যে কোন মুহুর্তে ঢাকায় হতে পারে বড় দুর্যোগ!
রাজধানী ঢাকায় যে কোন মুহুর্তে বড় দুর্যোগের আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে ঢাকাকে ঘিরে উন্নয়ন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ভূমি দখল, অপরিকল্পিত আবাসন, বৃক্ষ কর্তন, যানবাহনের কালো ধোঁয়া প্রভৃতি কারণে এ অবস্থা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকায় উন্মুক্ত স্থানের স্বল্পতা রয়েছে। ঢাকার আয়তনের তুলনায় যে পরিমাণ উন্মুক্ত স্থান রয়েছে, তা একেবারেই অপ্রতুল। এছাড়া আরেকটা কারণ ঢাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধি। একটি হিসেব বলছে, প্রতি বছর সাত লাখেরও বেশি মানুষ নতুন করে যুক্ত হচ্ছে ঢাকায়।
উন্মুক্ত স্থানের স্বল্পতা : ১৯৯১ সালের শুরুর দিকে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা জানায়, ঢাকা শহর পর্যাপ্ত সংখ্যক পার্ক ও উন্মুক্ত জায়গা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রায় ৫০০ একর জমি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর রক্ষণাবেক্ষণ করে। কিন্তু এ উন্মুক্ত জমি প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। অনেক পার্ক ও খেলার মাঠ ধ্বংস হয়ে গেছে।
যেমন আনোয়ারা উদ্যান, আরমানিটোলা খেলার মাঠ, টিকাটুলী পার্ক এবং আজিমপুর পার্ক প্রায় বিলীন হওয়ার পথে। উত্তরা পার্কের মতো মোহাম্মদপুরের শহীদ পার্কও প্রায় দখল হয়ে গেছে। নবাবগঞ্জ পার্ক, লালমাটিয়া নিউ কলোনি পার্কও দখল হয়ে গেছে। যাত্রাবাড়ী পার্ক বসতি ও ময়লা ফেলার জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
মিরপুর, গুলশান এবং উত্তরায় পরিকল্পিতভাবে উন্মুক্ত স্থান রাখা হয়েছিল। কিন্তু এর বেশির ভাগই দখল হয়ে গেছে। গুলশান-১ এর খেলার মাঠ বিলীন হয়ে গেছে। রমনা পার্কের একটি অংশ নিয়ে টেনিস কমপ্লেক্স করা হয়েছে। অনেক পার্ক রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না এবং ময়লা ফেলার জায়গা বানানো হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বকশি বাজার শিশুপার্ক, বনানী আমতলী পার্ক অথবা হাজারীবাগ পার্কের কথা বলা যায়। রাজধানীর অনেক পার্কে আবার কমিউনিটি সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। কমিউনিটি সেন্টার করলে পার্কের আর কার্যকারিতা থাকে না বলে মনে করেন অনেকে।
বায়ু দূষণ : বায়ু দূষণে ঢাকার অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট এবং ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশনের বৈশ্বিক বায়ু পরিস্থিতি-২০১৭ শীর্ষক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বায়ু দূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
কমছে সবুজ : সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্য অনেক কারণের মধ্যে নির্বিচারে গাছ কাটাও ঢাকার এ দুরবস্থার জন্য দায়ী। এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, শিশুরা যেন খেলতে পারে এবং সব নাগরিক যেন বুকভরে স্বচ্ছ নিঃশ্বাস নিতে পারেন, সেজন্য ডিএসসিসি একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। অভিজ্ঞ প্রকৌশলী দিয়ে যার ডিজাইন করা হয়েছে। এর আওতায় এরই মধ্যে পার্কগুলোকে দখলমুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্য দিয়ে আগামীর ঢাকা সবুজেভরা একটি বাসযোগ্য ঢাকায় রূপান্তরিত হবে।
কমছে জলাভূমি : জানা যায়, ১৯৭৮ সালে ঢাকায় নদী ও খালের আয়তন ছিল ২৯ বর্গকিলোমিটার। ২০১৪ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২ বর্গকিলোমিটারে। খাল ও নদীর মোট আয়তনের দুই-তৃতীয়াংশই ভরাট হয়ে গেছে। ১৯৭৮ সালে ঢাকার মোট আয়তনের ৫২ শতাংশই ছিল নদী, খাল ও নিম্নভূমি। অথচ ২০০৯ সালে ৩৫৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের রাজধানীর মাত্র ২১ শতাংশ ছিল জলাভূমি। ৬৫ শতাংশ জলাভূমি কমেছে তিন দশকে। ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের কাছ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বিডি২৪লাইভ/এএইচআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: