‘ডাক্তার আপা আমি বাঁচবো তো?’

প্রকাশিত: ২৮ জুলাই ২০১৯, ০৪:৩৫ পিএম
রাজধানী ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে রোগী দেখছেন দুই জন মহিলা ডাক্তার। এরই মধ্যে বেশ কয়েক জন মিলে মো. হামিদুল (৩২) নামে এক রোগীকে ধরে নিয়ে আসছেন। মহিলা ডাক্তারের সামনের চেয়ারে বসার সাথে সাথে রোগী বলে উঠলেন, ‘ডাক্তার আপা আমি বাঁচবো তো?’ সবাই একটু থমকে গেলেন। সেখানে উপস্থিত সকলের নজর তখন তার উপর। এরপর ডাক্তার রোগীর কথপোকথন চলতে থাকে। জানা গেছে, পাবনা জেলার চাটমোহর থানা থেকে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন মো. হামিদুল (৩২) তিনি বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বর, মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথাসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ছুটে এসেছেন ঢাকায়। ডাক্তার দেখানো শেষে বিডি২৪লাইভ’র স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আরেফিন সোহাগের সাথে কথা হয় মো. হামিদুল ও তার পরিবারের লোকের সাথে। এসময় হামিদুল বলেন, আমি কিছু খেতে পারছি না। এক সপ্তাহ ধরে শরীরে ব্যথা হচ্ছে। এলাকার ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়েছি কিন্তু কোন উপকার পাইনি। তাই আজ সকালে ঢাকা এসেছি। আমাকে ডাক্তার আপা দেখলেন। তিনি বলেলেন আমার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে কিনা তা দেখতে হবে। এখন রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। হামিদুলের সাথে আসা তার ভাই এরশাদ হোসেন বলেন, আমাদের এলাকায় (পাবনা) ছোট বাচ্চারাও এই জ্বরে ভুগছে। আমার ভাইকে আজ হাসপাতালে আনলাম। দেখি রক্ত পরীক্ষার পর কি বলে ডাক্তার। আমরা গ্রাম থেকে একটু উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাতে আসি। অন্যদিকে, মানিকগঞ্জ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর বাবা বলেন, আমার মেয়ের ডেঙ্গু হয়েছে কিনা তা পরিক্ষা করতে এসে শুনলাম ডে্গেু হয়েছে। এখন আমাদের ভর্তি থাকতে হবে। ডেমরা থেকে আসা সোহেল নামের এক রোগী বলেন, আমি তিন চার দিন ধরে শরীরের ব্যথায় ভুগছি। আমাকে আজ ভর্তি করেছে। আমার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে। পুরো হাসপাতালের ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, ভর্তি হওয়া ৮০% রোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। রাজধানী ঢাকার মতো দেশের অন্যান্য জেলাতেও ডেঙ্গু রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে। এ পর্যন্ত নয়টি জেলায় ১২৩ জন রোগী শনাক্ত হবার তথ্য পাওয়া গেছে। ফলে সবার মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়ে ঘরে ফিরে গেছেন আবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। তবে এদের বেশিরভাগই ঢাকা থেকে জ্বর নিয়ে এলাকায় গিয়ে ডেঙ্গু হয়েছে বলে জানতে পারেন। এ বিষয়ে ডাক্তার নাসরীন সুলতানা বলেন, আমাদের এখানে বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী বেশি আসছে। এটি সারাদেশে মহামারি আকার ধারণ করেছে। ডেঙ্গু জ্বর ভয়ানক খারাপ পর্যায়ে চলে গেলে ব্লাড প্রেশার দ্রুত কমতে থাকে। রোগী শকে পর্যন্ত চলে যায়। হৃৎপিণ্ড, লিভার, কিডনি ফেইলর হয়ে রোগী মারাও যায়। তিনি বলেন, ডেঙ্গু জ্বর ছোট-বড় সবার জন্য হুমকিস্বরূপ। ছোটদেরও ডেঙ্গু জ্বর হয়। ডেঙ্গু জ্বর একধরনের ভাইরাসজনিত জ্বর। ডেঙ্গু জ্বরের এ খারাপ অবস্থাকে বলে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম। এ অবস্থায় রক্তপাতও হয়। নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত পড়া, মলের সাথে রক্ত, বমির সাথে রক্ত যেতে পারে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: