প্রধান শিক্ষকের প্রতারণায় পরীক্ষা দিতে পারেনি অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০১:২৯ পিএম

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারুফ আহমেদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে অর্ধশতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারেনি। বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে থানা ঘেরাও, পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে।
 
জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মারুফ আহমেদ তার বিদ্যালয় থেকে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ৫৩ শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করায়। তার মধ্যে রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৫ জন শিক্ষার্থী, এবং উথুরী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৮জন শিক্ষার্থী। উথুরী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম-দশম শ্রেণিতে পাঠদানের অনুমতি না থাকায় এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ইয়াসমিন সুলতানা পপিকে ছাত্র প্রতি মাত্র ৮ হাজার টাকার বিনিময়ে রৌহা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশন ও ফরম পূরণ করিয়ে দেওয়ার অফার দেয় ওই প্রধান শিক্ষক মারুফ আহমেদ।
 
মারুফ আহমেদের কথার ফাঁদে পড়ে উথুরী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৮ জন শিক্ষার্থী দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে রৌহা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পূরণ করে। রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৫ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম পূরণের নামে মারুফ আহমেদ আদায় করে আরো প্রায় দেড় লাখ টাকা। তার প্রতারণার শিকার হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা মারুফের বিচারের দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে থানা ঘেরাও করে। সকাল ১০টার দিকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ইসলামিয়া হাইস্কুল কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে। সরকারি কলেজ পরীক্ষা ভেন্যুর সামনে সড়ক অবরোধ করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত হয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত করে।
 
উথুরী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং উপজেলার উথুরী গ্রামের- মিম, জান্নাত, শামছুন্নাহার, স্বর্ণা, ধামাইল গ্রামের- সজিব, হাজেরা, ঝুমুর জানায়, প্রধান শিক্ষক ইয়াসমিন সুলতানা পপির মাধ্যমে রৌহা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করি। কিন্তু আমরা কেউ পরীক্ষার প্রবেশপত্র পাইনি। আমরা পরীক্ষা দিতে পারছি না।
 
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রতি বছরই মারুফ আহমেদ এই অপকর্মটা করে। দেখি এই সব শিক্ষার্থীদের জন্য কি করা যায়।
 
উথুরী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াসমিন সুলতানা পপির মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় ওনার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারুফ আহমেদের মোবাইল ফোন বন্ধ রাখায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। মারুফ উপজেলা জামায়াতের সদস্য বলে জানা গেছে।
 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. শামীম রহমান বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার  জন্য বলা হয়েছে।
 
উল্লেখ্য, গত ২০১১ সাল থেকে প্রতি বছর এসএসসি পরীক্ষার সময় জামায়াত নেতা রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারুফ আহমেদ এই রকম অপকর্ম করলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। সূত্র: ইত্তেফাক।
 
বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: