হ্যালো মিনিস্টার, শিক্ষকদের কথা ভাবুন, তারাও মানুষ!

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮, ১০:১৬ এএম

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী দয়া করে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কথা একটু ভাবুন। তারাও মানুষ। তাদেরও পরিবার পরিজন আছে। তাদেরও খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসার দরকার রয়েছে। জাতি গড়ার কারিগররা আজ মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বেতন ছাড়া বিগত ১৫-১৬ বছর যাবত কি করে বেঁচে আছেন শিক্ষকরা। বর্তমানে নিত্য পণ্যের যে চড়া দাম তাতে অসহায় হয়ে পড়েছে নন এমপিও প্রাইমারী শিক্ষকরা।

ওইসব শিক্ষকদের স্ত্রী সন্তান রয়েছে। সরকার ও শিক্ষামন্ত্রীর তা বোঝা উচিত। শিক্ষামন্ত্রী বাধ্য হয়ে আপনাকে বলতে হচ্ছে, আপনি তো উচ্চ মানের খাবার খান, উচ্চ মানের বাড়িতে থাকেন, উচ্চ মানের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান, কিন্তু বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষরাও তো মানুষ। তাদের মতো শিক্ষকরাই তো আপনাদের মতো মানুষ তৈরি করেছে। আজ আপনি মন্ত্রী হয়েছেন, আজ আমাদের দেশ এতোই উন্নত যে চারদিকে ডিজিটালের ছোঁয়া কিন্তু এই ডিজিটাল এর মূলে যাদের অবদান তারা হলেন শিক্ষক মহোদয়গণ।

আমরা অনেকেই বলে থাকি, শিক্ষকরা হচ্ছে জাতি গড়ার কারিগর। কথাটি কি আসলেই সত্যি? আমি কেন জানি এ কথাটির সাথে একমত হতে পারছি না। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি শিক্ষকরা অবহেলিত। তাদের নুন আনতে পানতা ফুঁরায়। তারাই আজ অবহেলিত। তাহলে কি করে আমি বিশ্বাস করতে পারি শিক্ষকরা জাতি গড়ার কারিগর। যতি সত্যিই তাই হতেন তাহলে জাতি গড়ার কারিগরদেরে এ অবস্থা কেন? কেন তাদেরকে মূল্যায়ন করা হয় না।

হ্যাঁ মাননীয় মন্ত্রী আমি ব্যক্তিগতভাবে মানি শিক্ষকদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। তবে তা খুবই নগন্য। একজন প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক যে পরিশ্রম করে থাকেন সরকারের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তা করেন না। ছোট কোমলমতি শিশুদের এক স্থানে বসিয়ে রেখে তাদের পাঠদান করা কতটা কঠিন কাজ তা কেবল প্রাইমারী শিক্ষকরাই জানেন।

গ্রামের মা-বাবা বাচ্চাদের বয়স ৪ থেকে ৫ বছর হলেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেন। ভর্তির পরে অবিভাবকরা আর দায়িত্ব নিতে চান না। সেই শিশুদের ভালোবাসা দিয়ে লেখাপড়া শিখিয়ে প্রকৃত মানুষ রুপে গড়ে তোলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

মাননীয় শিক্ষা বিষয়ক মিনিস্টার আপনাকে বলছি, আপনার খুব পাশে থেকে আপনার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করে গড়ে তুলছে আলিশান বাড়ি, কিনছে দামি গাড়ি। আর আপনি যাদের দায়িত্ব নিয়ে বসে আছেন সেই শিক্ষকরা না খেয়ে মরছেন। দাবি আদায়ে তাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জার আর কি হতে পারে?

খোলা কলামে প্রকাশিত সব লেখা একান্তই লেখকের নিজস্ব মতামত। এর সাথে পত্রিকার কোন সম্পর্ক নেই।

লেখক: এম এম আশরাফুল আলম।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

 

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: