‘বিএনপি-জামায়াত মাইনরিটি ইনফিওরিটি কমপ্লেক্স ভুগছে’

প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৩:৫৫ পিএম

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মাঝে মধ্যেই হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা হয়। আগে যেগুলো হয়েছে সেগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু সবাই একটা কথা মনে রাখবেন, এ বছর এবং সামনের বছর যা হবে সেগুলো কিন্তু রাজনৈতিক কারণে হবে। কারণ সামনে নির্বাচন। একটি মহল (বিএনপি-জামায়াত) মনে করছে, এ ধরনের কাণ্ড ঘটিয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণিত করে ভারতের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করা যাবে। তাই হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে এ ধরনের হামলা আরো হবে। কিন্তু কেউই পার পাবেন না। সে যে দলেরই হোক না কেন। যারা ইন্দো-বাংলা সম্পর্ক নষ্ট করতে চাইছে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। যারা সাম্প্রদায়িক শক্তির পৃষ্ঠপোষক তারা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, কারোই বন্ধু হতে পারে না।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে রামকৃষ্ণ মিশনে প্রস্তাবিত বিবেকানন্দ ভবনের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। উল্লেখ্য, ভবনটি ভারতের অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত) মাইনরিটি ইনফিওরিটি কমপ্লেক্স ভুগছে। তাই এ ধরনের কাজ করছে। এরা দুর্বৃত্ত। এরা সন্ত্রাসী। আমরা নাসিরনগরে হামলার বিচারকাজ শুরু করেছি। বাকিগুলোরও হবে। হিন্দুরা নিজেদের দুর্বল ভাবেন। উইকনেস ইজ ডেথ। আপনাদেরও সমান অধিকার। আঘাত করলে আপনারাও পাল্টা আঘাত করেন। মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ান। সামনে নির্বাচন। তারা (বিএনপি-জামায়াত) আবারো ভায়োলেন্স করবে। তারা এখন মুখোশ পড়েছে। মায়া কান্না কাঁদছে।

বিএনপির নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৯৬ সালে নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ যখন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার কথা বলেছিল। তখন বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, পাগল ও শিশু ছাড়া কেউই নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ প্রসঙ্গে আরো বলেন, এখন কি শুনি মন্থরার মুখে।

সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলেছেন ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন করতে দেয়া যাবে না। কিন্তু শেখ হাসিনা ওই সময় তাকে (খালেদা জিয়া) ডেকেছিলেন। তিনি আসেননি। উল্টা টেলিফোনে খারাপ ব্যবহার করেছিলেন। নির্বাচনের ট্রেন তো আর কারো জন্য থেমে থাকবে না।

কাদের বলেন, আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ীই হবে। নির্বাচন কমিশনকে সকল ক্ষমতা দিয়ে শেখ হাসিনার সরকার সে সময় সহায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করবে। রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। এ ব্যবস্থাতেই নির্বাচন হবে। এ মুহুর্তে এটাই শেষ কথা। অন্য কোন দুঃস্বপ্ন দেখে এখন আর লাভ নেই। নির্বাচনে কে আসল, আর কে আসল না, এ দায় আওয়ামী লীগের না। আপনারা (বিএনপি) আসলে আসেন, না আসলে নাই। যদি মনে করেন এর ব্যত্যয় ঘটবে, তাহলে ইউ আর লিভিং ইন ফুলস প্যারাডাইস।

মন্ত্রী বলেন, আপনারা (বিএনপি) সংসদে আজ নেই বলে চেয়ার ছোড়াছুড়ি, গালমন্দ, বয়কট হয় না। আপনারা না এলে গণতন্ত্র চলার পথে কোন বাধা হবে না। উল্লেখ্য, বিবেকানন্দ ভবনটি ভারতের অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারত সরকার এ ভবন নির্মাণে এগিয়ে আসাতে তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু আপনারা (রামকৃষ্ণ মন্দির কর্তৃপক্ষ) শেখ হাসিনার সরকারের কাছে এই ভবন নির্মাণে সাহায্য চাইলে উনি তো আপনাদের ফিরিয়ে দিতেন না। আপনাদের তাহলে মাত্র ৬ কোটি টাকার জন্য আর ভারতের কাছে হাত পাততে হতো না।

বক্তব্য প্রদানের আগে মন্ত্রী বিবেকানন্দ ভবনের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, বর্তমানে ইন্দো-বাংলা সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় চলছে। আর ভারত বাংলাদেশের সব ধরনের উন্নয়নে সবসময় পাশে থাকবে। ভারত বাংলাদেশে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ভারতের অর্থায়নে ২০১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ১১০০ কোটি টাকার ৬৫টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। ভারত বাংলাদেশেরর উন্নয়ন খাতে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। যা অন্য যেকোনো দেশের চাইতে অনেক বেশি। এ অবদান বাংলাদেশের সাথে ভারতের বন্ধুত্বের ভিত আরো দৃঢ় করবে বলে আমি মনে করি। ৭১ সালে ভারতীয় সেনা এবং বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধারা কাঁধে কাধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিল। নিজেদের রক্ত দিয়ে এদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিল।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ইন্দো-বাংলা সবসময়ই দারুণ বন্ধুত্বের সম্পর্ক বহন করে এবং ভবিষ্যতেও করবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রামকৃষ্ণ মিশন কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি বিচারপতি শ্রীগৌরগোপাল সাহা। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ৬ আসনের সাংসদ কাজী ফিরোজ রশিদ, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ।

পাশাপাশি সেখানে সরকারি নিবন্ধনপ্রাপ্ত ত্রৈমাসিক পত্রিকা প্রবোধন'র উদ্বোধন করেন কাজী ফিরোজ রশিদ। এছাড়া ২০০ কেভিএ বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন ডিপিডিসির প্রধান প্রকৌশলী সারোয়ার কায়ানাত মো: নুর।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: