শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ১০ জনের ফাঁসি

প্রকাশিত: ২০ আগষ্ট ২০১৭, ১১:৩৮ এএম

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৯ জনকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (২০ আগস্ট) ঢাকার ২নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মমতাজ বেগম বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ওয়াশিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন, মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলান শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই এবং মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।  

বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ সালের ১৫(১) এবিসি/২৫ (ডি) এর ধারায় প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে তাদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত গুলি করে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক।

এছাড়া, মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেওয়া হয়েছে।

খন্দকার কামাল উদ্দিন সাকের, আরিফ হাসান সুমন, মুন্সী ইব্রাহিম, মো. শাহনেয়াজ, মো. লোকমান, মো.  এনামুল হক, মো. মিজানুর রহমান, মো. মওলানা সাব্বির ওরফে আব্দুল হান্নান, মো. মাহমুদ আজহার, মো. আবুল হোসেনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। কোটালীপাড়া হত্যাচেস্টা মামলার মোট আসামি ২৪ জন।

এছাড়া, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৪ ও ৬ ধারায় তাদের দোষী সাব্যস্ত করে ৯ আসামিকে ২০ বছর কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ মামলার মোট আসামি ১৪ জন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মো. ইউসুফ ওরফে মোসহাব ওরফে আবু মুসা হারুন (পলাতক), মো. আনিসুল ইসলাম ওরফে আনিস, মো. মেহেদি হাসান, ওয়াশিম আকতাম, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মো. মাহমুদ আজাহার, মো. রাশেদ ড্রাইভার, মো. শাহনেয়াজ, শেখ মোহাম্মদ এনামুল হক (পলাতক)। দণ্ডপ্রাপ্তরা হরকাতুল জিহাদের সদস্য বলে জানা গেছে।

এ মামলার হাশমত আলী কাজী, আবুল হোসেন খোকন, মুন্সী ইব্রাহীম, মো. লোকমানকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

এরআগে গত বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মমতাজ বেগম এ তারিখ ধার্য করেন। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষে ৬৮ জন সাক্ষী উপস্থাপন করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০০ সালের ২২ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার প্যান্ডেল তৈরির সময় শক্তিশালী একটি বোমা দেখতে পাওয়া যায়। সেনাবাহিনীর একটি দল ৭৬ কেজি ওজনের ওই বোমাটি উদ্ধার করে। পরদিন ২৩ জুলাই ৪০ কেজি ওজনের একটি বোমা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই কোটালীপাড়া থানার পুলিশ হত্যাচেষ্টা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করে।

তদন্ত শেষে ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ২০১০ সালে গোপালগঞ্জ আদালত থেকে মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন মো. মহিবুল্লাহ, মুন্সি ইব্রাহিম, মো. মাহমুদ আজহার, মো. রাশেদ ড্রাইভার, মো. শাহ নেওয়াজ, মো. ইউসুফ, মো. লোকমান, শেখ মো. এনামুল ও মো. মিজানুর রহমান। বাংলাদেশে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর সিলেটে গ্রেনেড হামলা ও তিনজনকে হত্যার মামলায় মুফতি হান্নানের ফাঁসি ইতিমধ্যে কার্যকর হওয়ায় এ মামলা থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ/এএইচআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: