মানুষ গড়ার কারিগর

প্রকাশিত: ০৮ আগষ্ট ২০১৭, ১০:০৯ পিএম

শাহরিয়ার আমিন,
বাকৃবি প্রতিনিধি:

কেউ হতে চায় ডাক্তার আবার কেউবা ইঞ্জিনিয়ার। কেউ আবার হতে চায় উকিল, পুলিশ অফিসার, কিংবা বড় বড় সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। কিন্তু যে মানুষটা এসব বড় বড় স্বপ্ন থেকে বেড়িয়ে এসে মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন তিনিই শিক্ষক। এক মহান ব্রত নিয়ে দিনভর পরিশ্রম করে জাতিকে উপহার দিচ্ছেন এমন হাজারো ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পুলিশ অফিসার, উকিল আর সরকারি কর্মকর্তা।

&dquote;&dquote;

বলা হয়ে থাকে শিক্ষাই একটি জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষার মূল লক্ষ্য ভালো মানুষ তৈরি করা। আর অক্লান্ত পরিশ্রম করে শিক্ষকই পারেন সুন্দর সমাজ গঠনে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিতে। যে শিক্ষকদের সঠিক দিক নির্দেশনায় শিক্ষার্থীরা সাফল্যের চূঁড়ায় পদার্পণ করে তিনিই তো আদর্শ শিক্ষক। আর শিক্ষক একজন আদর্শ ব্যক্তিত্ব পাশাপাশি তিনি বিদ্যালয়ের ও সমাজের নেতাও।

&dquote;&dquote;

এমনই একজন আদর্শ শিক্ষক বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার মো. আবু হোরায়রা। তার বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক এবং মা গৃহিণী। পরিবারে দশ ভাইবোনের মধ্যে সপ্তম তিনি। কারমাইকেল কলেজ থেকে অর্থনীতি বিভাগে স্নাতক ও দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন।

&dquote;&dquote;

১৯৯৪ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন রৌমারী উপজেলার প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রৌমারী সি.জি জামান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। শিক্ষকতা জীবনে আদর্শবান ও ন্যায়নিষ্ঠতার কারণে মাত্র সাত বছর পরেই তাকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি বিদ্যালয়কে মডেল বিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন ।

বর্তমানে দুই হাজার তিনশত শিক্ষার্থী বিদ্যালয়টিতে অধ্যয়ন করছে। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি জরাজীর্ণ অবস্থা থেকে উপজেলার সেরা উচ্চ বিদ্যালয় হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। শুধু নিজ উপজেলায় নয় কুড়িগ্রাম জেলায় তিনবার জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ের খ্যাতি অর্জন করেছে বিদ্যালয়টি। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি তিনবার জেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষকের মর্যাদাও লাভ করেন।

সময়ের সাথে সাথে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সমৃদ্ধ আইসিটি ল্যাব, আইসিটি লার্নিং সেন্টার, বিজ্ঞানাগার ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিদ্যালয়টিতে। পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধূলার জন্য রয়েছে বিশাল খেলার মাঠ। সুন্দর বাচনভঙ্গি, দূরদর্শীতা, সুনির্দিষ্ট বিষয়ে জ্ঞানের গভীরতা, কৌশলী, পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ, আদর্শবোধ, জ্ঞানপিপাসু হওয়ার পাশাপাশি তিনি শিক্ষার্থীদের ভালো বন্ধু।

শিক্ষকতাকে ভালবাসেন বলেই যথাযথভাবে বিদ্যালয়ের শিখন-শিক্ষণ কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করতে সক্ষম হয়েছেন। এছাড়া সি.জি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকারী অনেক শিক্ষার্থী প্রতিবছর দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে ভর্তি হচ্ছে। নিজেদের উচ্চশিক্ষিত করে তারা অনেক বড় বড় পর্যায়ে চাকুরী করছেন। এছাড়া প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী বিসিএস পাশ করে দেশের বিভিন্ন উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত হচ্ছে।

বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সমাজেরও শিক্ষক। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের পাশাপাশি তিনি সমাজের উন্নয়নেও নিবেদিত প্রাণ। এগিয়ে এসেছেন সমাজের নানা উন্নয়নমূলক কাজে। নিজ বিদ্যালয়কে সুন্দরভাবে প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি রৌমারীতে গড়ে তুলেছেন আরও দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সর্বোপরি, নানা প্রতিকূলতার মাঝেও তিনি হাসিমুখে এগিয়ে চলছেন দূর্বার গতিতে।

বিডি২৪লাইভ/এমআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: