হাজারো পাখির আপ্যায়ন!
একেক মানুষের শখ একেক রকম। কারো শখের সাথে মিশে থাকে মমত্ববোধ আর ভালবাসা। শখের বশে করা কারো কাজ নজর কাড়ে অনেকের, সৃষ্টি করে দৃষ্টান্ত। তেমনি একজন পাবনার পাখিপ্রেমী সমর কুমার ঘোষ। যিনি প্রতিদিন ভোরে শালিক পাখিদের আপ্যায়ন করেন। আর এ কাজটি তিনি করছেন গত প্রায় ৫ বছর ধরে। শালিক ও সমর কুমারের এই সখ্যতাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সুধীজনেরা।
পরিবেশবাদি সংগঠনের নেতা বলছেন, সমর কুমারের মতো এমন উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে জীববৈচিত্র ও প্রকৃতি সংরক্ষণে।
‘পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ সড়ক, তখনও সূর্য ওঠেনি। কেউ বের হয়েছেন প্রাত:ভ্রমণে, কেউবা গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে। এর মাঝে বিভিন্ন ভবনের ছাদ ও বৈদ্যুতিক তারে ঝাঁকে ঝাঁকে শালিক পাখির অপেক্ষা, কখন আসবেন তিনি, কখন দেবেন খাবার। ঠিক সময়মত বস্তা ভর্তি চানাচুর নিয়ে হাজির তিনি। উৎফুল্ল শালিকের দল। কিচিরমিচির শব্দে ছুটোছুটি-হুরোহুরি। এরপর পেটপুরে চানাচুর খেয়ে ছুটে চলা দিকবিদিক।’
শত শত শালিক পাখিকে আপ্যায়নের এ দৃশ্যের দেখা মেলে প্রতিদিন ভোরে পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ সড়কে শ্যামল দই ভান্ডারের সামনে। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে শালিক পাখিদের এভাবেই আপ্যায়ন করে চলেছেন শ্যামল দই ভান্ডারের মালিক সমর কুমার ঘোষ।
আলাপকালে সমর জানান, ছোটবেলা থেকেই পশুপাখির প্রতি আমার দরদ ছিল। ব্যবসার কারণে খুব ভোরে দোকানে আসতে হয় তাঁকে। একদিন দোকানের সামনে কয়েকটি শালিক পাখিকে খাবারে জন্য চেঁচামেচি করতে দেখে তাদের চানাচুর খেতে দেন। পরদিন থেকে খাবারের জন্য পাখির সংখ্যা বাড়তে থাকে। তিনিও খাবার দেন আনন্দ চিত্তে। এভাবে শালিক পাখিদের সাথে তৈরী হয় সখ্যাতা সমর কুমার ঘোষের। বর্তমানে প্রতিদিন অন্তত দুই হাজার শালিক পাখিকে এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকার চানাচুর দিয়ে আপ্যায়ন করে চলেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘শালিককে খাওয়ানোর এ আয়োজন যাতে ভবিষ্যতেও চালু থাকে সে উদ্যোগ নিয়েছি। আমি না থাকলেও আমার ভাই, ছেলে বা দোকানের কর্মচারীরা পাখিদের এই খাওয়ানোর কাজ চালিয়ে যাবে। আমি আশা করি, আমার দেখাদেখি পাখিদের আপ্যায়নে অন্যরাও এগিয়ে আসবেন।’
শহরে প্রতিদিন ভোরের এই দৃশ্য আনন্দ দেয় বহু পথচারিকে। প্রাত:ভ্রমণে ও জরুরী কাজে বের হওয়া মানুষ অবাক হয়ে দৃশ্যটি উপভোগ করেন। সাধুবাদ জানান সমর কুমারের এই পাখি প্রেমকে।
উত্তরাঞ্চলের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘স্বাধীন জীবন’র নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক নাসিম বলেন, সমর কুমারের উদ্যোগ অনেক প্রশংসনীয়। তার এই পাখিপ্রেম জীববৈচিত্র ও প্রকৃতি সংরক্ষণে ভূমিকা রাখবে।
সামাজিক বন বিভাগ পাবনার বন কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ বলেন, পাবনার আব্দুল হামিদ সড়কে সমর কুমার ঘোষ যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা সত্যিই অনন্য। সামাজিক বন বিভাগ এটাকে খুব ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। সমর কুমারের মতো অন্যরাও এভাবে পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে আসবে বলে মনে করি।’
বিডি২৪লাইভ/এমকে
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: