পেটে গজ রেখে অপারেশন: ডাক্তারকে পুলিশের হাতে সোপর্দ

প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৩:৩৩ পিএম

পেটে গজ রেখে অপারেশনকারী ভুয়া ডাক্তার রাজন দাসকে (অর্জুন চক্রবর্তী) কে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছেন হাইকোর্ট। ক্ষতিগ্রস্থ নারী মাকসুদা বেগমের ক্ষতিপূরণ বিষয়ে আদেশের জন্য বুধবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। আদালতের আদেশের পরেই শহবাগ থানার পুলিশ (অর্জুন চক্রবর্তী) কে তাকে আটক করে নিয়ে যান। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

ভুয়া ডাক্তার (অর্জুন চক্রবর্তী) ক্লিনিকের নার্স, পটুয়াখালীর বাউফলের নিরাময় ক্লিনিকের মালিকসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশও দিয়েছেন আদালত। সকালে হাইকোর্টে এসে আত্মসমর্পণ করেন এই ভুয়া ডাক্তার।

পরে আদালত থেকে বেরিয়ে মাকসুদা বেগমের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, শাহবাগ থানার পুলিশ ভুয়া ডাক্তারকে আটক করে নিয়ে গেছেন। মামলা করতে হাইকোর্টের ডেপুটি রেজিষ্ট্রার আকতারুজ্জামানকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গত ৬ নভেম্বর ওই ডাক্তারের সার্টিফিকেট ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন হাইকোর্ট। এর আগে আদালতে পটুয়াখালীর সিভিল সার্জনের পক্ষে দাখিল করা প্রতিবেদনে ডাক্তার নামধারী রাজন দাসের সার্টিফিকেট ভুয়া প্রমাণিত হয়।

গত ২৩ জুলাই পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ও বরিশাল মেডিকেলের গাইনি বিভাগের প্রধানসহ তিনজনকে তলব করেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া পটুয়াখালীর বাউফলের নিরাময় ক্লিনিকের মালিককে হাজির হতে বলা হয়।

গত ২২ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে ‘সাড়ে তিন মাস পর পেট থেকে বের হল গজ!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি হাইকোর্টে নজরে আনেন আইনজীবী মো.শহিদ উল্লা। পরে আদালত এ ব্যাপারে রুল জারী করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়,‘অস্ত্রোপচারের সাড়ে তিন মাস পর বরিশালে মাকসুদা বেগম নামের এক নারীর পেট থেকে গজ বের করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, দীর্ঘদিন পেটের ভেতর গজ থাকায় খাদ্যনালীতে অনেকগুলো ছিদ্র হয়ে গেছে।

মাকসুদা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। মাকসুদা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বিলবিলাস গ্রামের মো.রাসেল সরদারের স্ত্রী। গত মার্চে অস্ত্রোপচার করে মাকসুদা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তখন তার পেটে গজ রেখে সেলাই করে দেন এই চিকিৎসক।’

জানা যায়, ‘গত মার্চে সন্তান প্রসবের জন্য মাকসুদাকে বাউফলের নিরাময় ক্লিনিকে নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচার করে মাকসুদার একটি মেয়ে সন্তান হয়। কয়েক দিন ক্লিনিকে থাকার পর তারা বাড়ি ফেরেন। এক মাস পর মাকসুদার পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করায় আবারো ওই ক্লিনিকে যান। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওষুধ দিয়ে ব্যথা কমানোর চেষ্টা করেন। দুই মাস পর খিঁচুনি দিয়ে জ্বর ওঠে। তখন খাওয়া-দাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। গত জুনে বরিশাল মেডিক্যালের বহির্বিভাগে দেখানো হয়। তখন আলট্রা-সনোগ্রাফিতেও কিছু ধরা পড়ে না। এরপর পটুয়াখালীতে এক চিকিৎসককে দেখানোর পর তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। ১২ জুলাই হাসপাতালে মাকসুদার অস্ত্রোপচার হয়। তখন তার পেটের ভেতর থেকে গজ বের করা হয়।’


বিডি২৪লাইভ/এএইচআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: