• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৫ ঘন্টা পূর্বে
ইসমাইল হোসেন রবিন
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৭ জুন, ২০২৪, ০৭:০৫ বিকাল
bd24live style=

টার্গেট ছিল আমার স্বামী, লুটে নিলো টাকা-স্বর্ণ

ছবি: প্রতিনিধি

কী অপরাধ ছিল আমার স্বামীর? সেই রাজনীতি করে, এটা কি তার অপরাধ? মাদককারবারি, জুয়াড়ি ও গরু-মহিষ চোরদের বিরুদ্ধে কথা বলা কি অপরাধ? তিনিতো কখনো মানুষের ক্ষতি করেননি। তার বিরুদ্ধে এমন একটি অভিযোগ কেউ দিতে পারবে না, সেই খারাপ। আমাদের বিলাসবহুল বাড়ি নেই। অবৈধ টাকা নেই। আজ আমার স্বামীর জীবনের কাল হচ্ছে গ্রামের গরু-মহিষ চোর ও মাদক-জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলায়।

শুক্রবার (৭ জুন) দুপুরে নিজ ঘরে সাংবাদিকদের উপস্থিতি পেয়ে কান্না জনিত কণ্ঠে কথাগুলো বলেন লতিফা বেগম (২৮) নামে এক নারী। লতিফা বেগম সদর উপজেলার চর রহমনী মোহন ইউনিয়নের সাবেক যুবলীগের আহ্বায়ক মো. হারুনুর রশিদ মোল্লার স্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে ওই ইউনিয়নের উত্তর চর রহমনী গ্রামের মোল্লা বাড়ির হারুন মোল্লার ঘরে একদল দুষ্কৃতকারী হানা দেয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে। তাদের উপস্থিতির টের পেয়ে প্রাণের ভয়ে ঘর থেকে যুবলীগ নেতা হারুন মোল্লা সটকে পড়েন।

ভুক্তভোগী হারুন মোল্লার স্ত্রী আরও বলেন, গত কয়েকদিন ধরে তার স্বামী হারুন মোল্লা গ্রামের গরু, মহিষ চোর, ভূমিদস্যু, মাদক কারবারি ও জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলছেন।

এজন্য অপরাধীদের বিশাল একটি শক্তি গতরাতে আমার (স্বামী) হারুন মোল্লাকে টার্গেট করে ঘরে হানা দেয়। তাদের উপস্থিতি দেখে হারুন মোল্লা ঘর থেকে কৌশলে বের হয়ে যান।

তারা আমার স্বামী হারুন মোল্লাকে না পেয়ে আমাদের বৌ-শ্বাশুড়িকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে। ভাঙচুর করে পুরো বসতঘর ও আসবাবপত্র। তছনছ করে আলমারিতে থাকা কাপড়চোপড়। লুটে নেয় নগদ ১৫ লক্ষ টাকা ও ৭ ভরি স্বর্ণালংকার।

খবর পেয়ে রাতেই সদর মডেল থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস আই) মোবারক হোসেন ও নরুল ইসলাম সঙ্গী ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন না করলেও যুবলীগ নেতা হারুন মোল্লার বাড়ির সামনে পর্যন্ত গেলেন চর রহমনী মোহন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল।

যুবলীগ নেতা হারুন মোল্লার মা আনোয়ারা বেগম সাংবাদিকদের জানান, যারা আমার হারুনকে মারতে এসেছে। আমি তাদের অনেকেই চিনছি। তারা আমাদের প্রতিবেশী। ওরা গ্রামে মানুষের গরু মহিষ চুরি করে। তাঁদের অত্যাচারে জনগণ একেবারে অতিষ্ঠ। তাদের বিরুদ্ধে আমার ছেলে প্রতিবাদী হয়ে দাঁড়িয়েছে কি জন্য। তাই তারা আমার ছেলেকে খুন করতে এসেছে। তারা হারুনকে না পেয়ে ঘর ভাঙচুর করছে। নগদ ১৫ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটে নেয়।

ভুক্তভোগী যুবলীগ নেতা হারুন মোল্লা জানান, তিনি প্রাণের ভয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যান। ঘরে মা-স্ত্রী ও ৫ বছরের শিশুপুত্র মেহেদী হাসানকে রেখে। একটু আড়াল থেকে দেখলেন হামলাকারী তার ঘরের ভেতর ও বাহিরে ব্যাপক ভাঙচুর করার দৃশ্য। লুটে নিলো নগদ ১৫ লাখ টাকা ও ৭ ভরি স্বর্ণ অলংকার। ১৫ লাখ টাকা কোরবানি ঈদে গরু-মহিষের ব্যবসা করার জন্য ঘরে এনে এ টাকাগুলো রাখা হয়।

স্থানীয় শাহ আলম, রব, এফরান, সাদ্দাম, সিকান্দার, কাজল, আল-আমীন, সাইফুল, দাদন মৃধাসহ ১৫ থেকে ২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ একটি গোষ্ঠী হারুন মোল্লার ঘরে হামলা ও লুটপাটে সরাসরি জড়িত ছিল বলে ভুক্তভোগী হারুন মোল্লার অভিযোগ।

তিনি আরও বলেন, টানা ৮-১০ বছর যুবলীগের ইউনিয়ন দায়িত্ব পালন করছেন। কখনও তার সঙ্গে দুই কথা হয়নি কারো সঙ্গে। গত কয়েক মাস ধরে তার নিজ গ্রামসহ আশপাশ গ্রামে হঠাৎ গরু-মহিষ চুরির সংখ্যা বেড়েই গেছে। তখনকার সময় ইউনিয়ন পরিষদ ১৮ চোর শনাক্ত করে। এ নিয়ে একটি রেজুলেশন করা হয়েছে। গ্রামবাসীর উদ্যোগে চোরদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। ওই থেকেই চোর চক্রের সদস্যরা তার ক্ষতির চেষ্টা করে আসছে বলে অভিযোগ তার।

জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল সাংবাদিকদের বলেন, হারুন মোল্লা তার ঘরে হামলা ভাঙচুর হয়েছে বিষয়টি জানিয়েছে। তাই দেখতে আসলাম কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যখন দেখলাম হারুন মোল্লা আমাকে দেখে সেই লক্ষ্মীপুর শহরে চলে গেল। তখন আর বাড়িতে যাওয়া হয়নি।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, হারুন মোল্লার বাড়িতে ভাংচুরের ঘটনা শুনে রাতেই পুলিশ পাঠানো হয়েছে ঘটনাস্থলে। ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে লিখিত ভাবে জানানো হলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, চররমনী মোহন ইউনিয়ন পরিষদে সম্প্রতি পরিষদ চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়ালের নেতৃত্বে একটি জরুরি বৈঠক করা হয়। ওই বৈঠকে ১৮ চোরকে শনাক্ত করে একটি রেজুলেশন করা হয়।

বিষয়টি সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

পরিষদের প্যাডে ১৮ চোর চক্রের সদস্যের নাম রেজুলেশন করা হয়। তারা হলেন— সফিক মোল্লা, কামাল মোল্লা, শাহিন, হারুন সর্দার, ফরহাদ, সাইজ উদ্দিন, শিপন,এফরান মোল্লা, আমির হোসেন, ফারুক, সাদ্দাম, হোসেন, রফিক গোলদার, মুরাদ, রাকিব হোসেন, দাদন মৃধা, সবুজ ও ইয়াছিন।

বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তখন দাবি করছেন- এ চোর চক্রের নেপথ্যে শাহজালাল মোল্লা ওরফে লেকু মোল্লাও ছিলেন। বর্তমানে লেকু মোল্লা শিশু লামিয়া হত্যা মামলায় কারাবন্দি রয়েছেন। এখন ওই-এলাকায় গরু-মহিষ চুরি বন্ধ রয়েছে।

 

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com