সেই ‘নিষ্ঠুর নির্যাতনের কারিগর’ গিনা হ্যাসপাল সিআইএর পরিচালক

প্রকাশিত: ১৮ মে ২০১৮, ০৯:৪১ এএম

অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা-সিআইএর পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেলেন বন্দিদের ‘নিষ্ঠুর নির্যাতনের কারিগর’ খ্যাত গিনা হ্যাসপাল।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সিআইএ প্রধান হিসেবে তার নিয়োগ অনুমোদন করা হয়। সিনেটের ১০০ সদস্যের মধ্যে ৫৪ জন গিনার পক্ষে এবং ৪৫ জন বিপক্ষে ভোট দেন। এরমধ্যে ডেমোক্রেট দলের ছয়জন সিনেটর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত এ বিতর্কিত নিয়োগের পক্ষে ভোট দেন।

অন্যদিকে রিপাবলিকান পার্টির দুই সিনেটর গিনার বিপক্ষে ভোট দেন। তারা মূলত রিপাবলিকান সিনেটর জন ম্যাককেইনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে গিনার নিয়োগের বিরোধিতা করেন।

যদিও সিআইএর প্রথম নারী পরিচালক হিসেবে গিনা হ্যাসপালের নিয়োগকে অনেকে ট্রাম্পের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দিয়েছেন্

কিন্তু ম্যাককেইন মনে করেন, গিনাকে সিআইএর পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত করা ভুল সিদ্ধান্ত। আর গিনার অন্ধকার দিকগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করলে একজন নারী হিসেবে তার এই ঐতিহাসিক নিয়োগের আলোকিত অধ্যায়টি কালো মেঘে ঢেকে যায়।

গিনা হচ্ছেন সিআইএর এমন কর্মকর্তা, যিনি ২০০১ সালের ঐতিহাসিক নাইন ইলেভেনের পর মুসলমানদের গোপন কারাগারে নিয়ে নিষ্ঠুরতম নির্যাতনের বিভিন্ন কলাকৌশল উদ্ভাবন করেন।

গিনাকে সিআইএপ্রধান হিসেবে ট্রাম্প নিয়োগ দানের পর ল্যারি বলেছিলেন, ঘটনা হচ্ছে- গিনা সংস্থাটিতে টিকে থাকতে সক্ষম হয়েছেন। এটির ভেতরে তিনি বেড়ে উঠেছেন। এখন তিনি সেটির পরিচালক হচ্ছেন, যা সত্যিই উদ্বেগের।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্দিদের জন্য একটি খাবার ট্রেতে করে সস, বাদাম ও কিশমিশসহ পাস্তা নিয়ে আসা হয়। এ ছাড়া আরও খাবার ছিল, যা পাইপ দিয়ে বন্দিদের পায়ুপথে প্রবেশ করানো হয়েছিল।

সিআইএ কর্মকর্তারা বন্দিদের সামনে তাদের শিশুদের এনে আঘাত করত। যৌন নির্যাতন করা হতো। এক বন্দির মায়ের গলা কেটে ফেলা হয়েছিল। ওয়াশিংটনে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের উপপরিচালক ক্রিস্টোফার অ্যান্ডার্স বলেন, গিনার চিন্তাভাবনায় নির্যাতন ছাড়া আর কিছু নেই।

গিনাকে সিআইএপ্রধান হিসেবে নিয়োগদানের পর সিনেটর জন ম্যাককেইনও বলেছিলেন, গিনা কী ধরনের নির্যাতন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তার মাত্রা কী পরিমাণ ছিল, সিনেটে মনোনয়ন নিশ্চিত করার প্রক্রিয়ার সময় তার সেটি বর্ণনা করা প্রয়োজন।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দিদের নির্যাতনকে মার্কিন ইতিহাসের এক অন্ধকারময় অধ্যায় আখ্যা দেন ম্যাককেইন। ১৯৮৫ সালে সিআইএতে যোগ দেন গিনা গ্যাসপাল। দেশের বাইরে কাজ করার তার অভিজ্ঞতা ব্যাপক। সিআইএর কর্মকর্তা হিসেবে ৩৩ বছরের ক্যারিয়ারে দেশের বাইরে অনেক গোপন অভিযানেও অংশ নেন তিনি।

গিনা লন্ডনের সিআইএর শীর্ষ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে তিনি সংস্থাটির গোপন অভিযানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন।।

বিডি২৪লাইভ/এসএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: