ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য নব-নির্মিত ডরমেটরি-২ এর কাজ শেষে হয়েছে ২০২২ সালের জুন মাসে। নির্মাণকাজ শেষের দুই বছর পেরোলেও এখনও কক্ষ বরাদ্দ দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনের কক্ষ বরাদ্দে দীর্ঘসূত্রিতার ফলে শিক্ষক-কর্মকর্তারা অবৈধভাবে দুই কক্ষবিশিষ্ট ১৬টি বাসা দখলে নিয়েছেন নিজেদের মতো করে। এমনকি গত এক বছর ধরে কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই সেখানে অবস্থান করছেন তারা। এতে অবস্থানকারী শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল বাবদ বকেয়া রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা। তবে টাকা আদায়ে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না প্রশাসন। এদিকে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষের পর সেটি প্রশাসনকে হস্তান্তর করে দিয়েছে বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দফতরের। তবে প্রশাসন বলছে প্রকৌশল দফতর থেকে লিখিতভাবে এই ভবন হস্তান্তর করা হয়নি।
জানা গেছে, ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হলে কক্ষ বরাদ্দ পেতে বাসা বরাদ্দ কমিটির কাছে আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। তবে এক বছরের মাথায়ও কক্ষ বরাদ্দ না দেয়ায় গত বছরের ২১ জুন তালা ভেঙে ওই ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলার ১৬টি বাসা নিজেদের দখলে নেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। কক্ষ বরাদ্দের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বরাদ্দ না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ দখলকারীদের।
এদিকে সেখানে অনুমোদিত কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা না থাকায় কোন প্রকার বিদ্যুৎ বিল তুলতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দফতর। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে নোট দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান মেলেনি বলে অভিযোগ দফতরটির। বিদ্যুৎ বিল বাবদ লক্ষাধিক টাকা বকেয়া হয়েছে বলে জানায় দফতরটি।
অন্যদিকে বিগত এক বছরের দখলকৃত কক্ষের কোনো ভাড়া তুলতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট দফতর জানায়, এসব বাসার মাসিক ভাড়া ১৭৫০ টাকা। সে হিসাবে এক বছরে ৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ভাড়া বকেয়া পড়েছে এসব বাসায়। তবে এক বছরেও এসব বাসার ভাড়া উত্তোলন ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাসা বরাদ্দের বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
বাসা দখলকারী এক কর্মকর্তা বলেন, ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল নেয়ার জন্য কোনো নির্দেশনা দেয়নি প্রশাসন। আমরা অবৈধভাবে এখানে থাকতেও চাই না, কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসন কর্তৃক বাসা বরাদ্দের জন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। তারা আমাদের নামে বাসা বরাদ্দ না দিলে আমরা বাসা ছেড়ে চলে যাব। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তটা তো প্রশাসনকে দিতে হবে।
এস্টেট শাখার প্রধান শামসুল ইসলাম জোহা জানান, ‘তালা ভেঙে ডরমেটরিতে বাসা দখলের পরই এস্টেট শাখা থেকে প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন সংগঠনের ভূমিকার কারণে প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ভিসি স্যার কয়েকদিন আগে প্রধান প্রকৌশলী ও এস্টেট প্রধানকে ডেকেছিল। তিনি আমাদেরকে ওই শিক্ষক-কর্মকর্তাদের লিস্ট দিতে বলেছে। আমরা তা জমা দিয়েছি।
তবে এ ব্যাপারে এস্টেট ও প্রকৌশল দফতর কর্তৃক অবগতির বিষয়টি অস্বীকার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও বাসা বরাদ্দ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, প্রকৌশল দফতর বা এস্টেট শাখা থেকে আমাদের কাছে লিখিতভাবে এই ভবন হস্তান্তর করা হয়নি। ওখানে কে উঠেছে বা অবস্থান করতেছে তা আমাকে লিখিতভাবে জানানো হয়নি। এস্টেট অেফিস লিখিতভাবে আমাকে জানালে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।
সর্বশেষ খবর