‘জয়কে কারাগারে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে’

প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে ২৫০০ কোটি টাকা পাচার করেছে, অভিযোগ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, টাকা পাচারের ঘটনায় জয়কে ভেতরে (কারাগার) নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। কারণ এগুলো জনগণের কষ্টের টাকা।
রবিবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওর্য়াদী উদ্যানে “নিরাপত্তার কর্মক্ষেত্র বাচাঁর মত মজুরী এবং গুম-খুন, হয়রানী নির্যাতন বন্ধের দাবিতে” শ্রমিক সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
শফিক রেহমানের মুক্তির দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের টাকা পাচার আড়াল করতেই শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাই জয়কে ভেতরে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।
তিনি বলেন, জয়ের টাকা পাচারের কাগজ বাংলাদেশের মধ্যে শুধু নেই বিদেশেও আছে। জয়ের টাকা পাচারের কথা তো প্রকাশ করেননি। তাহলে শফিক রেহমানের দোষ কোথায়। অবিলম্বে শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমান ও শওকত মাহমুদসহ সকল কারাবন্দিদের মুক্তির দাবি করেন খালেদা জিয়া।
মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল এ সমাবেশের আয়োজন করে। এর আগে দুপুর দেড়টায় কোরআন তেলায়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ৫১ মিনিটের বক্তব্যে সরকারের অপশাসন, দুর্নীতি, গুম-খুন, ব্যাংক লুটপাট, বিচার অঙ্গনের বিচারহীনতা তুলে ধরেন।
মঞ্চের ওপরের দিকে সামনে একটি ব্যানারে লেখা ছিল- আমি একজন শ্রমিক এবং এই পরিচয়ে আমি গর্বিত- জিয়াউর রহমান।
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ গত সাত বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। জোর করে ক্ষমতায় থেকে সরকার লুটপাট করছে। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি। এরা জোর করে ক্ষমতায় বসে লুটপাট করছে। আর আজীবন ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগ নতুন নতুন আইন করছে, সংবিধান সংশোধন করছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪২ বছরে যে ঘটনা ঘটেনি, এই অবৈধ সরকারের সময় তা ঘটেছে। অন্যান্য ব্যাংকে লুটপাটের পর এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভও চুরি হয়েছে। এর জবাব বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রীকে অবশ্যই দিতে হবে। এ ঘটনার বিচার হবেই।
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আপনাদের অনেক ঠিকানা আছে কিন্তু বিএনপির ঠিকানা একটাই, তা হলো বাংলাদেশ।
সমাবেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা আমার ছেলে, আমার মা, বোন, ভাই সন্তান। আপনারা ছাড়া আমার কোন কিছু নাই। আমি যে কোন আন্দোলনে ডাক দিলে আপনারা তা সফল করবেন বলে প্রত্যাশা করি।
লেখক, ব্লগার ও মুক্তমনা মানুষের হত্যাকাণ্ড সরকারের মদদেই হচ্ছে। তা না হলে তাদের কেন গ্রেফতার করা হলো না। সরকারের মদদ না থাকলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না,’ বলেন তিনি। খুন, গুম নির্যাতন করে এতো মানুষ খুন করছেন বিচার হয়নি। কিন্তু তাদেরও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। আল্লাহই আপনাদের কঠিন বিচার করবে।’
আওয়ামী লীগকে মানুষ বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, তারা যত উন্নয়ন করে তার চেয়ে বেশি চুরি করে। বাংলাদেশকে তারা মনে করে পৈত্রিক সম্পত্তি। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা দখলবাজি করছে। আর মানুষ আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করে না বলেই ক্ষমতায় থেকে তারা নির্বাচন করতে চায়। নির্বাচনের নামে তারা ভোট কেন্দ্র দখল করে জোর করে নিজেদের প্রার্থীদের বিজয়ী করছে। আর তাদের সহযোগিতা করছে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন।
ইতিহাসের ভয়াবহতম রানা প্লাজা ধসের কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এক নেতা দখল করা জায়গায় রানা প্লাজা গড়েছিলেন। সেই রানা প্লাজা ধসে শত শত শ্রমিক মারা গেল। অনেকে আহত হয়েছে। এখনো অনেক নিখোঁজ শ্রমিকের খোঁজ পায়নি স্বজনরা। রানা প্লাজার শ্রমিকদের নাম ব্যবহার করে অনেক টাকা ওঠানো হয়েছে। কোথায় গেল সেই টাকা? সেই টাকায় শ্রমিকদের ভাগ্য উন্নয়ন হয়নি, উন্নয়ন হয়েছে সরকারের লোকদের। এই সরকার আহত-নিহতদের কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়নি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন দিতে চায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন দিলে কেমন হয় তা সবাই দেখছে। ভোটের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভরে ফেলে। সন্ত্রাসী করে সাধারণ মানুষকে মেরে ফেলে। নির্বাচন কমিশন কোন পদক্ষেপ নেয় না। তাই হাসিনাও যে রকম আর নির্বাচন কমিশনও সে রকম।
শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আহমেদ বীর বিক্রম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন, ডা. জেড এম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, আসলাম চৌধুরী, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ আবু জাফর, মহিলা দলের সভানেত্রী নূরী আরা সাফা, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব, ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম প্রমুখ।
এছাড়া সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, হারুন অর রশিদ, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, এম এ মান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, শ্যামা ওবায়েদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানা উল্লাহ মিয়া, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক নিতাই রায় চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা আজিজুল বারী হেলাল, হাবিবুর রশিদ হাবিব, ঢাকা মহানগর যুবদলের উত্তরের সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গির প্রমুখ।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: