প্রতীক পেয়ে প্রার্থীদের মিছিল-শোডাউন

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০১৮, ১২:০২ এএম

প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে জমে উঠেছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। পাড়া-মহল্লায় শুরু হয়েছে নির্বাচনী মিছিল-শোডাউন। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি নগরের ৫৭টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী মিছিল, শোভাযাত্রা ও হ্যান্ডবিল বিতরণ করেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) সকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নেতাকর্মীদের নিয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে মিছিল ও শোডাউন করেন। এর আগে সকাল থেকেই প্রার্থীরা তাদের সমর্থকদের নিয়ে গাজীপুর নির্বাচন রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অবস্থান নেন।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে যান। এর আধ ঘণ্টার পর দলীয় নেতাকর্মীসহ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম যান। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রথমে মেয়র প্রার্থী পরে সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন।

&dquote;&dquote;দলীয় প্রতীক পেয়ে জনসংযোগে বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার

মেয়র পদে প্রতীক পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার (ধানের শীষ), ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান (মিনার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন (হাতপাখা), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন (মোমবাতি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমিন (কাস্তে) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমদ (টেবিল ঘড়ি)। এর মধ্যে ছয় প্রার্থী তাদের দলীয় নির্ধারিত প্রতীক পেয়েছেন। একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থীকে তার পছন্দের প্রতীক টেবিল ঘড়ি দেয়া হয়েছে।

এছাড়া সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একই প্রতীকে একাধিক প্রার্থীর পছন্দ থাকলে সেখানে লটারির মাধ্যমে প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়।

বিভিন্ন প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্ধের পর রিটার্নিং কর্মকতার কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় শ্লোগান দিতে দেখা যায়। এছাড়া আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম রিটানিং কর্মকতার কার্যালয় থেকে বের হয়ে টঙ্গী থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার প্রতীক বরাদ্দের পর দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

নির্বাচনী প্রতীক হাতে পেয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর জনগণের কাছে এখন আমার প্রতীকটি উপস্থাপন করব। প্রতীক নিয়ে ভোটারের কাছে যাব। নৌকা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির প্রতীক, নগরবাসীর মুক্তির প্রতীক। আধুনিক এবং পরিকল্পিত নগর গঠনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন কাজে শরিক হতে ভোটারদের আহ্বান জানাবো। নৌকা প্রতীক বিজয়ী হলে গাজীপুর মহানগর হবে দেশের একটি অন্যতম আধুনিক মহানগর।’

&dquote;&dquote;দলীয় প্রতীক পেয়েই জনসংযোগে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম

বিএনপি মনোনীত দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকার তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ধানের শীষ প্রতীকটি গাজীপুর নগরবাসীর পরিচিত একটি প্রতীক। এ প্রতীক উন্নয়নের প্রতীক। এ প্রতীকে ভোটদানে গাজীপুরবাসী ভুল করবে না।’

হাসান সরকার বলেন, ‘তালিকাভুক্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাস দমনসহ সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সর্বদা কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। সব প্রার্থীর জন্য নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বাস্তবায়নে সর্বদা তৎপর থাকতে হবে। ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে নিরপেক্ষ পরিবেশ সৃষ্টি এবং কালো টাকার ছড়াছড়ি হলে তা বন্ধ করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত মো. জালাল উদ্দিন তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘গাজীপুর মহানগর একটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। বিধি অনুযায়ী প্রচারণা চালিয়ে যাবো। জয়ী হলে প্রথমেই ময়লা আবর্জনামুক্ত একটি পরিচ্ছন্ন মহানগর প্রতিষ্ঠা করব।’

মঙ্গলবার বিকালে টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীক নিয়ে জনসংযোগ করেন ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও মহানগর তাঁতী লীগের সভাপতি মো. শাহ আলম। তিনি বলেন, ‘তিনি তার ওয়ার্ডকে মানুষের নির্বিঘ্ন বাসযোগ্য ওয়ার্ড গঠনে সচেষ্ট থাকবেন। একটি আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড গঠনে সবাইকে নিয়ে কাজ করবেন।’

নগরীর ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এম এম হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচিত হলে মাদকমুক্ত একটি আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড গড়ে তুলবো।’

এছাড়াও ৫৫, ৫৬, ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী রাখি সরকার বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে নারী ও শিশুদের জন্য সরকারের দেয়া বরাদ্দ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখবো।’

প্রসঙ্গত, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাত মেয়র, ২৫৬ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৮৪ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এ সিটি করপোরেশনের মোট আয়তন ৩২৯ দশমিক ৫৩ বর্গকিলোমিটার। এতে ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ পাঁচ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন ও মহিলা পাঁচ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২৫টি। ভোটকক্ষ দুই হাজার ৭৬১টি।

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: