ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে। তিনটি ছাত্র হলে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৫ ও ১০ টাকা বেশি নিচ্ছেন ডাইনিং ম্যানেজাররা। তবে অন্য হলগুলোত নির্ধারিত ২৫ টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে এসব খাবার। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাইনিং ম্যানেজাররা। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন ওই তিন হলের প্রভোস্ট।

এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। সেই সাথে ডাইনিংয়ের খাবারের পুষ্টিমান নিশ্চিতে হল কর্তৃপক্ষের তদারকিও নেই বলে জানান তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি হলের সকালের খাবারের মূল্য তালিকা বেঁধে ১৫ ও ২৫ টাকা। তবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, সাদ্দাম হোসেন হল ও লালন শাহ হলে ২৫ টাকার খাবার ৫ টাকা বাড়িয়ে ৩০ টাকা করেছেন ম্যানেজাররা। এদিকে পূর্ব নির্ধারিত দুপুর ও রাতের খাবারের দাম সর্বোচ্চ ৪০ টাকা নির্ধারণ করেছিল প্রভোস্ট কাউন্সিল। তবে মান ভালো দাবি করে কোনো কোনো হলে সেই খাবার ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন ম্যানেজাররা। এছাড়া ডিমের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েকটি হলে খাবারের সাথে ডিম না দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, বাজারে ডিমের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে কয়েকটি সকালের খাবারের দাম বাড়িয়েছেন ম্যানেজাররা। অথচ যখন ডিমসহ অন্যান্য পণ্যের দাম কমে তখন খাবাবের দাম কমানো হয় না। বিষয়টি হল কর্তৃপক্ষকে তদারকি করার দাবি জানাচ্ছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, একই পাত্রের খাবার থেকে কিছু অংশ আলাদা করে দাম বাড়ানো হয়। মাছ-মাংসের বড় টুকরাগুলো আলাদা করে ১০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করেন ম্যানেজাররা। প্রশাসন কর্তৃক মূল্য নির্ধারণ করে মূল্য তালিকা প্রকাশ করা জরুরি মনে করি।

সাদ্দাম হোসেন হলের ডাইনিং ম্যানেজার তোতা মন্ডল বলেন, বাজারে ডিমের দাম ১৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাই সকালের খাবারে প্রভোস্টের সাথে কথা বলে পাঁচ টাকা বাড়িয়েছি। এছাড়াও ৩০ ও ৪০ টাকার খাবার চালু রয়েছে। খাবারের মান ভালো হওয়ায় কিছু খাবার ৫০ টাকায় করা হচ্ছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, এরূপ মূল্য বৃদ্ধি অপ্রত্যাশিত। বিষয়টি আমি অবগত নই। নতুন মূল্য নির্ধারণ না হলে তারা দাম বৃদ্ধি করতে পারে না।

প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি ও সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত খাবারের দাম বাড়ানোর কথা নয়। আমি তাদেরকে (ম্যানেজার) ডেকে আগের দামে খাবার বিক্রয় করতে বলব। তাছাড়া বাজার মূল্যের উঠানামার বিষয়ে সজাগ থাকতে আগামীতে একটি কমিটি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তাহলে তদারকি করা সহজ হবে।

তিনি আরো বলেন, আমি একাধিক রকমের খাবার পরিবেশনের পক্ষে নই। এতে স্বল্প মূল্যের খাবারের মান আরো কমে যায়। তাই সকল প্রভোস্টকে নিয়ে আলোচনা করে খাবারের মূল্য নির্ধারণ করা হবে।