খুব সহজে যেভাবে পাবেন ভারতের ভ্রমণ ভিসা

প্রকাশিত: ০৮ নভেম্বর ২০১৭, ০৫:১৩ পিএম

নিউজ ডেস্ক: একটু সস্তায় বিদেশ ভ্রমণ বলতে আমরা ভারত ভ্রমণকেই বুঝি। ভারতে ভ্রমণ যতটা সস্ত এবং ভিসা পাওয়া যতটা সহজ অন্য দেশের জন্য তা অতটা সহজ নয়। এছাড়া ভারতে রয়েছে আমাদের দেশের অসংখ্য মানুষের আত্মীয়-স্বজন। তাই আমাদের ভারতের সাথে সম্পর্কটাও অত্যন্ত গভীর। আর ভারত সর্বদাই বাংলাদেশের জনগণের জন্য চেষ্টা করে যতটা সম্ভব ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার। এবারে আসুন কিভাবে খুব সহজেই ভারতে ভ্রমণের জন্য ভিসা পেতে পারেন:

মনস্তাত্ত্বিক প্রক্রিয়া: প্রথমে আপনি মনকে ঠিক করুন ভারত কি করতে যাবেন ? কেন যাবেন ? কোথায় কোথায় যাবেন। মনস্তাত্ত্বিক আরেকটি বিষয় হল আপনি ভাবছেন “আমি তো জানিনা কিভাবে ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। দালাল ধরি। যদি এরকম ভাবনার লোক হন তাহলে লেখাটি আপনার জন্য নয়। এই লেখাটি তার জন্যই যে বিষয়টিকে সহজভাবে নিবে এবং ভাববে আমি ঘুরতে যাব আমার ভিসা দরকার।

আবেদন প্রক্রিয়া: আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে ভিসা সংগ্রহ পুরো কাজটিই আপনি খুব সহজেই করতে পারবেন। কোন প্রকার দালাল ছাড়া। নিজেকে দূর্বল ভাবার কিছু নেই। আপনি যদি কম্পিউটারে ইন্টারনেট পরিচালনায় সামান্যতম জ্ঞান থাকে তাহলে আবেদন ফরমটি নিজেই অনলাইনে করতে পারবেন। আবেদন ফরম পূরণের পূর্বে আপনি দেখে নিন যে আপনার কাছে নিন্মোক্ত কাগজপত্র/ডকুমেন্ট আছে কিনা?

ক) জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন কার্ডের ফটোকপি।
খ) বিদুৎ/গ্যাস/পানি/টেলিফোন বিলের ফটোকপি।
গ) ব্যাংক স্টেটমেন্ট/ডলার এর্ন্ডোর্সমেন্ট সার্টিফিকেটের ফটোকপি।
ঘ) প্রত্যয়ন পত্র ব্যক্তিগত/প্রাতিষ্ঠানিক।
ঙ) অপ্রাপ্ত বয়স্ক/শিশুদের ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের প্রাপ্ত ভিসার ফটোকপি অথবা জমা স্লিপের ফটোকপি/ GO (Government Order) সরকারী চাকরী হলে।
চ) ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি (ব্যবসায়ি হলে)।
ছ) সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনাপত্তিপত্র/NOC (পেশা চাকুরীজীবী হলে)।
জ) জমির খতিয়ান এর ফটোকপি (পেশা কৃষি হলে)।
ঝ) স্কুল আইডি কার্ড/বেতন জমার রশিদ (পেশা স্টুডেন্ট হলে)।
ঞ) পাসপোর্টের ফটোকপি।
ট) পুরনো পার্সপোর্ট হারিয়ে গেলে Loss Certificate সাথে সাধারণ ডায়েরি।

বর্তমান পাসপোর্ট এর সাথে সকল পুরাতন পাসপোর্ট সংযুক্ত করতে হবে এবং পুরাতন পাসপোর্ট এর সাথে নতুন পাসপোর্ট এর তথ্যের সামঞ্জস্যতা থাকতে হবে। এছাড়া সমস্ত কাগজপত্র অবশ্যই সুস্পস্ট বা পঠনযোগ্য হতে হবে। ফরমের সাথে ১কপি রঙ্গিন ২x২ ছবি সংযুক্ত থাকবে। সাথে ব্যাংক স্টেটমেন্ট/ডলার এন্ডোসমেন্ট সার্টিফিকেট/নাগরিক সনদ/NOC/যে কোন বিলের মূলকপি জমা দিতে হবে। যা পার্সপোর্ট নেয়ার সময় আপনাকে ফেরত দিবে।

