বড় ধরনের সহিংসতার মুখে দেশ, দায় কার?

প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল ২০১৮, ১২:০৮ পিএম

২০১৪ সালের ন্যায় ফের বড় ধরনের সহিংসতার মুখে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত রাজনৈতিক সংহিসতায় প্রাণ হারিয়েছে অগণিত বাঙালি। এদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতার চেয়ে সাধারণ মানুষই বেশি। রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে একটি গণতান্ত্রিক দেশের সাধারণ মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করে ও প্রাণ হারায় এ দায় কার?

বিচারের জন্য কার কাছে যাবে স্বজন হারা সেই অসহায় পরিবারটি। পঙ্গুত্ব বরণ ও হত্যার শিকার হওয়ার জন্য যারা দায়ী তাদের মধ্যে একটি দলই তো বসে থাকে ক্ষমতার মসনদে। তাহলে আর বিচার!

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও সেই পাক-হানাদার বাহিনীর হাতে যেভাবে পঙ্গুত্ব বরণ ও জীবন হারিয়েছিল এ দেশের বীর বাঙালি আজও সেই ভাবেই প্রাণ হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। স্বাধীনতার পরও ক্ষমতার জন্য নিজের দেশের নিরীহ বাঙালিকেই আমরা হত্যা করছি। কত বড় অভাগা জাতি আমরা। এই স্বাধীনতা অর্জন করে তাহলে কি পেলাম?

তবে হ্যাঁ, আজ যদি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, এ কে ফজলুল হক, মাওলানা হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানরা বেঁচে থাকতেন, তাহলে হতভাগা বাঙালির কপালে হয়তো এই দুর্দশা আসতো না।

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের মতো একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচন নিয়ে বার বার একই সমস্যা হচ্ছে। যে দলই ক্ষমতায় যাচ্ছে নিজেদের মতো করে সংবিধান তৈরী করছে। যাতে করে খুব সহজে ক্ষমতায় যাওয়া যায় কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবন সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য তারা সংবিধান ‘মডিফাই’ খুব একটা করেন না। ক্ষমতায় যাওয়ার পরই লক্ষ্য থাকে আগামী বার কিভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে। এভাবে চলতে থাকলে দেশের ও সাধারণ মানুষের উন্নতি হবে কবে?

রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা যখন সভা-সমাবেশে বক্তব্য দেন মনে হয়, এ দেশে তাদের চেয়ে নিঃস্বার্থ মানুষই হয় না। তারা বলেন, আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনীতি করি না। ক্ষমতায় থাকার জন্য রাজনীতি করি না। আমরা রাজনীতি করি দেশ ও দেশের মানুষের উন্নতির জন্য। আসলেই কি তাই হচ্ছে? না। হচ্ছে না। প্রকৃত পক্ষে দেশ ও জনগণকে হত্যা করেই সেইসব নেতারা ক্ষমতায় যাচ্ছে। দেশ ও জাতির উন্নতি হোক বা না হোক তাদের নিজেদের উন্নতি ঠিকই হচ্ছে। এই হলো আমাদের রাজনীতি!

রাজনৈতিক সেইসব বড় নেতাদের কাছে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের দাবি, আপনারা ২০১৪ সালের ন্যায় ফের বড় ধরনের সহিংসতায় না গিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটা সুষ্ঠু সমাধানে আসুন। ভোটের বছর একটা রাষ্ট্রের মানুষের কাছে আনন্দের বছর। আর আমাদের কাছে আতঙ্কের বছর কেন? ভয়ে ভয়ে থাকতে হচ্ছে আমাদের কখন নিজে বা পরিবারে কাউকে হারিয়ে ফেলি রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে। আমরা আপনাদের কাছে এটা প্রত্যাশা করি না।

যে দলই ক্ষমতায় যাক, মনে রাখা উচিত আমরা সবাই বাঙালি। বাইরের কেউ এসে দেশ চালাচ্ছে না। তাহলে এই সহিংসতা কেন? একটা সমাধানে এসে গণতান্ত্রিক উপায়ে মানুষকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেয়ার সুযোগ করে দিন। পছন্দের সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তিকে জনগণ ক্ষমতায় বসাক। তাতে তো কারও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এটাই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মানুষের অধিকার।

Email: [email protected]

খোলা কলামে প্রকাশিত সব লেখা একান্তই লেখকের নিজস্ব মতামত। এর সাথে পত্রিকার কোন সম্পর্ক নেই।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

 

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: