‘আসবি, টাকা দিবি, চলে যাবি’
‘ভাড়া দে’। আজকে ৫০ টাকা নাও। কালকে গাড়ি চালাতে পারিনি। না, ৭০ টাকাই দিতে হবে! তোদেরকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। বলে গাড়ির চাবিটা টান দেন রনি।
কিন্তু ড্রাইভারও বা কম কিসে! সেও চাবি দিবে না। দৃশ্যটি ধানমন্ডির জিগাতলা লেগুনা স্টেশনের। সেখানে লাইনম্যান ও ড্রাইভারের মধ্যে দৈনিক চাঁদা দেওয়ার টাকা নিয়ে কথার কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে লাইনম্যান দুই চোখ রাঙ্গিয়ে মারমুখি ভঙ্গিতে অবস্থান নেয়। ড্রাইভার বেচারা লাইনম্যানের আচারণ দেখে এক প্রকার নিরুপায় হয়ে পকেট থেকে আরো ২০ টাকা বাহির করে দেন। তখনই রনি গর্জে উঠে বলে, ‘আসবি, টাকা দিবি, আর চলে যাবি, কোনো কথা হবে না।’
এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে লেগুনার ড্রাইভার নুরু মিয়া প্রতিবেদককে বলেন, এটা তো আজকে নতুন না। লাইনম্যানেরা প্রতিদিনই ড্রাইভারের সাথে এ রকম আচারণ করেন। আমরা নিরুপায়! দৈনিক যে টাকা আসে তার বেশিভাগই এই ভাবে চলে যায়। আমরা সারাদিন রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে গাড়ি চালাই, আর মালিক শ্রমিক সমিতি বিভিন্ন ব্যানারে বসে টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায়।
ধানমন্ডির জিগাতলা থেকে মোহাম্মদপুর-শিয়া মসজিদ-আদাবর-শ্যামলী-কল্যাণপুর-টেকনিক্যাল ও মিরপুর-১ এর সড়কে একমাত্র যাত্রী বহন করে থাকে চার চাকার লেগুনাগুলো। এই সড়কে ৮০ থেকে ১০০টি লেগুনা চলাচল করে থাকে।
তবে, কিছুদিন ধরে শিয়া মসজিদের বাশঁবাড়ি সড়কের কাজ সংস্কার হওয়া লেগুনার সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে বলে জানিয়েছেন লেগুনার ড্রাইভাররা। এই সড়কের মধ্যে স্বাধীনবাংলা এবং একুরেট নামের দুই ব্যানারে চলছে লেগুনাগুলো। সড়কের সকল সমস্যাও দেখে থাকেন এই সংগঠনগুলো।
আর এ জন্যই প্রতিটি লেগুনাকে ৭০০ টাকা দিতে দৈনিক। জিগাতলা-৭০, মোহাম্মদপুর-১০, শিয়া মসজিদ-৩৯০, শ্যামলী-৯০, মিরপুর-১৪০ টাকা। এর বাহিরেও প্রতি বৃহস্পতিবার মিরপুর মাজারের জন্য ৫০ টাকা দিতে হয় লেগুনার ড্রাইভার। এই টাকার মধ্যে ড্রাইভারদের জন্য রয়েছে কয়েকেটি সুবিধা। তার মধ্যে অন্যতম হলো, পুলিশের সার্জেন্ট মামলা দিলে তা দেখবেন গাড়ির মালিক শ্রমিক সমিতি। তবে লাইসেন্স না থাকলে যদি সাজেন্ট মামলা দেয় তাহলে ড্রাইভারকে সেই জরিমানা দিতে হয়।
লেগুনার ড্রাইভার নুরু মিয়া এক প্রশ্নে জবাবে প্রতিবেদককে বলেন, দৈনিক সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা ভাড়া আসে। তার মধ্য থেকে লেগুনার জমা দিতে হয় ১৪শত টাকা, তেল ১৩শত টাকা, চাঁদা ৭০০টাকা, আমার এবং সহকারীর খাবার ও নাস্তার খরচ হয় ৩শত টাকা। তারপর যা থাকে তা আমাদের দুই জনের বেতন। এমনও দিন যা বেতন না নিয়ে বাসা ফিরতে হয়। সচারচর ৮শত থেকে ১হাজার টাকা বেতন পড়ে থাকে। কিন্তু একদিন পরপর গাড়ি চালানোর কারণে আমাদের বেতন দিয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট করতে হয়। সকাল ৭টা গাড়ি নিয়ে বের হলেও রাত ১১টা- ১২টার আগে বাসা ফিররেত পারি না। দৈনিক ১৬ থেকে ১৭ঘন্টা গাড়ি চালাতে হয়।
লাইনম্যান পরিচালনার দায়িত্বে থাকা মো:সেতু বিডি২৪লাইভকে জানান, লাইনম্যানেরা কে কার সাথে খারাপ ব্যবহার করে তা আমার জানা নাই। আর কে কোথায় কত টাকা দেয় তা আমি দেখি না। আমার কাজ শুধু সড়কের মধ্যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে কী না, সাজের্ন্ট কোনো মামলা দিয়েছে কী না তা দেখা। এর বাহিরে আমি আর কোনো কাজ করি না।
লেগুনার মালিক শ্রমিক সমিতি বনী নামের এক নেতা বিডি২৪লাইভকে বলেন, আমি লেগুনার মালিক। আমাদের কাজ লেগুনার বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করা। টাকা নিয়ে থাকি। তবে তার পরিমান বলতে পারবো না।
বিডি২৪লাইভ/এইচকে
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: