শিহাব হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৭:১৪ পিএম

কুমিল্লা চাঞ্চল্যকর শিমপুর রত্মবর্তী স্কুল ছাত্র মোঃ রাশেদুল ইসলাম শিহাব (৯) কে অপহরণ করে মুক্তিপণ না পেয়ে ২০১৩ সালের ২৫ জানুয়ারি হত্যা করে অপহরণকারীরা।

এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়। দায়ের হওয়া মামলায় নয়ন (২০) ও রবিন (২১), শিশু অপরাধ ফয়সাল (৯) ও হৃদয় (৯)কে আসামী করা হয়। ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন টাইব্যুনাল-১ আদালত নয়ন ও রবিন নামের দুই যুবককে মৃত্যুদণ্ড দেয়। একই অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭) নিহত শিহাবের সহপাঠী ২ শিশু অপরাধী ‘ফয়সাল’ ও ‘হৃদয়কে ১০ (দশ) বৎসরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন কুমিল্লা শিশু আদালতের বিচারক বেগম জেবুন্নেছা। যার শিশু মামলা নং-৪/১৫ইং।

সাজাপ্রাপ্তরা হলো নিহত শিহাবের সহপাঠী কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ছত্রখিল গ্রামের মনিঞ্জল মিয়ার ছেলে ফয়সাল আহমেদ ও একই উপজেলার রত্নাবর্তী গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে রবিউল হাসান হৃদয়, শিশু আইনে তাদের ১৪ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়।

কুমিল্লা জেলা পিপি কার্যালয়ের তথ্য সেবা কেন্দ্র সূত্রে ও মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হয়ে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলাধীন রত্নাবতী প্রাইমারী বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী শিশু মোঃ রাশেদুল ইসলাম শিহাব সহপাঠী বন্ধুদের সাথে রত্নাবতী প্রাইমারী স্কুলে পিকনিক অনুষ্ঠানে আসেন।

পরবর্তীতে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরষ্পর যোগসাজসে শিহাবকে অপহরণ করে মুঠোফোনে বাদীর নিকট থেকে ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) টাকা মুক্তিপণ দাবী করেন। মুক্তিপণের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করিলে গলায় চাদর পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে শিহাবকে খুন করে লাশ গুম করার জন্য সেফটি ট্যাংকের ভিতর লুকিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন অপহরণকারীরা। শিহাবকে প্রথমে ব্লেড দিয়ে গলায় ও বুকে পোচ মেরে এবং ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করে অপহরণকারীরা।

অনেক খোঁজাখুঁজির পর শিহাবকে না পেয়ে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার রত্নাবতী গ্রামের মৃত আলী মিয়ার ছেলে মৃত শিহাবের পিতা মোঃ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। অতঃপর মোবাইল ট্যাকিংয়ের মাধ্যমে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই মোঃ কামরুল ইসলাম খাঁন মামলার তদন্তপূর্বক একই উপজেলার ছত্রখিল গ্রামের মনিঞ্জল মিয়ার ছেলে ফয়সাল আহমেদ ও একই উপজেলার রত্নাবর্তী গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে রবিউল হাসান হৃদয় বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দন্ডবিধির ৩০২/২০১/৩৪ ধারার বিধান মতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করিয়াছে, মর্মে ২০১৩ সালের ৩১ আগস্ট বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন (যার নং-৬২৬)। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারে আসিলে রাষ্ট্রপক্ষে ১৮ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানী অন্তে রাষ্ট্রপক্ষে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শিশু আইন ২০১৩ এর ৩৩ (১) এর প্রথম শতাংশ ও ৩৪ (১) ধারার বিধান রবিউল হাসান হৃদয় ও ফয়সাল আহমেদ প্রত্যেককে ১০ (দশ)বৎসরের কারাদন্ড প্রদান করেন বিজ্ঞ আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন- অতিরিক্ত পি.পি এডভোকেট আবু তাহের এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট মাসুদ সালাউদ্দিন।

এদিকে কুমিল্লা জেলার সদর উপজেলার শিমপুরে স্কুলছাত্র সিহাব (৯) কে অপহরণ করে মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় নয়ন (২০) ও রবিন (২১) নামের দুই যুবককে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন টাইব্যুনাল-১ আদালত। ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: