বাবা মা এক অমূল্য ধন। সন্তানের মঙ্গলের জন্য বাবা মা জীবন দিতে ও প্রস্তুত থাকে। সন্তানকে ভালো রাখার জন্য কতই না ত্যাগ তিতিক্ষা থাকে বাবা মায়ের। কিন্তু সেই সন্তান যদি মানুষ না হয়ে অমানুষ হয়? এমনই এক করুণ পরিণতি হয়েছে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ভাওয়াল গ্রামের মৃত মজিদ মাতুব্বরের ছেলে আব্দুল খালেকের (৬১)। 

প্রায় ১৪ বছর ধরে প্যারালাইজড হয়ে অসুস্থ অবস্থায় ঘরে পড়ে থাকেন খালেক। কারও সহযোগিতা ছাড়া করতে পারেন না হাঁটাচলা। ভাই-বোন ও দুই ছেলে সন্তান থাকলেও তার অসুস্থ জীবনে পাশে থাকে নাই কেউ।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৩০ মে) অসুস্থ খালেককে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে ফেলে রেখে যান তার স্বজনরা। তার দুটি ছেলে সন্তান থাকলেও অসহায় বাবার পাশে থাকেনি কেউ। সোমবার (৩ জুন) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাকে একটি বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেন।

প্রসঙ্গত, ১৪ বছর আগে দ্বিতীয় স্ত্রী মারা যাওয়ার পর প্যারালাইসড হয়ে শরীরের এক পাশ অকেজো হয়ে পড়ে। তখন বসতভিটা যা ছিল তা বিক্রি করে চিকিৎসা হওয়ায় জমিজমা ও সম্পদ বলতে কিছুই নেই। 

দুই ছেলে আলমগীর মাতুব্বর (৪০) ও কলম মাতুব্বর (৩৫)  বিয়ে করে রাজবাড়ি জেলায় তাদের শ্বশুরবাড়িতে থাকে। তারাও খোঁজ-খবর নেয়নি জন্মদাতা পিতার। ভাই-বোনেরা সবাই আর্থিকভাবে সচ্ছল হলেও সেখানে আশ্রয় মেলেনি আব্দুল খালেকের। সব শেষে আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে আশ্রয় নেয় আব্দুল খালেক। সেখানে দুই বছর থাকার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন গত বৃহস্পতিবার তাকে ফেলে রেখে যান উপজেলা চত্বরে।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আব্দুল খালেক নামে একটা বৃদ্ধকে তার স্বজনরা উপজেলায় ফেলে যায়, তাকে উদ্ধার করে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। তার দুটি ছেলে আছে, তবে তারা এলাকায় থাকে না, রাজবাড়িতে থাকে এবং তার ছেলেদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।