সফলতার মুখ দেখছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল ২০১৮, ০৯:৩০ পিএম

একের পর এক প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছিল, কিছুতেই প্রশ্নফাঁস রোধ করা যাচ্ছিলো না। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ একাধিকবার পদত্যাগ করারও গুঞ্জন ওঠে। প্রশ্ন ফাঁসের কবল থেকে বেরিয়ে আসতে চলতি (২০১৮) এইচএসসি পরীক্ষার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২ এপ্রিল শুরু হওয়া এ পরীক্ষার অধিকাংশ বিষয়ের পরীক্ষা শেষে হলেও এবার আর আগেরমত প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটেনি। ফলে, প্রশ্নফাঁস বন্ধে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলোতে সফলতার মুখ দেখছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় মোট ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। এ পরীক্ষায় অনেকটাই প্রশ্নফাঁসের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নেয়া হয় বিভিন্ন পদক্ষেপ। যদিও কিছু পদক্ষেপ আগে থাকলেও এবার তা বাস্তবায়ন হচ্ছে কঠোরভাবে। পরীক্ষা শুরুর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্নফাঁস বন্ধে মানুষের পক্ষে যা যা করা সম্ভব তার সবই করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা আগে যা বলেছি এবং করেছি তারপর আমাদের নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে। যার ফলে আমরা আগের চেয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। অনেক বেশী পদ্ধতি গ্রহণ করছি। অনেক কৌশল নিয়েছি। সেদিক থেকে আমরা প্রশ্নফাঁস হবে না বলে আশা করতে পারি।

পরীক্ষা শুরুর আগে জানানো হয়, পরীক্ষার প্রশ্নের অনেক সেট ছাপা হবে। তবে, কত সেট প্রশ্ন ছাপা হবে তা জানানো হয়নি। বিষয়টিকে কৌশল হিসেবেই ব্যবহার করছে মন্ত্রণালয়।

চলতি পরীক্ষার জন্য অনেক সেট প্রশ্ন থাকলেও কোনটি পরীক্ষায় আসবে তাও জানানো হচ্ছে পরীক্ষার ২৫ মিনিট আগে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইল নাম্বারে সেট কোড ব্যবহারের নির্দেশনার এসএমএস করে পাঠানো হয়। এরপরই প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হচ্ছে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পূর্বে পরীক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়। যা কঠোরভাবেই বাস্তবায়ন করছে মন্ত্রণালয়।

এদিকে, কেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার করা নিয়েও বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়।যদিও এ নিয়মটি আগেও ছিল। তবে বর্তমানে কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। বর্তমানে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যতিত অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেন না। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত যে মোবাইলটি নিয়ে কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করছেন, তা দিয়ে ছবি ওঠানো যায়না। অর্থাৎ ছবি তোলা যায়, এমন ফোন কেন্দ্রের ভেতরে ব্যবহার করতে পারছেন না ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

এদিকে, কোচিং সেন্টার থেকে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার অভিযোগ বহু আগে থেকেই।এজন্য চলতি এইচএসসি পরীক্ষার আগেই দেশের সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেয় সরকার। তবে পরীক্ষা চলাকালীন কিছু কোচিং সেন্টার এ নির্দেশ মানেনি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে জড়িত অনেককেই আটক করে বন্ধ করে দেয় সেসব কোচিং সেন্টার।

বিভিন্ন সময় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২টি মামলা হয়েছে। এর সাথে জড়িত ১৫৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। জড়িত পরীক্ষার্থীদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষকদের চাকরি থেকে বাদ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত শিক্ষকদের চাকরি থেকে বাদ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানা গেছে।

এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন, তারা পার পেয়ে গেছেন তা ভাবার কারণ নেই। নানাভাবে চেকিং চলছে। প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে আমাদের কার্যক্রম থেমে নেই, এখনও চলছে।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: