ফাইনাল ম্যাচের ১৯তম ওভার নিয়ে মুখ খুললেন রুবেল

প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০১৮, ১০:১৭ এএম

এক বলে দরকার ৫। বাউন্ডারি হলে টাই। ছক্কা ছাড়া জেতার পথ নেই। এমন হিসেব সামনে রেখে বল করতে আসলেন বাংলাদেশের অনিয়মিত জেন্টল মিডিয়াম সৌম্য সরকার। তার করা ম্যাচের শেষ বলে এক্সট্রা কভারের ওপর দিয়ে তুলে মারলেন ভারতীয় কিপার কাম মিডল অর্ডার দিনেশ কার্তিক। সৌম্য পুরোদস্তুর পেসার নন। তাই অনেক ভেবে চিন্তে হয়ত ইয়র্কার লেন্থেই বল ফেলতে চেয়েছিলেন।

ওই সময় দিনেশ কার্তিকের মত অভিজ্ঞ ও পরিণত ব্যাটসম্যানের কাছে লেন্থ ডেলিভারি মানেই বিগ হিট নেয়ার আদর্শ বল। দিনেশ কার্তিক সামনের পায়ের ওপর ভর করে হাঁকালেন। বল খুব বেশি উচ্চতায় না উঠে বাতাসে ভেসে সোজা এক্সট্রা কভার আর লং অফের মাঝামাঝি জায়গা দিয়ে আছড়ে পড়লো সীমানার ওপারে। ক্রিকেটের পরিভাষায় যাকে বলে ‘ফ্ল্যাট সিক্স’- ঠিক তাই হলো।

আর তাতেই খেলার শেষ বলে ৪ উইকেটের অবিস্মরণীয় জয়ের স্বদ পেলো ভারত। এরই সাথে ট্রফি জয়ের সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হলো বাংলাদেশের। ১৬৬ রানের পুঁজি নিয়েও সাকিব বাহিনী লড়েছে প্রাণপন। এক সময় মনে হচ্ছিলো জিতেই যাচ্ছে টাইগাররা। ১২ বলে ভারতের দরকার পড়ে ৩৪ রানের। সেই সময় একটি ভাল ওভার হলেই হয়ত প্রথম ট্রফি জয়ের মধুর স্বাদ মিলতো। প্রেমাদাসায় ট্রফি উঁচিয়ে ধরে আনন্দে মেতে উঠতে পারতেন সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ আর সাব্বিররা।

কিন্তু হায়! এমন রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতিতে সর্বনাশ ডেকে আনলেন পেসার রুবেল হোসেন। শুনতে খারাপ লাগবে। তবে কঠিন সত্য হলো, আবারও ফাইনালে খলনায়ক হয়ে থাকলেন রুবেল হোসেন কিন্তু নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে প্রথম তিন ওভার বল করে মাত্র ১৩ রান দিয়েছিলেন পেসার রুবেল হোসেন। ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সুরেশ রায়নার মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকেও। কিন্তু ইনিংসের ১৯ তম ওভারে ২২ রান দিয়ে সেই রুবেলই পরিণত হন খলনায়কে।

&dquote;&dquote;

ম্যাচ শেষে কাঠগড়ায় রুবেলের সেই ১৯তম ওভার। অভিজ্ঞ রুবেলের ওপরই ভরসা ছিল অধিনায়ক সাকিব আল হাসানসহ সবার। আর থাকবেই না কেন? ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ডেথ ওভারে এই রুবেলের বিধ্বংসী বোলিংয়ের ওপর ভর করেই তো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। এ ছাড়া অনেকবারই শেষের দাবি দারুণভাবে মিটিয়েছেন এই পেসার।

কিন্তু ফাইনালের মহারণে ম্যাচের মোড় ঘুরানো ওই ওভারে আশানুরূপ বল করতে না পারায় সেই রুবেলই হচ্ছেন সমালোচিত। এর জন্য রুবেল নিজেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আরেকবার ফাইনালের মঞ্চে এসে শূন্য হাতে ফিরে যাওয়া, কাঁদিয়েছে রুবেলসহ গোটা জাতিকে। তাই সব দোষ নিজের ঘাড়ে নিয়ে সবার কাছে ক্ষমা চাইলেন বাংলাদেশের ডানহাতি এই পেসার।

ম্যাচ শেষে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে নিজের অফিশিয়াল পেজে রুবেল লিখেছেন, ‘ম্যাচ শেষ হওয়ার পর থেকেই খুব খারাপ লাগছে। সত্যি বলতে আমি কখনোই ভাবিনি আমার কারনে বাংলাদেশ দল জয়ের এত কাছে এসেও ম্যাচ থেকে এভাবে ছিটকে যাবে। সবার কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন সবাই।’

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ১৬ জানুয়ারি প্রায় একই পরিস্থিতিতে রুবেলের শেষ দুই ওভারে দেয়া ৩৩ রানে নিশ্চিত জয় হাতছাড়া হয়েছিল বাংলাদেশের। কাকতালীয়ভাবে সেটাও ছিল তিন জাতি টুর্নামেন্ট। তবে পার্থক্য একটাই; ৯ বছর আগের ম্যাচটি ছিল ৫০ ওভারের ম্যাচে আসর। আর এটা টি-টোয়েন্টি আসরের ফাইনাল। 

বিডি২৪লাইভ/আরআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: