খালেদা জিয়ার দু’টি মামলার জামিন নামঞ্জুর 

প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০১৮, ০৯:৩৯ পিএম

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় যাত্রীবাহী নৈশকোচে পেট্টলবোমা হামলায় ৮ যাত্রী নিহত এবং একই উপজেলার কাভার্ডভ্যান পোড়ানোর পৃথক দুটি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে শুনানির দিন ধার্য্য করে আদালত।

সোমবার (২৩ এপ্রিল) কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক বেগম জেসমিন আরা বেগম এর আদালতে শুনানি হয়। আদালতের বিচারক বেগম জেসমিন আরা বেগম উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনার পর আদেশ পরবর্তীতে দেয়া হবে বলে জানান। বিকাল পাঁচটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শুনানির কোন আদেশ পাওয়া যায়নি।

এদিকে, চলতি মাসের ১০এপ্রিল কুমিল্লার ৫ নং আমলী আদালতের বিচারক মোস্তাইন বিল্লাহ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে তার আইনজীবীরা ১৬ এপ্রিল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত ২৩ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য্য করেন।

খালেদা জিয়ার পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকুসহ শতাধিক আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেন।

অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিটর (পিপি) মোস্তাফিজুর রহমান লিটনসহ আরো অনেকে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি বাস কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় আসামাত্র দুর্বৃত্তরা পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। এতে ঘটনাস্থলে সাতজন ও হাসপাতালে নেওয়ার দুদিন পর আরও একজনসহ মোট আটজন মারা যান ও ২৭ জন আহত হন।

এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হলে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলা তদন্ত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই মো. ইব্রাহিম। এই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিএনপির ৬ শীর্ষস্থানীয় নেতাকেও হুকুমের আসামি করা হয়। পরে ২০১৭ সালের ৬ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ৭৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইব্রাহীম।

পরে মামলার তদন্তভার ডিবি পাওয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তা ফিরোজ আলম দুই বছর এক মাস তিন দিন পর ২০১৭ সালের ৬ মার্চ কুমিল্লার আদালতে ওই দুই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও সালাউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ ও বিএনপির উপদেষ্টা সাবেক সাংসদ মনিরুল হক চৌধুরী, চৌদ্দগ্রামের জামায়াতের সাবেক সাংসদ সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির সাহাবউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. মিজানুর রহমান, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির শাহজাহান, চিওড়া ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির ও ক্যাডার মেজবাহ উদ্দিন ওরফে নয়ন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদাসহ ৭৮ জনের নামে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। খালেদা জিয়া মামলার ৫১ নম্বর আসামি।

কুমিল্লার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার হালদারপাড়া এলাকায় কাভার্ড ভ্যানে আগুন দেওয়ার ঘটনায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে এই মামলা করা হয়েছিল। ওই দিন রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি মামলা হয়। জেলা ও দায়রা জজ স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এ এই মামলা বিচারাধীন। তবে ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর এই মামলা হাইকোর্ট থেকে স্থগিত করা হয়। এ মামলাটি বর্তমানে স্থগিত।

এ ছাড়া ২০১৫ সালের ২ ফেব্র“য়ারি রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনায় খালেদা জিয়াসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রামে পৌরসভার হায়দারপুলে একটি কাভার্ডভ্যান পোড়ানোর অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ ৩২ জন এবং একই সনের ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে চৌদ্দগ্রামে জগমোহনপুরে বাসে পেট্রলবোমা মেরে আগুন লাগিয়ে আটজন মারা অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ ৬৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দেওয়া হয়।

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: