কালের সাক্ষী ৪শ বছরের পুরনো লোহাগড় মঠ 

প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৭:০০ এএম

চাঁদপরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার উত্তরে ঐতিহ্যবাহী জমিদার গ্রাম লোহাগড়। এ গ্রামে জমিদারদের নির্মিত ৪শ বছরের পুরানো লোহাগড় মঠ কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জমিদারদের নির্মিত লোহাগড় মঠ মনে করিয়ে দেয় অত্যাচারী জমিদার লোহা ও গহড়য়ের কথা। কিন্তু আজ কালের আবর্তে সংস্কার ও সংরক্ষনের অভাবে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এ লোহাগড় মঠ। এদিকে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডলের উদ্যোগে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী লোহাগড় মঠের চারপাশে কাটা তার দিয়ে বাউন্ডারিসহ ভ্রমনপ্রেমীদের জন্য গভীর নলকুপসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এইচ, এম মাহফুজুর রহমান।  

স্থানীয়রা জানান তাদের পুর্ব পুরুষদের কাছ থেকে জানা, ফরিদগঞ্জের প্রতাপশালী দুই জমিদার লোহা ও গহড় । এই দুই সহদর জমিদার লোহা ও গহড়ের নামনুসারে গ্রামটির নামকরন করা হয় লোহাগড়। লোহাগড় গ্রামে ডাকাতিয়া নদীর তীরে জমিদারবাড়ি অবস্থানের নির্দেশিকা হিসেবে লোহা ও গহড় নির্মান করেছিলেন এ তিনটি মঠ। কথিত আছে লোহাগড়ে সুউচ্ছ মঠটি স্বর্ণখচিত। জমিদারদের প্রতাপ ও প্রতিপক্তির নিদর্শনস্বরুপ মঠের চুড়ায় স্বর্ণ দিয়ে অলংকৃত করা হয়েছিল। জমিদার প্রথা বিলুপ্তির পর ওই স্বর্ণদের লোভে অনেকে মঠের চুড়ায় উঠতে গিয়ে আহত হয়েছে। স্বর্ণদটি পরবর্তীকালে প্রাকৃতিক দুর্যোগে নদীতে পড়ে যায়। 

মঠের পাশের জমির মালিক স্থানীয় হাবিব হোসেন জানায়, এই ঐতিহ্যবাহী লোহাগড় গ্রামের জমিদার এবং তাদের নির্মিত ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় মঠগুলো দেখতে প্রতিদিন প্রায় ২/৩শত ভ্রমনপ্রেমীরা এখানে এসে ভিড় জমায়। এখানে মঠ কেন্দ্রীক পর্যটন কেন্দ্র হলে আমাদের জমি প্রয়োজনে পর্যটন কেন্দ্রের জন্য দিবো।   

স্থানীয় লোহাগড় গ্রামের উপজেলা যুবলীগ নেতা নুরে আলম মাসুদ জনায়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা সবুজে বেষ্টিতে লোহাগড় গ্রামে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী জমিদারদের মঠকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্র হলে এলাকাবাসী খুবই উপকৃত হবে। 
মাননীয় জেলা প্রসাশক মহাদয় কিছুদিন পুর্বে লোহাগড় মঠটি পরিদর্শন করেছেন। আমরা এলাকাবাসী প্রত্যাশা করছি, অতি দ্রুত এ এলাকায় মঠকে ঘিরে একটি পর্যটন কেন্দ্র করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন জেলা প্রসাশক মহাদয়।   

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শকিকুর রহমান জানান, লোহাগড়ের জমিদারদের নির্মিত ৪শ বছরের পুরানো মঠ দেখতে আসা ভ্রমনপ্রেমীদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না দিতে পারলেও এলাকাবাসী তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। প্রসাশন আমাদের সহযোগিতা করছে, আশা করি খুব দ্রুত জমিদারদের লোহাগড় মঠ পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই আমরা ভ্রমনপ্রেমীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো। 

এই বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এইচ, এম মাহফুজুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসক মহাদয় স্যারের উদ্যোগে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে লোহাগড় মঠের চারপাশে কাটা তার দিয়ে বাউন্ডারি দেওয়া হবে এবং ঐতিহ্যবাহী মঠ সংরক্ষণ ও ভ্রমনপ্রেমীদের জন্য গভীর নলকুপসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। লোহাগড় মঠের জেলা ব্যান্ডিংয়ে  ও ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান হিসেবে এর ভুমিকা থাকবে। 

বিডি২৪লাইভ/এস এ  


   

 

 

 

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: