• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৩ মিনিট পূর্বে
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮ জুন, ২০২৪, ০৬:৪৯ বিকাল
bd24live style=
উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অকার্যকর-

থামছে না সৈকতের ইসিএ-তে বহুতল ভবন নির্মাণ; প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন 

ছবি: প্রতিনিধি

কক্সবাজারে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) রক্ষায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে। সৈকত তীরের কলাতলী অংশে নির্মাণাধীন স্থাপনায় অভিযানের পর রহস্যময় কারণে ফের পুরোদমে চলছে নির্মাণ কাজ। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে প্রশাসনিক অভিযান আসবে না, এমন ভাবনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা হতে রাত-দিন বিরামহীন চলছে নির্মাণ। এতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কোক) ও জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবশেবাদীরা। অভিযোগ উঠেছে নির্মিতব্য ভবন মালিকদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে জেলা প্রশাসন ও কোক। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তারা।

সূত্র মতে, পরিবেশগত বিবেচনায় কক্সবাজার থেকে টেকনাফ সমুদ্র সৈকতের ১০ হাজার ৪৬৫ হেক্টর এলাকার প্রাণবৈচিত্র্য, নির্মল জলরাশি এবং পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সরকার সৈকতের আশপাশকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) হিসেবে ঘোষণা করে ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল গেজেটও প্রকাশ করে সরকার। 

এ নির্দেশনা মতে, ১২০ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত, সৈকতের ঝাউ গাছসমৃদ্ধ ৩০০ মিটারে যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ ও ৫০০ মিটার সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়। এর সাথে যুক্ত হয় কউকের মাস্টারপ্ল্যান। এ প্ল্যান বাস্তবায়নে কোক সৈকতের ৩০০ মিটারে কোন স্থাপনা নির্মাণ থেকে বিরত থাকতে প্রচারণা চালানো হয়। বাতিল বলে ঘোষণা হয় পূর্বে নেয়া স্থাপনা নির্মাণ অনুমতিও।  

ইসিএ ঘোষণার পর ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর কলাতলীতে খাস জমিকে প্লট করে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে লিজ দেয় তৎকালীন সরকার। চুক্তি মতে কাজ শুরু না করায় সরকার ২০১০ সালে ৫৯টি প্লট বাতির করে। যা আপিল বিভাগ ২০১৮ সালে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি করেন। 

২০১৭ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা এক রিটের বিপরীতে ‘ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান ফর কক্সবাজার টাউন এন্ড সি আপ টু টেকনাফ’ মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী জোয়ার ভাটার মধ্যবর্তী লাইন থেকে পৌরসভার প্রথম ৩০০ মিটার ‘নো ডেভেলপমেন্ট জোন’ উল্লেখ করে এ এলাকায় কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না বলে নির্দেশনা দেয় উচ্চ আদালত।  

উচ্চ আদালতের নিষেধ থাকার পরও গেল মাস দেড়েক ধারে কলাতলীর তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের পশ্চিমে জনৈক এমদাদ হোসেনের বরাদ্দ খালি জমিতে কোন ধরনের সাইনবোর্ড না থাকা এ প্লটে দিন-রাত সমান তালে নির্মাণকাজ চলছিল। বেলাভূমির দেড়-দু'শ ফুট দূরত্বে চারপাশে দেয়াল তোলে ডজনাধিক শ্রমিক ব্যাজমেন্ট পাকা করণের পর প্রথম তলা তৈরি করতে চলছিল পিলার ও ছাদের লোহা বাঁধার কাজ। এখানে বাঁধাহীন স্থাপনার কাজ হচ্ছে দেখে আশপাশের একাধিক প্লটে মাটি ভরাটের কাজ চলে। এতে ইসিএ রক্ষায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মুখথুবড়ে পড়ার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মাসুদ রানা গত ৩ জুন অভিযান চালান। ইসিএ রক্ষায় ভবনের কাজ বন্ধ করে দিয়ে ঢালাইয়ের জন্য তৈরি মাচা খুলে দেয় মাসুদ রানার নেতৃত্বে অভিযান চালানো টিম। তিন দিনের মধ্যে বাকি সরঞ্জাম সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দেন তারা।

এদিকে, অভিযানে এমদাদ হোসেনের নির্মাণাধীন ভবনসহ একাধিক প্লটের চলমান কাজ বন্ধ রাখে নির্মানকারিরা। তবে, নিজ উদ্যোগে মালামাল সরানোর নির্দেশনা মানার পরিবর্তে তিনদিনের মাথায় অদৃশ্য কারণে, বৃহস্পতিবার সকাল হতে অনবরত নির্মাণ কাজ চলছে। অভিযানে সরানো ছাদ ঢালাইয়ের বাঁধাই সমানতালে গাঁথা হচ্ছে। কাজ চলেছে রাত-দিন এমন কি বৃষ্টিতেও। শ্রমিকদের মতে, রবিবার অফিস খোলার আগে প্রথম তলার ঢালাই সম্পন্ন করতেই প্লটের মালিক অবস্থান করে কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন।

তথ্য মতে, এমদাদ হোসেন যে প্লটে কাজ করছেন সেখানে ভবন করার অনুমোদনের আবেদন ২০১৫ সালে ডিসি ও ২০১৬ সালে গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলীর স্বাক্ষরে অনুমোদিত প্ল্যান। কিন্তু ইসিএ নিয়ে মহাপরিকল্পনা ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পর ২০১৭ সালের আগের সকল অনুমোদন শর্তসাপেক্ষে বাতিল বলে ঘোষণা দেয় কোক কর্তৃপক্ষ। তবে, কউকের কোন না কোন অফিসার বা জেলা প্রশাসনের সাথে 'সমঝোতা'য় বন্ধ করা কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে প্রচার রয়েছে।

কউকের যাত্রাকালীন সাবেক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল ফোরকান আহমেদ বলেন, কোক স্বতন্ত্র যাত্রার আগে কক্সবাজার পৌরসভা থেকে নেয়া অনুমতিতে ভবন নির্মাণ হয়েছে। পৌর অনুমতি পেলেও ২০১৬ সালে কউক স্বতন্ত্র কার্যক্রম শুরুর আগপর্যন্ত যে-সব প্লটে নির্মাণ কাজ নির্ধারিত পরিমাণ হয়নি, তদন্ত সাপেক্ষে সেসব প্লটের প্ল্যান বাতিল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। নতুন স্থাপনা করতে গেলে কউক এবং সংশ্লিষ্ট আরো একাধিক প্রতিষ্ঠান হতে অনুমতি বাধ্যতামূলক। তবে, ঘোষিত ইসিএতে কোন মতেই অনুমতি দেয়ার সুযোগ কউক বা অন্য প্রতিষ্ঠানের নেই।

দ্রুত কাজ চলমান প্লটের মালিক এলিগেন্স ডেভেলপমেন্ট প্রপার্টিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এমদাদ উল্লাহ বলেন, সংশ্লিষ্টদের অনুমতি সাপেক্ষে কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। আমার জায়গা আদালতের নিষেধাজ্ঞায় পড়েনি। কাজ এগিয়ে নিতে গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা চান তিনি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাবেক সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরি বলেন, টাকায় বাঘের চোখ পাওয়া যায়। আর কক্সবাজারে কেনা যায় প্রশাসনকে। যার কারণে উচ্চ আদালতের আদেশও এখানে বাস্তবায়ন করা হয়না। বিষয়টি দু:দুঃখজনক।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বেআইনি ভাবে কাউকে সহযোগিতা দিচ্ছে না প্রশাসন।

কলাতলী জোন, কলতলী গ্রাম ও দরিয়ানগর অংশের ইসিএতে চলমান স্থাপনা নির্মাণ কার্যক্রম সম্পর্কে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ কার হয়েছে কি না বিষয়টি জানতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) চেয়ারম্যান কমডোর (অব.) মোহাম্মদ নুরুল আবছারকে কল দিয়ে না পেয়ে ম্যাসেজ দিলেও তিনি উত্তর করেননি।

তবে, কউক সচিব মো. আবুল হাসেম বলেন, চেয়ারম্যান স্যারের নির্দেশনায় আমরা জেলা প্রশাসনকে সাথে নিয়ে গত সপ্তাহে নির্মাণাধীন স্থাপনায় অভিযান চালিয়ে তা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আবারো কাজ চলে থাকলে প্রসিডিউর মতে নোটিশ পাঠানো হবে। পরে আবারো উচ্ছেদ অভিযান চালাবো।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, ইসিএ-তে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি আবারও উচ্চ আদালতের নজরে আনা হবে। দেয়া হবে দায়িত্বে অবহেলাকারীদের নোটিশও। 

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com