এবারে চলুন আবেদনপত্র পূরণ করবেন যেভাবে। আবেদন পত্র পুরণের জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন । এখান থেকে ধাপে ধাপে সঠিক তথ্য পূরণ করতে করতে সামনে এগিয়ে যান। ভিসা ফি আবেদন পত্র জমার দেয়ার পূর্বেই আপনি অনলাইনে পরিশোধ করতে পারেন। আপনি বিকাশ, যে কোন কার্ড, রকেটের মাধ্যমে পেমেন্ট দিতে পারেন। এজন্য এই লিংকে ক্লিক করে সঠিত তথ্য পূরণ করে পেমেন্ট করুন। আবেদন পত্র পূরণ হয়ে গেলে আপনি সেটি প্রিন্ট করে ১ কপি রঙ্গিন ২x২ ছবি ফরমের উপরে ডান দিকে নির্দিষ্ট স্থানে আঠা সংযুক্ত করুন। উপরে বর্ণিত সিরিয়াল অনুযায়ী আপনাকে কাগজপত্র সাজাতে হবে। এছাড়া মূলকপিগুলো পাসপোর্টের পিছনে পিন করে লাগিয়ে দিতে হবে।

কোথায় জমা দিবেন: বাংলাদেশে ১২টি ভারতীয় ভিসা আবেদনপত্র কেন্দ্র (আইভ্যাক – Indian Visa Application Center (IVAC)।

গুলশান (ঢাকা), মতিঝিল (ঢাকা), মিরপুর রোড (ঢাকা), উত্তরা (ঢাকা), যশোর, খুলনা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও রংপুর ।

ভারতীয় ভিসা আবেদন অফিস শ্যামলীতে : ভারতীয় ভিসা আবদেন কেন্দ্রের নতুন ঠিকানা হল- শ্যামলী সিনেমা হলের বিপরীতে আলামিন আপন হাইটস (২য় তলা), শ্যামলী, মিরপুর রোড, ঢাকা-১২০৭। ভ্রমণ ভিসা আবেদনকারীরা আগাম অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই মিরপুর রোডের আইভিএসি-তে সরাসরি তাদের ভিসা আবেদন জমা দিতে পারবেন। ভ্রমণের নিশ্চিত টিকেট জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আবেদন জমা নেওয়া হয়।

আশা করছি আপনার ভিসার জন্য আবেদন প্রক্রিয়ায় আর কোন সমস্যা রইলো না। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টস বক্সে প্রশ্ন করুন সাধ্য মত উত্তর দেয়ার চেষ্টা করা হবে।

ভিসা পেলে: আপনি ভিসা পান বা না পান পাসপোর্ট কালেক্ট করতে হবে আপনাকে যেখানে জমা দিয়েছেন সেখান থেকেই। ক’দিন আগে ভারতে আসা যাওয়ার নিয়ম সহজ করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ভারতীয় হাই কমিশন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়. “২৪টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, এবং হরিদাসপুর ও গেদের সমন্বিত চেকপোস্ট (আইসিপি) দিয়ে যাতায়াতকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসায় প্রবেশ/প্রস্থান নিষেধাজ্ঞা অপসারণ করা হয়েছে।” হরিদাসপুর মানে হলো আমাদের যশোরের বেনোপোল বর্ডার। আর গেদে হলো আমাদের কুষ্টিয়ার দর্শনা বর্ডার। হরিদাসপুর দিয়ে বাসে যেতে পারবেন আর গেদে দিয়ে ট্রেনে। যদি অন্য কোন স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যেতে চান তাহলে সেই বর্ডারের ভিসা করতে হবে।

বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তে স্থলবন্দর আছে ৩২টি। নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে এর মধ্যে যে কোনো একটি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাওয়া-আসার ভিসা থাকলে তিনি ভারতের যে কোনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, হরিদাসপুর বা গেদে স্থলবন্দর দিয়েও যাওয়া আসা করতে পারবেন, সে জন্য আলাদা করে অনুমতি নিতে হবে না।

ভারতের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরগুলোর মধ্যে রয়েছে আহমেদাবাদ, আমৌসি (লখনৌ), বেনারস, ব্যাঙ্গালোর, কালিকট, চেন্নাই, কোচিন, কোয়েম্বাতোর, ডাবোলিম (গোয়া), দিল্লি, গয়া, গুয়াহাটি, হায়দ্রাবাদ, জয়পুর, কলকাতা, ব্যাঙ্গালোর, মুম্বাই, নাগপুর, পুনে, অমৃতসর, ত্রিচি, ত্রিবান্দ্রম, বাগডোগরা ও চন্ডিগড়।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: