কুমিল্লায় সৌদি প্রবাসীকে জবাই করে হত্যা, আটক ৬

প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০১৭, ০৮:৩১ পিএম

কুমিল্লার তিতাসে সীমানা বিরোধের জের ধরে সুমন মিয়া (৩২) নামের সৌদি প্রবাসীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ নেতা ও তার পরিবারের লোকজনসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। এতে ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের উপর্যপুরি রামদায়ের কোপে গুরুতর আহত হয় নিহতের ছোট ভাই সাইদুল ইসলাম (৩০)। স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। রোববার রাত ৯টার দিকে উপজেলার বারকাউনিয়া গ্রামের ব্রীজের উপর এ লোম হর্ষক ঘটনা ঘটে।

নিহত সুমন মিয়া (৩২) ওই গ্রামের জালু মিয়ার ছেলে। পরে খবর এলাকায় পৌছে গেলে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তবে বিক্ষুব্দ গ্রামবাসী ছাত্রলীগ নেতা আলাউদ্দিনের বাড়ি ঘেরাও করে তিতাস থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ৬ ঘাতককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটককৃতরা হলো হলো, মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন (২৬), তার বড় ভাই মো. লিটন মিয়া (৩৩) ও মো. রিপন মিয়া (৩০), গনি মিয়ার ছেলে মো. ধনু মিয়া (৬০) ও তার ছেলে অনিক মিয়া (২১) ও মোহাম্মদ (১৯)। এবং আলাউদ্দিন এর মা,বোন ভাবিদেরকে পুলিশি পাহারায় তাদের ঘরে আটক রাখা হয়েছে।

অভিযোগ পেলে তাদেরও গ্রেফতার দেখানো হবে বলে তিতাস থানা অফিসার ইনচার্জ মো. নুরুল আলম জানান।

সরজমিনে গিয়ে অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, তিতাস উপজেলার সাতানী ইউনিয়নের বারকাউনিয়া গ্রামের মৃত জলিল মিয়া ওরফে জইল্লার ছেলে স্বাক্ষর জ্ঞানহীন আলাউদ্দিন বর্তমান সাতানী ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতা থাকা সত্ত্বেও টাকার বিনিময়ে কুমিল্লা জেলা ও তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকে সন্তুষ্ট করে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ হাতিয়ে নেয়। এরপরই উপজেলার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রভাব খাঁটিয়ে বারকাউনিয়া গ্রামের প্রতিপক্ষ জালু মিয়ার জায়গা দখল করে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করে। এনিয়ে শুরু হয় উভয় পরিবারের মাঝে দ্বন্দ্ব।

&dquote;&dquote;

থানায় একাধিক পাল্টাপাল্টি অভিযোগও রয়েছে। কিছুদিন পূর্বে জালু মিয়ার একটি ঘরে আগুন দিয়ে তাদের উচ্ছেদেও চেষ্টা করাও হয়। তখন একটি গাভি আগুনে পুড়ে মারা যায় এবং কয়েক লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও কোন আইনি সহযোগিতা পাইনি অসহায় জালুর পরিবার কেবল ছাত্রলীগের প্রভাবশালীদের কারণে। 
সর্বশেষ গত ১৭ জুন রবিবার রাত আটটার দিকে জালু মিয়ার ছেলে সুমন ইফতার শেষে মোবাইলে কথা বলতে বলতে বাড়ীর উত্তর পাশের ব্রীজের উপড় আসলে। সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন, তার ভাই রিপন, লিটন, তার মা, বোন ভাবি, চাচা ধনু মিয়া, চাচাতো ভাই অনিক, মোহাম্মদ, যুবরাজ মেম্বারসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা তাদের হাতের রামদা ও চাপাতি ধারা উপোর্যপুরি কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে সুমনকে। সুমনের চিৎকার শুনে তার ছোট তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে সেও এলোপাতারী কোপের আঘাতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। পরে গ্রামবাসি এসে উভয়কেই তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সুমনকে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষনা করে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য সাইদুলকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। 

বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসির দাওয়া খেয়ে সন্ত্রাসীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও সন্ত্রাসী আলাউদ্দিনসহ সবাই তাদের কোটি টাকার বিল্ডিংয়ে আত্মগোপন করে। তখন বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসি বাড়িটি ঘেরাও করে তিতাস থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ৬ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং আলাউদ্দিনের মা বোন ও ভাবিদেরকে পুলিশি পাহারায় রাখা হয়। এ বিষয়ে তিতাস থানা নিহতে চাচাতো ভাই বাবুল বাদি হয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

তিতাস থানা অফিসার ইনচার্জ মো. নুরুল ইলম সংবাদকে বলেন, বারকাউনিয়ায় সিমানা বিরোধ নিয়ে মারামারির ঘটনায় ১জন নিহত হয়েছে। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি। ঘটনাস্থল থেকে ৬জনকে আটক করা হয়েছে। মামলা হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: