নিরাপত্তা কর্মীদের হয়রানির শিকার হচ্ছে পার্কের দর্শনার্থীরা

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৬:০৬ পিএম

ইট আর কংক্রিটের এই শহরে কিছুক্ষন নির্মল বাতাসে হেঁটে ঘুরে বেড়ানোর মত জায়গা নেই বললেই চলে। যার কারণে বিকেল হলেই আড্ডায় বসা হয় এলাকার কোন এক চায়ের দোকান কিংবা কোন ফাস্ট ফুড অথবা কোন শপিং মলের কফি হাউসে।

রাজধানীতে হাতে গোনা কিছু পার্ক বা খোলা জায়গা থাকলেও পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধবের সাথে ঘুরে বেড়ানোর তেমন পরিবেশ নেই বললেই চলে। একসময় মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তের চমৎকার চিত্তবিনোদন কেন্দ্র হিসেবে ব্যাপক পরিচিত ছিল এই পার্ক গুলোর। যেখানে মন্ত্রীপাড়ার অভিজাত শ্রেণীর লোকজন বৈকালিক ভ্রমণের জন্য পার্কের ফুটওয়ে ব্যবহার করতেন। কিন্তু দিন দিন সেই চিরোচেনা রুপ যেন হারাতে বসছে। পার্কগুলোতে এখন মাদক, ছিনতাই আর কিছু অসাধু নিরাপত্তা কর্মীদের দৌরাত্তে বেহাল দশায় পড়ছে প্রিয় এই শহরের প্রকৃতি প্রেমী মানুষগুলো।

সোহরাওয়ার্দী ও রমনা পার্ক বলা চলে রাজধানীর বড় বড় উদ্যানগুলোর দুটি। আরো আছে ওসমানী ও চন্দ্রিমা উদ্যান। অবসর সময় কাটানোর জন্য বা নাগরিক জীবনের কোলাহল থেকে দূরে সরে কিছুক্ষন প্রকিতির কাছাকাছি থাকার এই জায়গা গুলো ক্রমশই পরিণত হচ্ছে আতঙ্কের জায়গায়। ছিনতাইকারী, নিরাপত্তা কর্মীদের অত্যাচারে নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন এসব জায়গা বেড়াতে আসা মানুষজন।

পার্কে ঘুরতে আসা শরিফুল ইসলাম নামের এক কলেজ ছাত্র বলেন, কিছুদিন আগে সে তার বান্ধবীকে নিয়ে রমনা পার্কে এসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। কিছুক্ষন পর একজন নিরাপত্তা কর্মী এসে তাদের নানা প্রশ্ন করা শুরু করেন এবং ভিন্ন কায়দায় তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তরের হুমকি দেন। পরবর্তীতে কিছু টাকা দিলে শান্ত হন ঐ নিরাপত্তা কর্মী।’

তিনি আরো জানান, এখানে ঘুরতে আসা অনেক প্রেমিক-প্রেমিকাকেও নানা ভাবে হেনস্তা করে এবং টাকা হাতিয়ে নেন। শুধু তাই নয় অনেক সময় নিরাপত্তা কর্মীদের সহায়তায় চলে ছিনতাই।’ শুধু শরিফুল ইসলাম নয় এমন একাধিক যুবক-যুবতি অভিযোগ তুলেছেন নিরাপত্তা কর্মীদের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেখা যায় আগের তুলনায় বেশ সাচ্ছন্দে চলাফেরা করছে সাধারণ মানুষ। কেননা কিছুদিন একটি ছিনতাইয়ের ঘটনার পর বেশ নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। যার ফলে অনেক দিন ধরেই বেশ নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে এই জায়গায়।

এ বিষয়ে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রাহমান বিডি২৪লাইভকে বলেন, আগে কি হয়েছে না হয়েছে আমি জানিনা। বর্তমানে গিয়ে দেখেন পরিবেশ অনেক চেঞ্জ। এখন নিরাপত্তার স্বার্থে রাতের বেলা রমনা বা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা কাউকে বসতে দেইনা। তাছাড়াও নিরাপত্তা ও অনেক জোরদার করা হয়েছে।

নগরীর সোহরাওয়ার্দী, চন্দ্রিমা, রমনা ও ওসমানী পার্কের মতো বড় বড় উদ্যান দেখাশোনার দায়িত্ব গণপূর্ত অধিদফতরের আওতাধীন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের থাকলেও গণপূর্ত অধিদফতরের অবহেলা ও নজরদারির অভাবসহ নানাবিধ কারণে নগরীর পার্কগুলো তার চিরোচেনা ঐতিহ্য হারিয়ে ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়েছে।

 

বিডি২৪লাইভ/এমআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: