মাঠ পর্যায়ে সরকারের দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন ও জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ডিসিদের হাতে। আর সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে ড. বদিউল আলমের মত একজন জনবান্ধব জেলা প্রশাসককে কাছে পেয়ে নরসিংদীর জেলাবাসী আজ গর্বিত। নিন্ম স্তর থেকে উচ্চ স্তর সর্ব স্তরে রয়েছে তার জয়গান। তিনি নরসিংদীতে যোগদানের পর সর্ব ক্ষেত্রে অমুল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছেন। ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হওয়া বদিউল আলম কর্মময় জীবনে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। নরসিংদী বাসীকে হৃদয়ের থেকে ভালোবেসে সকলের কাছে আজ একজন ভাল ও উচ্চ মনের মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। সকল শ্রেণী পেষার মানুষ সরাসরি একান্ত দেখা করার সুযোগ রয়েছে তার কাছে। যে কোন সমস্যায় তিনি গুরুত্বসহকারে সমাধানের চেষ্ঠা করেন বিধায় প্রতিনিয়ত তার দপ্তরে দেখা যায় দূরদূরান্ত থেকে আসা অনেক অসহায় মানুষ। পাশাপাশি তিনি জেলাবাসীর সম্মান রক্ষায় করেছেন সম্মান জনক কাজ। সবমিলিয়ে বদলে যাচ্ছে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের চিত্র। নরসিংদী জেলা প্রশাসনের সার্বিক চিত্র নিয়ে আমাদের প্রতিনিধি সাথে কথা বলেছেন জেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আমাদের নরসিংদী প্রতিনিধি,তারেক পাঠান। পাঠকদের জন্য সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হল।
তিনি নরসিংদীতে যোগদানের পরপর শতভাগ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে স্বচ্ছতার সাথে রাজস্ব প্রশাসনের ৩৮ জন অফিস সহায়ক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করার ১ মাসের মধ্যে শেষ করেন। এর আগে বেশ কয়েকবার জটিলতার কারণে এই নিয়োগের কার্যক্রম স্থগিত ছিল। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত শেখেরচর-বাবুরহাট- বাজারে ব্যবসায়ীগণের পুনর্বাসনে উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি। জাঁকঝমকর্পূণ পরিবেশে ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর পৃথক দুটি প্রোগ্রামে নরসিংদীর ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সারকারখানা উদ্বোধন ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন করেন। নরসিংদী মুক্ত দিবস ১২ ডিসেম্বর জেলাবাসীর মাঝে চিরস্মরণীয় রাখতে ও তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করতে আয়োজন করেন বিশাল বিজয় কনসার্ট। এতে দেশের নামিদামি সেরা ব্যান্ড ও সঙ্গীতশিল্পী অংশ করেন। শুধু তাই নয়, প্রাতিষ্ঠানিক কারিকুলামের পাশাপাশি নরসিংদীর শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার আগ্রহ বাড়াতে শুরু করেন জেলা প্রশাসক বৃত্তি পরীক্ষা। এতে জেলার ২৬৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২৮৭ জন মেধাবী পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করেন। এরপর ২৩ জন ছাত্র-ছাত্রীকে মেধা বৃত্তি প্রদান করা হয়। এ ছাড়া স্মার্ট নাগরিক অর্জনে শারীরিক ও মানুসিকভাবে সুস্থ রাখতে জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ব্যাডমিন্টনটুর্নামেন্টে চালু করেন তিনি। এতে সিঙ্গেল ও ডাবল দেশি-বিদেশি ৬৬টি টিম অংশগ্রহণ করেন। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সেবা প্রত্যাশীদের সুবিধার জন্য ‘ফার্স্ট এইড কর্নার’ স্থাপন করেন।
এক যুগ পর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে নরসিংদীর মানুষের মাঝে বই পড়ার চর্চা ছড়িয়ে দিতে বইমেলায় ঢাকা ও স্থানীয় প্রকাশনীসহ ৬৮টি প্রতিষ্ঠান প্রায় শতাধিক স্টলে তাদের প্রদর্শনী তুলে ধরেন। বর্তমান সরকারের দেড় দশকের উন্নয়ন কার্যক্রমসমূহ নিয়ে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় নরসিংদী’ নামে একটি প্রকাশনা উন্মোচন করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে “রমজানে সাশ্রয়ী বাজার ব্যবস্থা চালু করেন। জাতীয় দিবসগুলো যথাযথ- মর্যাদায় জাঁকঝমকর্পূণ পরিবেশে আয়োজন করেন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় জাতীয় সাংসদ নির্বাচন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে বাস্তবায়নে কাজ করেছেন তিনি। তীব্র তাপদাহে জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে জেলাজুড়ে সুপেয় পানিপান ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করেন। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা প্রতিভাবান ক্ষুদে বিজ্ঞানী ও উদ্ভাবকদের উৎসাহ প্রদান ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে আয়োজন করেন বিজ্ঞান মেলা। জুম্মা নামাজ পড়তে গিয়ে এক অসহায় দরিদ্র পরিবারের এক মাত্র উর্পাজনের সম্বল অটোরিকশা চুরি হয়। এ খবর জেলা প্রশাসকের কানে পৌঁছালে তাকে একটি নতুন অটোরিকশা কিনে দেন তিনি। প্রশাসনের সাথে জনসাধারণের দূরত্ব কমিয়ে এনে জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে কাজ করছেন তিনি। আর এসব কর্মকান্ড নরসিংদী বাসীকে ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করেন জেলাবাসী। এমন অনেক অসংখ্য উন্নয়ন মূলক কাজ করেছেন জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম ।
জেলার বিভিন্ন সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমনকি সামাজিক ও সচেতন মহলের ব্যক্তিবর্গসহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালিব পাঠানের সাথে কথা বললে ওনারা জানান, জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম খুবই দ্বায়িত্বশীল। জেলাবাসীর দৃঢ় বিশ্বাস আগামী দিন গুলোতে এ জেলার উন্নয়নে অগ্রনী ভূমিকা পালন করবেন এই জনবান্ধব জেলা প্রশাসক।
জানা যায়, জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব পদে দায়িত্ব পালন করেন। মেধাবী এই কর্মকর্তা কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের মৃত শফিউল আলম ও নুরনাহার বেগমের সন্তান। শিক্ষা জীবনে তিনি ১৯৯৫ সালে খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন । পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে চট্রগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি অনার্স সহ এমএলএম সম্পন্ন করেন।
পরবর্তীতে তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির ম্যাককুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় এর ফ্যাকাল্টি থেকে ‘জলবায়ু অর্থায়ন’ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর জাপানের ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিপ্লোমা এবং জাপানের কিউশু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেন। চাকরি জীবনের শুরুতে তিনি কিছু সময় চট্রগ্রামের প্রিমিয়াম ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে অধ্যাপনা করেন। পাশাপাশি তিনি চট্রগ্রাম বারে আইনজীবী হিসেবে ও কাজ করেন। এর পরে তিনি ২০০৮ সালে বিচার বিভাগে সহকারী জজ হিসেবে ঢাকা জজশিপে যোগ দেন। পরবর্তীতে ২৭ তম বিসিএস-এর অ্যাডমিন ক্যাডারে নিয়োগ পেয়ে প্রশাসন ক্যাডারে কর্মজীবন শুরু করেন। চাকরী জীবনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালকসহ বিভিন্ন পদে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন ড.বদিউল আলম ।
সর্বশেষ খবর