পরকীয়ার বাধা দুর করতে স্বামীকে হত্যা, মাথার খুলি উদ্ধার

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮, ০৯:২৭ পিএম

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার রায়া গ্রামের আবু সাইদ নিখোঁজের প্রায় তিন মাস পর জানা গেলো পরকীয়া প্রেমের বাধা দুর করতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মুলহোতা সহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ একটি ডোবা থেকে নিখোঁজ আবু সাইদের মাথা উদ্ধার করেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে পাবনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির পিপিএম জানান, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার আটিয়া পাড়ার মমতাজ আলী সাঁথিয়া থানায় একটি জিডি করেন। সেখানে উল্লেখ থাকে, তার ছেলে আবু সাঈদ গত ৩০ অক্টোবর’২০১৭ ইং তারিখ সন্ধ্যায় বেড়া সিএন্ডবি বাজারে যাবার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি।

সহকারি পুলিশ সুপার (বেড়া সার্কেল) আশিষ বিন হাসান জানান, জিডির বিষয়টি তিনি জানার পর তদন্তের অনুমতি পেয়ে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের সহায়তায় অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে পুলিশ প্রথমে রায়া গ্রামের মোস্তফার ছেলে রাজিবকে (২৪) গ্রেপ্তার করে। রাজিবের স্বীকারোক্তি ও অন্যান্য তথ্যসূত্রের আলোকেই মাষ্টারমাইন্ড উপজেলার মঙ্গলগ্রামের ফখরুল ও অপর হত্যাকারী শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রাজিব জানায়, মঙ্গলগ্রামের ফখরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে একটি মাদক মামলায় জেলে যায়। এই সুযোগে ফখরুলের স্ত্রী ইবরিয়া খাতুন আবু সাঈদের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ইবরিয়ার স্বামী ফখরুল জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ঘটনা জানার পর আবু সাঈদকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই এক পর্যায়ে ফখরুল, রাজিব ও শামীমসহ তাদের সহযোগীদের সাথে ২ লাখ টাকা চুক্তি করে আবু সাঈদকে হত্যা করতে। চুক্তি মোতাবেক রাজিব ৩০ অক্টোবর’২০১৭ তারিখে সন্ধ্যায় আবু সাঈদকে ডেকে নিয়ে যায় স্থানীয় রফিকুল ইসলামের ইউক্যালিপটাস বাগানে। সেখানে শামীমসহ তাদের অন্য সহযোগীরা আগেই ওই বাগানে অবস্থান করছিল। আসামীরা ওই বাগানে ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করে।

এরপর রাত আনুমানিক দশটার দিকে আসামী শামীমের নেতৃত্বে অন্য সহযোগীদের সহযোগিতায় আবু সাঈদের গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর দেহ থেকে মাথা আলাদা করে ফখরলকে দেখিয়ে একটি ডোবায় ফেলে দেয় এবং দেহ মাটি চাপা দিয়ে রাখে। গ্রেফতারকৃতদের তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকালে ফখরুলের বাড়ির পেছনে একটি ডোবা থেকে আবু সাঈদের মাথা উদ্ধার করা হয়। তবে গ্রেফতারকৃতদের দেখানো অনুযায়ী যেখানে তার দেহ মাটি চাপা দেওয়া হয়েছিল সেখান থেকে দেহ পাওয়া যায়নি। তবে তার ব্যবহৃত গেঞ্জিসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয় পুলিশ সুপার বিডি২৪লাইভেক বলেন, একটি জঙ্গলের ভেতরে দেহটি মাটি চাপা দেওয়া হয়েছিল। সেখানে শিয়ালের উপদ্রব রয়েছে ধারনা করা হচ্ছে শিয়াল অথবা কুকুর তা খেয়ে ফেলেছে।

পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির পিপিএম বিডি২৪লাইভেক জানান, মামলার আরও রহস্য উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে। এ ঘটনার সাথে আরও কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস, সহকারি পুলিশ সুপার (বেড়া সার্কেল) আশিষ বিন হাসান, সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার কর্মিরা উপস্থিত ছিলেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: