২৮ শিশুর মৃত্যু: বরখাস্তের পরও কিভাবে চাকরিতে?

রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণে ঔষধ প্রশাসনের বরখাস্তকৃত এক কর্মকর্তা কিভাবে চাকরিতে আছেন তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

এক সপ্তাহের মধ্যে ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালককে এর ব্যাখ্যা দিতে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো.আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আবেদনের পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণে ঔষধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে আদালতের জিজ্ঞাসার পর বরখাস্ত করা হয়েছিলো।

এর মধ্যে এক কর্মকর্তা ওষুধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম তথ্য গোপন করে বরখাস্তের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল-১ আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন। এর মধ্যে তিনি কাজও শুরু করেন।

মনজিল মোরসেদ বলেন, বিষয়টি জানার পর আদালতে আবেদন করলে মঙ্গলবার হাইকোর্ট তার কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ট্রাইব্যুনালের আদেশ স্থগিত করেছেন। এছাড়া সাসপেনশনের পর কিভাবে সে চাকরি করছে এক সপ্তাহের মধ্যে ডিজিকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। পরবর্তী আদেশের জন্য ২৬ অক্টোবর দিন ধার‌্য করেছেন আদালত।

২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে সারাদেশে অনেক শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার বিচার শেষে গত বছরের ২৮ নভেম্বর পাঁচজনকে খালাস দেন বিচারিক আদালত।

ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেছিলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর মামলাটি করার ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের ড্রাগ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে প্রেরণ এবং রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসামিদের দেওয়া হয়নি।

এ ক্ষেত্রে ড্রাগ আইনের ২৩, ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তৎকালীন ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এ দিকে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে পরে হাইকোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে ০৯ মার্চ।

মনজিল মোরসেদ বলেন, রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের রায়ে ঔষধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে অবহেলার বিষয়টি উঠে আসার পর তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এরপর স্বাস্থ্য সচিবের একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়। যাতে বলা হয়-ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। অথচ আদালত জানতে চেয়েছিলো কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা না নেওয়ায় ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য সচিবকে ২৩ আগস্ট তলব করেন হাইকোর্ট। পরে ২৪ আগস্ট সচিব আদালতকে জানান দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ/এএইচআর