রাজধানীর পানিতে ঝুঁকিপূর্ণ জীবন

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৪:১০ পিএম

সাইফুল ইসলাম,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট:
রাজধানীর ফুটপাতের চায়ের দোকানগুলোতে বিশুদ্ধ পানি বলে সাধারণ মানুষ যে পানি পান করে থাকে সেই পানি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আর তা বিশুদ্ধ না করেই ট্যাংকের পানি দিয়ে জমজমাট ব্যবসা করছে অসাধু এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা। যা সবার নিকট জারের পানি নামে পরিচিত। এ পানি পান করেই বিভিন্ন রোগে ভুগছে মানুষ। রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায় পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান যে পানি সরবরাহ করে, তা পান করা চরম ঝুঁকিপূর্ণ, এমনকি ফুটিয়ে, ফিল্টার করেও গন্ধমুক্ত পানের উপযোগী করা যায় না।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্লাস্টিকের বোতলে ট্যাংকের পানি ভরে বিশুদ্ধ পানি বলে বিক্রি করছে কিছু মানুষ। যা আসলে বিশুদ্ধ নয়। কমদামে বেশি পানির প্রলোভন দেখিয়ে চুটিয়ে ব্যবসা করছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা।

&dquote;&dquote;

প্রতি জার পানি দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা নিয়ে থাকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি গ্লাস পানি ১টা করে নিয়ে থাকেন। রাজধানীর কাওরান বাজার এলাকায় ওয়াসার পানি ব্যবহার করে অসন্তুষ্ট নগরবাসী। সেই সুযোগে বিশুদ্ধ ফিল্টার পানি বা স্বাস্থ্যকর পানি বলে বাজারে বোতলজাত বা জারজাত করে তা বিক্রি করছে বিভিন্ন কোম্পানি।

মগবাজার এলাকার দোকানদার আবুল হোসেন বলেন, জারের পানি আদৌ পরিশোধন করা হয় না। সরাসরি ওয়াসার সাপ্লাই করা পানিতে ফিটকিরি ও দুর্গন্ধ দূর করার ট্যাবলেট মিশিয়ে তা কন্টেইনারে ভরে বাজারজাত করা হয়। দূষিত পানি পান করার ফলে বেড়ে গেছে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ। হেপাটাইটিস, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, জন্ডিসের মতো মারাত্মক ব্যাধির উৎস দূষিত পানি। এ রকম দূষিত পানি দীর্ঘদিন পান করতে থাকলে আরো জটিল রোগ, এমনকি মরণব্যাধি ক্যান্সারও হতে পারে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

&dquote;&dquote;

রায়ের বাজার এলাকার জার পানি ব্যবসায়ী নিজের পরিচয় গোপন করার শর্তে তিনি বলেন, আগে আমি এই ব্যবসা করতাম না। এই কারখানা মোতালেব নামে এক ব্যাক্তির ছিলো। তার কাছে থেকে পানির ট্যাংকিটা কিনেছি। অন্য কোনো কাজ পাই নাই তাই জেনে শুনেই এই ব্যবসা করছি। আমাদের কাজের সুযোগ দিলে আমরাও এ ব্যবসা করতাম না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পানি পান করার ফলে ডায়রিয়া-কলেরার সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাছাড়া এসব পানি পান করার কারণেই নগরীর সাধারণ মানুষও শিল্পাঞ্চলের শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে জণ্ডিসের হার বেড়েছে। গরমে মানুষের শরীরে পানির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তারা হাতের নাগালে যে পানি পায় সেটাই পান করে যা একেবারেই নিরাপদ নয়।

বিএসটিআই ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জারে পানি ভর্তি করে বিক্রি করতে হলে প্রথমত বিএসটিআই’র অনুমোদন থাকতে হবে। তাদের সুস্বাস্থ্যের সনদ থাকতে হবে। লেবেলে উৎপাদন ও মেয়াদোর্ত্তীনের তারিখ উল্লেখ করতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানকেই এসব নিয়ম মানতে দেখা যায় না।

বিডি২৪লাইভ/এসআই/এএইচআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: