‘এখনকার ছাত্রলীগ নির্যাতন-নিপীড়নের বাইরে’

প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০১৮, ১০:০১ পিএম

ছাত্র রাজনীতি, বর্তমান ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড, একাদশ জাতীয় নির্বাচনসহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা ও এমপিদের কোন্দল নিয়ে বিডি২৪লাইভের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি।

সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বিডি২৪লাইভ’র স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সাইফুল ইসলাম।

আপনার সময়ের আর বর্তমান ছাত্রলীগের মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখছেন কি?

কঠিন দু:সময়ে আমরা ছাত্রলীগ করেছি। আমাদের সময়ে মিছিল নিয়ে বের হতে পারতাম না। আমি যখন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে ছিলাম তখন দলের দুইজন কর্মীকে নিয়ে কোথাও এক কাপ চা খেতে পারতাম না। দেখা যেত, আমি একা দাঁড়াই আছি অথছ পুলিশ ঘেরাও করে আমাকে নিয়ে যেতো। এভাবে সাতবার আমাকে জেলে যেতে হয়েছে। আর এখনকার যে ছাত্রলীগ তাদের সেই নির্যাতন-নিপীড়নটা নাই। প্রতিকূলতা আর স্রোতের মাঝে এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য আছে।

স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমপি ও স্থানীয় নেতাদের মধ্যে কোন্দল দেখা গেছে। যার ফলে অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছে। এই কোন্দল সমাধানের উদ্যোগ দল থেকে নেয়া হচ্ছে কি?

আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এখানে বিভিন্ন মন মানসিকতার মানুষ আছে। আমি অস্বীকার করবো না যে, সবাই এক সাথে ঐক্যবদ্ধ। তবে এ বিষয়ে সেন্ট্রাল কমিটিকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেত্রী। এমনকি নির্বাচনের আগে কেউ যদি বিরোধে জড়ায় বা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে ওয়াকিং কমিটিতে।

ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে যারা আসবেন তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কি?

একদিক থেকে সত্যিকার অর্থে আমরা দুর্ভাগা। কারণ অসময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি আমরা। তবে আজকের তরুণ সমাজটা অনেক ভাগ্যবান। কারণ তারা তাদের সামনে আইডল হিসেবে একজনকে দাঁড় করাতে পারছেন। তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সততার দিক দিয়ে বিশ্বের ১০ জনের মাঝে যিনি স্থান করে নিয়েছেন। যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের সূচকের উর্ধ্বগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রীর দেশপ্রেম, সততা, জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং ভালোবাসা একইসাথে নেত্রীর পরিকল্পিত রাজনৈতিক ক্যারিয়ারটাকে যদি ছাত্রলীগের নতুন নেতাকর্মীরা অনুকরণ করে তাহলে শুধু দল নয় বাংলাদেশও একটা সুন্দর নেতৃত্ব পাবে। আর তারাই ভবিষ্যতের বাংলাদেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

জনগণের মাঝে বর্তমান আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কি রকম বলে আপনি মনে করেন?

আমি একজন আওয়ামী লীগের নেতা। আমার কাছে তার জনপ্রিয়তার প্রশ্ন করেন! তবে ব্যাক্তিগতভাবে বলবো, সাধারণ মানুষের মাঝে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা শতভাগ না থাকলেও দেশের অন্য যে কোনো দলের চেয়ে বেশি আছে।

শোনা যাচ্ছে আগামী সংসদ নির্বাচনে আপনি অংশ নেবেন, এ ব্যাপারে কিছু বলুন?

দলের সাধারণ কর্মীর পাশাপাশি যদি সরকারের স্বীকৃত একটা জায়গা থাকে তাহলে আপনার কাজের ব্যাপকর্তা আরও বৃদ্ধি পায়। সমাজ সেবা আরও বেশি করা যায়। আর এই কারণেইতো আমরা রাজনীতি করি। আমি নির্বাচন করতে চাই, তবে আমার দল যদি মনোনয়ন দেয় তাহলেই তা সম্ভব। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে দলের যেকোন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে।

একজন রাজনীতিক হিসেবে আগামী একাদশ নির্বাচন কেমন দেখতে চান?

আমি এরশাদের আমলের নির্বাচন দেখেছি। জিয়াউর রহমানের নির্বাচনও দেখেছি। তখনকার সময়ে একটা ‘হ্যা’ বা ‘না’ ভোট হয়েছে। আমি নিশ্চয়ই সেই ভোট চাইবো না। মানুষের ভাতের পাশাপাশি ভোটের অধিকার নিয়ে কথা বলেছেন আমার নেত্রী। আমি বিশ্বাস করি, তিনি অবশ্যই শান্তিপূর্ণ এবং নিয়মতান্ত্রিক একটা নির্বাচন উপহার দেবেন।

মনোনয়ন পেলে আপনার নির্বাচনী এলাকার জন্য কি কি ইশতেহার থাকছে?

আমি সুযোগ পেলে চেষ্টা করবো সন্ত্রাস, জঙ্গি, মাদক, দুর্নীতিমুক্ত এবং শিক্ষিত একটা সমাজ গড়তে। আমি মনে করি, আমাদের এই তরুণ সমাজ বাংলাদেশের জন্য সোনার হরিণ। আমরা যদি দুর্নীতিমুক্ত তরুণ সমাজ গড়ে তুলতে পারি তাহলে তরুণরাই বাংলাদেশটাকে বিশ্বের মধ্যে উন্নত দেশে রুপান্তরিত করবে।

বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আওয়ামী লীগের জয় সম্ভব কি না?

আওয়ামী লীগ চায় বিএনপি নির্বাচনে আসুক। আর আওয়ামী লীগের যে নীতি, আদর্শ তার ঠিক বিপরীত দিক নিয়ে চলে বিএনপি। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চলে, আর বিএনপি চলে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি বা রাজাকারদের পূর্ণবাসন করে। দেশের মানুষের বোঝার ক্ষমতা আছে, কাকে ভোট দিলে বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে যাবে।

আগামী একাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি?

নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো চ্যালেঞ্জ নাই। তবে আওয়ামী লীগ উন্নয়নশীল বাংলাদেশ হতে বিশ্বের মধ্যে উন্নত দেশে রুপান্তরিত করতে চায়। এটাই আমাদের সব চাইতে বড় চ্যালেঞ্জ।

বিডি২৪লাইভকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ!

 

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: