‘আওয়ামী লীগই বেগম জিয়ার মুক্তি চাচ্ছে’

প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০৩:৫০ পিএম

দুর্নীতির দায়ে কারাগারে থাকা বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ‘ক্লিন ইমেজ’ নিয়েই জেল থেকে বেরিয়ে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা আন্দালিব রহমান পার্থ। রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক-শো অনুষ্ঠানে এসে এ আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমরা মোটেও শঙ্কিত নই। আমরা শক্ত পলিটিক্যাল জোট। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের নেত্রী বেরিয়ে আসবেন এবং ক্লিন ইমেজ নিয়েই বেরিয়ে আসবেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইনজাস্টিজটা হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের ওপর। ওয়ান ইলেভেনের পর নতুন প্রজন্ম থেকে শুরু করে জনগণ আশা করেছিল একটি গুনগত পরিবর্তন রাজনীতিতে দেখবে, রাজনীতিবিদরা শিখবে, এদেশ থেকে দুর্নীতি চলে যাবে, প্রতিহিংসার রাজনীতি কমে আসবে। কিন্তু সেটা আসলে বেড়েই গিয়েছে।’

খালেদা জিয়ার মামলাটির মেরিট নিয়ে প্রশ্ন তুলে পার্থ বলেন, ‘আমি নিজে একজন ব্যারিস্টার। মামলার মেরিট নিয়ে আধা ঘণ্টার টক শোতে কথা বলা উচিত না। আর এটা নিয়ে তাদেরই কথা বলা উচিত, যারা আইনজীবী। আমি এতটুকুই বলব, এই মামলায় এক শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ প্রভাব যদি থেকে থাকে সরকারের তাহলে এটা ন্যায়বিচার বহির্ভূত। কতখানি প্রভাব আছে সেটার দায়-দায়িত্ব আমি জনগণের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি। বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে এ মামলায় সরকারের কোনো প্রভব আছে কি না।’

তিনি বলেন, ‘দিস ইস দ্যা পলিটিক্যাল মামলা (এটি রাজনৈতিক মামলা)। এ রকম পলিটিক্যাল মামলা জয়ললিতা থেকে শুরু করে ভারতের ইন্ধিরা গান্ধী পর্যন্ত অনেকের নামে হয়েছে ইতিহাসে। আমি একটি কথা বলব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার মতো মাপের নেতাদেরকে কোনো নির্বাহী আদেশ বা আদালতের কলমের খোঁচা দিয়ে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা যায় না। ইতিহাস এ কথা বলে না।’

তিনি বলেন, ‘এগুলো মানুষ কখন করে, যখন পলিটিক্যাল কার্ডে কাজ হয় না। আওয়ামী লীগ ভাবছে রাজনৈতিকভাবে আমরা দেউলিয়া, কোনোরকম নির্বাচন হলেই চলে আসবে তারেক। আমরা নির্বাচনের কনফিডেন্স পাচ্ছি না। সুতরাং আমরা এমন একটা পরিবেশ তৈরি করবো যাতে জিয়া পরিবার নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে।’

পার্থ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন দেখছে উন্নয়ন তত্ত্ব দিয়ে হচ্ছে না। কারণ, এক হলো উন্নয়ন তত্ত্ব আরেক হলো ব্যাংক ডাকাতি, শেয়ার মার্কেট, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, এরকম দুর্নীতি, পেয়াজ খাইয়েছেন প্রায় দেড়শ' টাকা, আপেলের সমান। এই যে ব্যর্থতাগুলো...এখন আবার আওয়ামীলীগ এড করবে, দুর্নীতি। এনারা (জিয়া পরিবার) দুর্নীতিবাজ। এখানে কিন্তু আমি অবাক হবো না।’

কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আওয়ামী লীগ একসময় জাসদকে গালি দিয়েছে, এখন জাসদ তাদের এমপি-মন্ত্রী। এরশাদ সাহেবকে সারাজীবন দুর্নীতিবাজ বলেছে, অথচ এরশাদ ছাড়া কোনো সরকারই তারা গঠন করতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে এরশাদ সাহেবকে দিয়ে করেছে ঐক্যমতের সরকার, ২০০৮ সালে করেছে, আর এবার তো এরশাদ সাহেব অক্সিজেনের ভূমিকা পালন করছেন। এরশাদ ছাড়াতো সংসদই থাকতো না।’

তিনি বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম নিয়ে আওয়ামী লীগ কত কথা বলেছে, তারা নাকি কোরআন পুড়িয়েছে, আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘টিভি খুললেই বলতে দেখা যেত, তারা এই করেছে, সেই করেছে; কিন্তু দুই বছরের মাথায় দেখি তাদের সব নেতারা হেফাজতে ইসলামের কাছে ধরনা দেন। সুতরাং ওই দিনটাও দূরে নয়, হয়তো কালকে এমন একটা পরিস্থিতি এদেশে আসতে পারে, আওয়ামী লীগই বেগম জিয়ার মুক্তি চাচ্ছে।’

২০ দলীয় জোটের এ নেতা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করতে চাই দেশে আইনের শাসন আছে। কিন্তু আমরা যখন দেখি চিফ জাস্টিস দেশ থেকে পালিয়ে যান; আমরা যখন দেখি চিফ জাস্টিজের ডিসিশনের পর ভালো ভালো আইনজীবীরা কোর্টে দাঁড়িয়ে বলেন এটা একটি ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদকের লেখা জাজমেন্ট; আমরা যখন দেখি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জাজমেন্ট দেয়ার পর জজ সাহেব পালিয়ে যান; আমরা যখন দেখি মুখোমুখি সংসদে দাঁড়িয়ে জাজ সাহেবের বিরুদ্ধে কথা বলা হয়, জজ সাহেবেরা কি জানেন, তখন আমাদের একটু শঙ্কিত লাগে।’


বিডি২৪লাইভ/এএইচআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: