অভিযোগ অস্বীকার করলেন ফার্মার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০৮:৫৪ পিএম

ফার্মার্স ব্যাংকের নানা অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অস্বীকার করে এর সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দীন খান আলমগীর এমপি বলেছেন, গত তিন দিন ধরে ঢাকার তিনটি সংবাদপত্র ফার্মার্স ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান হিসাবে আমার বিরুদ্ধে অসত্য তথ্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে জাতির সামনে পেশ করেছে।

প্রথমে তারা বলেছেন, ফার্মার্স ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান হিসাবে আমরা গ্রাহকদের কাছ থেকে ঋণ বিতরণের আগে কমিশন নিয়েছি। এতো বড় অসত্য কথার সম্মুখীন আমার ৭৭ বছর বয়সের মধ্যে কখনও হইনি। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যাতে এসব তথ্য প্রকাশ না পায় সে বিষয়েও স্পিকাররের কাছে অনুশাসন চান তিনি।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে একথা বলেন তিনি। এসময় সংসদের সভাপতিত্বে ছিলেন, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

এসময় তিনি বলেন, আমি শিল্প ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলাম, বেসিক ব্যাংক ও শিল্প ঋণ সংস্থার সভাপতি ছিলাম, জেদ্দায় অবস্থিত ইসলামিক ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ছিলাম। আমার কার্যক্রম সম্পর্কে এ ধরনের কোনো উদাহরণ, এ ধরনের খোরাক কেউ কখনো ধাবিত করতে পারেনি।

তিনি বলেন, আমি এ অভিযোগের বিপরীতে ফার্মার্স ব্যাংকে রক্ষিত আমার ব্যাংক হিসাবে পুরো অংশ নিয়ে এসেছি। এ অংশের কোথাও কেউ এ কথার প্রমাণ করতে পারবেন না- কোনো ঋণ গ্রহীতার অর্থ আমার এখানে চলে এসেছে। এ প্রসঙ্গে বলা প্রয়োজন- যে প্রত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৭ জুলাই আমি ১৩ কোটি টাকা কোনো গ্রাহকের হিসাব থেকে আমার হিসাবে নিয়ে এসেছি। আমার হিসাব সংসদে উপস্থাপিত করতে চাই- ১৭ জুলাই থেকে পরবর্তী ৭/১০ দিনে এ ধরনের কোনো বক্তি হিসাবে রয়েছে বলে পরিদৃষ্ট হয় না। আমি মনে করি, এই ধরনের অপবাদ সমাজে একটি সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করার প্রতিকূল। এ প্রতিকূলতা বর্জন করে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির অনুরোধ জানান তিনি।

একই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন অনুমোদন বিহীন ভাবে ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, ফার্মার্স ব্যাংকে কোনো অনুমোদন বিহীন ভাবে কোনো ঋণ আমরা প্রক্রিয়াজাত করিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন পর্যবেক্ষক পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন, তারা বিষয়টি পর্যালোচনা করেছেন। এ ধরনের অনুমান ভিত্তিক প্রচারণা আর্থিক ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা রাখার প্রতিকূল। এক্ষেত্রে স্পিকারের প্রতিরক্ষণ কামনা করেন তিনি।

তিনি বলেন, অনুমোদনের বিপরীতে টাকার দেয়ার ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। ব্যাংকের ম্যানেজার বা অন্যদের নেই। অনুমোদনের বাইরে কোনো ঋণ দিয়ে থাকেন এটা তাদের দায়িত্ব। আমার জানা মতে এ ধরনের কোনো ঘটনা, আমি যতদিন পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলাম ততদিন ঘটেনি। কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ করেছি, তা যথাবিধি হয়নি-এ কথাও বলেছে পত্রিকাগুলো। আমরা সবক্ষেত্রে যথাযোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ করার চেষ্টা করেছি। যতগুলো বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে এরমধ্যে ফার্মার্স ব্যাংক সবচেয়ে বেশি মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসুরীদের নিয়োগ দিয়েছে।

আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে এ নিয়োগ দিয়েছি। যদি কেউ এটা মনে করেন ব্যাংকের স্বার্থ লঙ্ঘন করেছেন, আমি বলবো তারা সৎ কথা বলেননি।

এসময় সংসদে জানান, ওই তিনটি পত্রিকা জানিয়েছে তারা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এসব তথ্য পেয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ প্রণয়নে আমার কিঞ্চিত ভূমিকা রয়েছে। এই আইনের ৭৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ এসব এসব তথ্য বাইরে প্রকাশ করতে পারবেন না। এই ধারার আলোকে স্পিকারকে অনুরোধ করব আপনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে এব্যাপারে অনুশাসন দিবেন।

তিনি সংসদে দাবি করেন, তাদের ২১ বছর আন্দোলনের কারণেই খালেদা জিয়া আজ ক্ষমতার বাইরে। এজন্য খালেদা জিয়া জেলে। এজন্য তার বিরুদ্ধে এসব কথা লেখা হচ্ছে।

 

বিডি২৪লাইভ/এমআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: