নিবন্ধন পাচ্ছে খিরসাপাত আম
স্বাদ ও জনপ্রিয়তার দিক থেকে আম বাংলাদেশের ফলের রাজা। আর ফলের রাজা আমের রাজধানী হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার খিরসাপাত আম ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে। জিআই পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য ১ বছর থেকে জেলা প্রশাসন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বারি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ যৌথভাবে কাজ করছে।
অবশেষে জামদানি, ইলিশের পর ৩ নম্বরে নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে জনপ্রিয় এই খিরসাপাত জাতটি। কত জাতের আম এই জেলায় উৎপাদন হয়, তা বলা কঠিন। তবে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত জাতের সংখ্যা খুব বেশি নয়। এই জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আম। জেলার প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আম উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ কাজের সাথে জড়িত। দেশের মানুষের সবচেয়ে পছন্দের আম চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম। সুস্বাদু এই জাতটির চাহিদা বিদেশেও অনেক বেশী।
ফলে ২০১৫ সাল থেকে আম রপ্তানি শুরু হয় এবং প্রতি বছর বাড়ছে এই খিরসাপাত আম রপ্তানির পরিমাণ। ভৌগলিক নির্দেশক পণ্যর জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে পণ্য নির্বাচন করা হয় আমকেই। বর্তমানে এই জেলার বাণিজ্যিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি আমকে ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির আবেদন করা হয়। জাতগুলো হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত, ল্যাংড়া ও আশ্বিনা। অবশেষে খিরসাপাত আমের জাতটি ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে। খুব কম সময়ের মধ্যেই দাপ্তরিক কাজ শেষ হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র সুত্রে জানা গেছে, জাতটির যে সব বৈশিষ্ট বিবেচনায় এনে আবেদন করা হয়েছিল, তা হচ্ছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম উৎকৃষ্ট জাতসমূহের মধ্যে একটি মধ্যম মৌসুমী এবং খুবই জনপ্রিয় বাণিজ্যিক জাত। ফল মাঝারি আকারের এবং অনেকটা ডিম্বাকৃতির। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে এ ফল গড়ে লম্বায় ৮.৬ সেঃমিঃ পাশে ৭.৫ সেঃমিঃ, উচ্চতায় ৬.০ সেঃমিঃ এবং গড়ে ওজন হয় ২৬৩.৯ গ্রাম। পাঁকা ফলের ত্বকের রং সামান্য হলদে এবং শাঁসের রং হলুদাভাব।
শাঁস আঁশবিহীন, রসাল, গন্ধ আকর্ষণীয় ও বেশ মিষ্টি। গড় মিষ্টতা ২৩%। ফলের খোসা সামান্য মোটা ও শক্ত এবং আঁটি পাতলা। আঁটি গড়ে লম্বায় ৭.০ সেঃমিঃ, পাশে ৪.০ সেঃমিঃ, পুরুত্ব ২.০ সেঃমিঃ এবং গড় ওজনে ৪০.০ গ্রাম হয়ে থাকে। গড়ে ফলের খাওয়ার উপযোগী অংশ শতকরা ৬৭.২ ভাগ। জ্যৈষ্ঠ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে খিরসাপাত আম পাকা শুরু হয়। ফল পাড়ার পর পাকতে প্রায় ৫ থেকে ৭ দিন সময় লাগে। ফলন খুবই ভাল তবে অনিয়মিত।
ফল পরিপক্ব হতে (ফুল আসা থেকে) প্রায় চার মাস সময় লাগে। এ জাতের আমের পুরুষ ও উভয়লিঙ্গ ফুলের আনুপাতিক হার যথাক্রমে শতকরা ৯১.০ ও ৯.০ ভাগ। এ জাতের গাছ ছড়ানো প্রকৃতির। উচ্চতা প্রায় ১০ থেকে ১১ মিটার। একান্তর ক্রমিক ফল দেয়। পাতা মধ্যম আকৃতির এবং বল্লম আকৃতির। পাতার বোঁটা লম্বায় ৪-৫ সেঃমিঃ, পত্র ফলক লম্বায় ২২-২৩ সেঃমিঃ এবং চওড়ায় ৫-৬ সেঃমিঃ, কচি পাতার রং সবুজ এবং পাতার আগা সূচালো। পুষ্পমঞ্জরি টার্মিনাল, আকৃতি পিরামিডাল, সাইজ বড়, দৈর্ঘ্যে ৩২ সেঃমিঃ, প্রস্থে ১৯ সেঃমিঃ, ফুল উভলিঙ্গ।
এব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরফ উদ্দিন এর মতামত জানাতে গিয়ে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার খিরসাপাত আম ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাবাসী এবং আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের জন্য এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। এর ফলে দেশে এবং বিদেশে খিরসাপাত জাতটির চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পাবে। জেলার আম চাষীরা অর্থনৈতিকভাবে অনেক লাভবান হবেন।
বিডি২৪লাইভ/ এসএস
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: