জুন-জুলাইয়ে সরকারকে বড় ধাক্কা দিবে বিএনপি 

প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০১৮, ১১:০৪ পিএম

কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সরকার পতন ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরপেক্ষ সরকার গঠনে বিএনপির আন্দোলন চলছে। তবে বক্তব্য, বিবৃতি, বিক্ষোভ ও মানববন্ধনেই সীমাবদ্ধ বিএনপির আন্দোলন। রাজ পথে জোড়ালো কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি দীল্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা এ দলটি। 

নেতাকর্মীদের মতে, সরকারের অত্যাচার, নির্যাতন, হামলা-মামলায় জর্জরিত বিএনপি এখন কঠিন সময় পার করছে। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে এ ধরনের সংকটে আর কখনো পরতে দেখা যায়নি দেশের অন্যতম বৃহত্তম এই রাজনৈতিক দলটিকে।

জানা গেছে, দলীয় প্রধানের মুক্তি, ঐক্য ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পাশাপাশি কঠোর কর্মসূচির বিষয়ে ভাবছেন দলটির হাইকমান্ড।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের সিনিয়র এক নেতা বিডি২৪লাইভকে জানান, সরকারের অত্যাচারে নেতাকর্মীদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তারা আর পিছু হাটতে চায় না। ফলে ইতোমধ্যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পাশাপাশি কঠোর কর্মসূচির প্রস্তুতি নিতে তৃণমূল পর্যায়ে দিক নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে দলীয় প্রধানের মুক্তি বিলম্বিত হলে রাজপথের সর্বাত্মক আন্দোলনে জুন-জুলাইয়ে সরকারকে বড় ধাক্কা দিতে চায় বিএনপি।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই সরকারের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলনের বিকল্প নেই। যুগে যুগে মানুষ আন্দোলন ও সংগ্রাম করে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। এবারও মানুষ তাদের ভোটের অধিকার আদায় করবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলা বিএনপির সভাপতি বিডি ২৪লাইভকে জানান, দলের কর্মী-সমর্থকদের সেন্টিমেন্ট এখন তুঙ্গে। আর কেন্দ্র থেকে বার্তা হচ্ছে জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে রাজপথেই খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ বের করতে হবে। তাই ব্যাপক সংখ্যক জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা রাজপথে থাকবো। রাজপথেই ফয়সালা হবে।

তারা জানান, তৃণমূল বিএনপি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি সংগঠিত। সামনে হয়তো এমন সময় আসতে পারে যখন আর আমরা কেন্দ্র বা কোনো নেতার নির্দেশের দিকে তাকিয়ে থাকব না। জনসমর্থনকে শক্তিতে পরিণত করে আমরা যার যার অবস্থান থেকে সামনের দিকে এগিয়ে যাব। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করব।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে জোরালো আন্দোলন আসছে উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বলেছেন, নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।‘ঐক্যবদ্ধ হন, এক সঙ্গে চলেন, জোরদার আন্দোলন আসছে।’ সেই আন্দোলনে জ্যেষ্ঠ নেতারা সামনে থাকবেন বলেও জানান তিনি।

বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে নেতারা জোরদার আন্দোলন চেয়েছে দাবি করে দলটির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি, অস্ত্র শুধু থাকলেই ব্যবহার করা যায় না, সেটাকে শান দিতে হয়, ধারালো করতে হয়, তাহলে সেটাকে ব্যবহার করা যায়। এখন সেই অস্ত্র শানিত করার সময়। আর ঐক্য হলো সেই শানিত করা।’

দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বিডি২৪লাইভকে বলেন, ঐক্যবদ্ধ মানুষ যে কত বড় শক্তি সেটি ৬৯ গণঅভ্যুত্থান, ৯০ গণঅভ্যুত্থাণ এগুলো আমাদের ইতিহাসে জ্বল জ্বল করছে।

তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সবকিছুরই প্রাথমিক পর্যায়। এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই আমাদেরকে চুড়ান্ত বিজয়ের রাস্তা দেখাবে এবং আমরা সফলতা পাব। অস্ত্র নিয়ে লড়াই করা খুব সহজ কিন্তু অস্ত্র ছাড়া গণতান্ত্রিক আন্দোলন যত কঠিনই হোক এটিই বাস্তব মুখী।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী বিডি২৪লাইভকে বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হলো সব কিছুরই একটি প্রাথমিক পর্যায়। দিনক্ষণ ঠিক করে আন্দোলন করা হয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম কোনো নজির নেই। আন্দোলন তার গতি পথ নিজেই ঠিক করে নিবে। প্রয়োজন অনুসারে তার রুপ বদলাবে এটাই নিয়ম।

বিডি২৪লাইভ/এইচএএম/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: