‘সম্পর্ক’! দায়বদ্ধতা নয়, সর্ম্পক, মূল্যবোধের সমন্বয়…

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০১৮, ০২:২৯ পিএম

‘ সম্পর্ক’ শব্দের ব্যাপ্তি বিশাল। এই সর্ম্পকের সৃষ্টি পৃথিবীর আদি লগ্ন থেকে। সর্ম্পক সূক্ষ্ ও জটিলতায় পূরিপূর্ণ। সর্ম্পক তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত কখন জন্মগত, যা পারিবারিক। এই পারিবারিক সর্ম্পক বেড়াজাল থেকে এই সর্ম্পক কখন আন্তজার্তিক, বা আঞ্চলিক, পারিশাশ্বিক, প্রতিষ্ঠানিক সর্ম্পকের পদ মর্যাদায় এসে দাড়ায়। সর্ম্পক কখনও আবার তৈরি হয় সমাজিক, রাজনৈতিক ও মূল্যবোধের আর্বিভাবে।

একটি শিশু যখন জন্ম হয় সে পুরোপুরি অপারগ। মা, বাবা ও পরিবারের অন্যান্য সর্ম্পকের দায়িত্ব ও কত্যর্বের মাধ্যমে শিশুটির বেঁচে থাকা, বেড়ে ওঠা। পারিবারিক চিত্র ভিন্ন হওয়ায় জন্ম নেয়া শিশুটির বেড়ে ওঠার পদ্ধতি বা কৌশল অনেকটাই ভিন্ন। এসব ভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে বেড়ে ওঠা শিশুটি একটা সার্বজনীন কৌশল এ লালিত পালিত হয়। এই কৌশলই হচ্ছে ভালবাসা, মায়া, স্নেহ, শাসন, অনুরাগ, ইত্যাদি। প্রত্যেকটি মানুষ বেড়ে ওঠার সময় মা, বাবা, ভাই, বোন অথবা কারো কারো ভালোবাসা, মায়া, স্নেহ, শাসন, অনুরাগে বড় হয়, বুঝতে শিখে।

এক সময় সে নিজেই তার ভার বহনে উপযোগী। ছোট সদস্যদের প্রতি সকল দায়িত্ব পরিবার অনায়াসে গ্রহন করে তাযে পর্যায়ের পরিবার হোক না কেন। যদি ও এই পারিবারিক সম্পর্ক সমগ্র শিশুর জীবন চিত্র প্রতিফলিত করেন। পারিবারিক পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিশুর যত নেয়া মানুষ গুলো একটা সময় এক অসহায় অবস্থানে গিয়ে দাড়ায়।

এই অবহায়ত্ব কখন তাদের বয়সজনিত, বা, অর্থনৈতিক বা সামাজিক বেড়াজাল বধিত নিরাপত্তাহীনতায় তখন অনেক সময় তাদের প্রতি অনুজদের কর্তব্য সঠিক ভাবে পালিত হচ্ছে না। কর্তব্য পালন তো দূরের কথা, অগ্রজ ব্যক্তিদের বেঁচে থাকাই তখন চরম সংকট। সংকটময় পরিস্থিতি ক্রমেই বেড়ে চলছে। বেড়ে যাচ্ছে বৃদ্ধাশ্রম। মা, বাবাকে সুরক্ষার জন্য আইন ও তৈরি হয়েছে। মা, বাবাকে ভর-পোষণ দিতে সন্তান বাধ্য। এই বাধ্য- বাদকতা যেমন আইনগত তেমনি মূল্যবোধ জনিত। এই আইন থাকা সত্ত্বে ও আমাদের অগ্রজ শ্রেণী আজ সুরক্ষিত নয়। নিয়মতান্ত্রিক জটিলতায় ও তারা সমাজের নিরাপদে আশ্রয়ে নেই। উল্টো পথে হাটছে আমাদের অভিজ্ঞতা।

এই তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের প্রতিনিয়ত সামাজিক চিত্র। বাবা, মায়ের ফ্ল্যাটের জন্য নিজের সন্তান ই তাকে মেরে ফেলছে। সম্পত্তি সন্তানদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য মা, বাবাকে সন্তান প্রহার করছে বা বিষ প্রয়োগ করছে। আরো প্রকৃষ্ট উদাহরণ কোন এক দুর্ভাগা বাবা তার ছেলোকে মোটর বাইক কিনে দিতে পারেনি, তাই সেই ছেলে তার বাবার গায়ে আগুন লাগিয়ে মেরে ফেলেছে। এই ঘটনা করোই অজানা নয়। টেলিভিশনের খবরে ছেলের হাতে বাবা বা মা খুন, অথবা ছেলে বাবাকে কুপিয়ে হত্যার পর প্রতিবেশী তাকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিয়েছে।

এই কালো ছায়া যেন বেড়েই চলেছে ক্রমাগত। এই ছায়া রুখতে হবে। নৈতিক শিক্ষা, মূল্যবোধ, ধর্মীয় অনুশাসন বা সামাজিক বা পারিবারিক শিক্ষা এই অন্ধকার রুলতে পারে। তার সাথে প্রয়োজন ভালবাসার সঠিক মূল্যায়ন, পরিবারের ভালবাসার প্রতিদান ও বটেই। জন্ম নেওয়া শিশুটির জন্য পরিবার যে দায়িত্ব করেচে ও শিশুটি যেন বেড়ে ওঠার পর তার পারিবারিক কর্তব্য যেন না এড়িয়ে যায়। ভালবাসা যেন শুধু নিগামী না হয়, ভালবাসা যেন উগদ্ধগামী ও হয়।

বাবা, মায়ের প্রতি সন্তানের সহিংস আচরণ আর যেন না হয়, এই সমাজে, এই পৃথিবীতে, সময়ের সাথে, প্রবীণের পথে।

লেখকঃ ফারজানা কাশেমী (আইনজীবি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক)

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: