রাতভর অর্ধনগ্ন করে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতন

প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০৯:২৪ এএম

শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিংয়ের বিষয়টি মাঝে মধ্যেই শোনা যায়। কিন্তু এই র‌্যাগিং? কেন করা হয় এমনটি? র‌্যাগিংয়ের কারণে অনেক সময় দেখা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরিা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন, কেউ কেউ আবার পড়ালেখা বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে যান। এমন ঘটনা ইতিপূর্বেও বহু শোনা গিয়েছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোনো ভাবেই এটা রোধ করা যাচ্ছে না।

সম্প্রতি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিংয়ের নামে অর্ধনগ্ন করে রাতভর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পরিচিত হওয়ার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত তপোবন আবাসিক এলাকার একটি মেসে ডেকে নিয়ে অর্ধনগ্ন করে এ র‌্যাগিং এর ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে, এই র‌্যাগিংয়ের বিষয়টি প্রমাণিত হলে জড়িতদের কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি আরো জানান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের উপর জিরো টলারেন্স আরোপ করা আছে।

শাবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যাল সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী তপোবন আবাসিক এলাকার একটি মেসে রাত ১০ টা থেকে ভোর ৬ টা পর্যন্ত সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ৬ জন নবীন শিক্ষার্থীকে একই বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী পরিচয়ের নামে রাতভর অর্ধনগ্ন করে মানসিক ও শারীরিক নিযার্তন করে। এক পর্যায়ে সিনিয়রদের কথা মতো বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কার্যকলাপ না করলে তাদের অর্ধনগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

এক পর্যায়ে নবীন শিক্ষার্থীদের মারধর করেন সিনিয়ররা। র‌্যাগিংয়ের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে ফের মেসে ডেকে নিয়ে এ রকম করা হবে এবং পাশাপাশি শিক্ষাজীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেয় ওই সিনিয়ররা।

র‌্যাগিংয়ের শিকার ভুক্তভোগী কয়েকজন, মারধর ও অর্ধনগ্নতার শিকার হওয়ায় এখন প্রচন্ড রকমের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সিনিয়র শিক্ষার্থীদের হুমকির ভয়ে তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতেও আগ্রহী নয় তারা। এমনকি নিরাপত্তার ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর অভিযোগ পর্যন্ত দিতে পারছে না র‌্যাগিংয়ের শিকার ওই শিক্ষার্থীরা।

র‌্যাগিংয়ের শিকার ওই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে সিনিয়রদের এমন আচরণে ভেঙে পড়েছেন।

সূত্রে জানা গেছে, র‌্যাগিং এ জড়িতদের মধ্যে সিভিল এন্ড ইনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ১৯ জন এবং পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের একই বর্ষের ১ জন শিক্ষার্থী জড়িত। এদের মধ্যে ৬ জন শিক্ষার্থী মারমুখী ও হিংস্রাত্মক ভূমিকায় ছিলো বলে জানা যায়।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ জানান, শীঘ্রই শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

র‌্যাগিংয়ের বিষয়ে সিভিল এন্ড ইনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মুশতাক আহমেদ-এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি।

তিনি আরো বলেন, র‌্যাগিং এর বিষয়টি প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: