৭ নম্বর ধারা বাতিল নিয়ে বিএনপির ব্যাখ্যা

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১১:৪০ পিএম

উন্মাদ, দেউলিয়া, দণ্ডপ্রাপ্ত বা দুর্নীতিগ্রস্ত বলে সমাজে পরিচিতি আছে - এমন কেউ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসতে পারবে না, বলে দলের সংবিধানে যে ধারাটি ছিল, সেই ৭ নম্বর ধারা বাতিল করে সংশোধিত গঠনতন্ত্র নির্বাচনের কমিশনে জমা দিয়েছে বিএনপি।

এটি তারা করেছে দলের নেত্রী খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলা রায়ের কয়েকদিন আগে।

এই পরিবর্তনের কথা প্রকাশিত হওয়ার পর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, বিএনপির কড়া সমালোচনা করছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কাউন্সিল না করে হঠাৎ দলীয় সংবিধানের এমন একটি ধারা বাতিল করে বিএনপি প্রমাণ করেছে তারা দুর্নীতিবাজদের একটি দল।

বিএনপি কেন তাদের গঠনতন্ত্র থেকে নৈতিকতা সম্পর্কিত এমন একটি ধারা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিলো- এই প্রশ্নের জবাবে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার কথা বিবেচনা করেই তাদেরকে এটা করতে হয়েছে।

"এটা না করলে বিএনপি করার লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ এই সরকার সবাইকে এভাবে দণ্ডিত করার জন্যে ব্যবস্থা নিয়ে নিয়েছে। আমাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা," বলেন মি. আলমগীর।

মি. আলমগীর জানান, তাদের গঠনতন্ত্রে এই পরিবর্তন এখন আনা হয়নি। এই পরিবর্তন আনা হয়েছে ২০১৬ সালে।

তিনি বলেন, তাদের উপর যে 'অত্যাচার ও নিপীড়ন' চলছে তার প্রেক্ষিতেই তাদেরকে এই পরিবর্তন আনতে হয়েছে।

"২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সম্মেলনে গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্যে তরিকুল ইসলামে নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। তখনই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে," বলেন তিনি।

মি. আলমগীর বলেন, বর্তমান সরকার তাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যেভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা করছে তাতে তাদেরকে এই কৌশলের আশ্রয় নিতে হয়েছে।

"একটি ফ্যাসিস্ট সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে এবং তারা যখন অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিকে স্বাভাবিক নিয়মেও কাজ করতে দেয় না তখন আমাদেরকেও কিছু একটা ব্যবস্থা নিতে হয়।"

তিনি বলেন, বিএনপির সব সিনিয়র নেতা এমনকি গ্রাম পর্যায়ের নেতাদের নামেও মামলা করা হয়েছে। সেকারণে দলের ভেতর থেকেই দাবী উঠেছে গঠনতন্ত্রে এই পরিবর্তন আনার।

২০১৬ সালে বিএনপির গঠনতন্ত্রে এই পরিবর্তন আনা হলেও নির্বাচন কমিশনের কাছে এই গঠনতন্ত্র জমা দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি। এতো সময় লাগলো কেন?

&dquote;&dquote;

এই প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, "এখানেও ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে পরিবর্তিত গঠনতন্ত্র জমা দিতে আমাদের কিছুটা বিলম্ব হয়েছে মামলা মোকদ্দমাসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে।"

বাস্তবতার পরিবর্তন ঘটলে আবারও বিএনপির গঠনতন্ত্রে এই ৭ নম্বর ধারাটি ফিরিয়ে আনা হবে কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "নিঃসন্দেহে এটাই স্বাভাবিক হবে।"

"গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনুন। আইনের শাসন ফিরে আসুক। বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন হউক। তাহলেই সবকিছু হবে," বলেন তিনি।

ক্ষমতাসীন দলের সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মুখে নৈতিকতার স্খলনের কথা শোভা পায় না। গোটা দেশটাকেই তারা নৈতিকতার বাইরে নিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনই ছিলো সম্পূর্ণ অনৈতিক একটি নির্বাচন। সংবিধান পরিবর্তন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বাদ দেওয়ার ঘটনাকেও তিনি নৈতিকতাবিরোধী বলে উল্লেখ করেন।

তিনি প্রশ্ন করেন, ১৫৪টি আসনে যখন বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এমপিদের নির্বাচিত ঘোষণা করা হয় তখন নীতি নৈতিকতা কোথায় ছিলো? সূত্র: বিবিসি।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: