসুস্থ বলে তার স্বামী আমাদের বাড়িতে খবর পাঠায়। আমরা এসে দেখি তার শয়ন ঘরের মেঝেতে লাশ পড়ে আছে। এ সময় রঞ্জনের পরিবারের লোকজন তানিয়া আত্মহত্যা করেছে বলে দাবী করে। কিন্তু তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে প্রতিবেশীরাও জানায় রাতভর তানিয়াকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী জানান, রাত তিনটার দিকে গৃহবধু তানিয়ার আত্মচিৎকারে আমরা ওই বাড়িতে যাই। এ সময় রঞ্জন ও তার পরিবারের লোকজন বিষয়টি তাদের পারিবারিক বলে আমাদের বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেয়। পরে সকাল দশটার দিকে আমরা শুনি রঞ্জনের স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে।

প্রতিবেশীরা আরও জানান, রঞ্জন তার প্রথম স্ত্রীকেও নির্যাতন করায় তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। ঐ সময় প্রথম স্ত্রীর দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলায় রঞ্জন ও তার মাতা-পিতা বেশ কিছুদিন জেলও খেটেছে। ঐ মামলাটি এখনও বিচারাধিন রয়েছে। এসব ঘটনা গোপন করে রঞ্জন তানিয়াকে বিয়ে করে। বিষয়টি জানাজানির পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়।

এদিকে, নিহত গৃহবধুর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ এসে ঐ বাড়ি থেকে বেলা ১২ টার দিকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ সময় এলাকাবাসী হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবীতে বিক্ষোভ করে।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মাহমুদুল হাসান জানান, সুরতহালে নিহতের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জন্য নিহতের স্বামী রঞ্জন, শ্বশুর শাহজাহান আলী ও শ্বাশুড়ি আনোয়ারা বেগমকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।


বিডি২৪লাইভ/ইউএইচ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: